
নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুলকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিপক্ষ বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে বিবস্ত্র করে মারধর করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়। রোববার দুপুর পৌনে ১টার দিকে হারিপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের গেইটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা গেছে, আতাউর রহমান মুকুলকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করছেন কয়েকজন ব্যক্তি। তার পাঞ্জাবি প্যান্ট খুলে প্রায় বিবস্ত্র করা হয়েছে। এ সময় তার পরনে অন্তর্বাস ছাড়া আর কিছু ছিলো না। তার পরনের ছেঁড়া পাঞ্জাবির অংশ ধরে এক ব্যক্তি তাকে টেনে হিঁচড়ে কোথাও নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। এসময় অন্য আরেকজন তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। পরে পুলিশ মুকুলকে একটি অটোরিকশায় করে নিয়ে যায়।
পুলিশ জানিয়েছে, বিএনপির ওই নেতাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে মারধর করে তার পরনের পাঞ্জাবি ও পায়জামা ছিঁড়ে ফেলা হয়।
আতাউর রহমান মুকুলের সঙ্গে থাকা বিএনপি কর্মী মোস্তাক আহমেদ জানান, মুকুল হরিপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুরনো বিদ্যুত টাওয়ার পাল্টে নতুন টাওয়ার বসানোর কাজের শ্রমিক ঠিকাদারি পেয়েছেন। এ কাজের ব্যাপারে তিনি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গেলে কাঁচপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বজলুর রহমানের নেতৃত্বে লোকজন এসে মুকুলকে মারধর করে জামা-কাপড় ছিঁড়ে প্রায় নগ্ন করে ফেলে। পরে পুলিশের সহযোগিতায় তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে ঢাকার উত্তরার একটি ক্লিনিকে ভর্তি করানো হয়। বজলু ওরফে ডন বজলু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের টেন্ডার নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হয়ে এই কাজ করেছে।
আতাউর রহমান মুকুল অভিযোগ করে বলেন, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি বজলুর রহমান ওরফে ডন বজলুর নেতৃত্বে কয়েকজন লোক অতর্কিত হামলা করে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
অন্যদিকে দেওয়ান এন্টারপ্রাইজের সত্ত্বাধিকারী ঠিকাদার হাজী আলাউদ্দিন জানান, বিএনপি নেতা বজলু ও তার বাহিনীর সদস্যরা কাজ পাওয়ার পর ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। চাঁদা না দেওয়ার কারণেই এই হামলা করা হয়েছে। চাঁদা দাবির বিষয়ে আমরা আগেই থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
বন্দর থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান মুকুলকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে কয়েকজন লোক বিবস্ত্র করে মারধর করেছে।
এ বিষয়ে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আল মেহেদী বলেন, ঘটনার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিচ্ছি। কারো বিরুদ্ধে কোনো মামলা আছে কি না সে বিষয়টিও খোঁজ নিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।