
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে তিন শতাধিক উন্নতমানের ডাস্টবিন পড়ে আছে। ডাস্টবিনগুলো মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে উপহার দিয়েছে। কিছু ডাস্টবিন ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্টেশনে পাঠানো হলেও বাকিগুলো কোথাও পাঠানো হচ্ছে না।
আজ রোববার সকালে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, স্টেশনের ১,২, ৩ ও ৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ডাস্টবিনগুলো পড়ে আছে। প্রতিটি ডাস্টবিনে আছে দুটি করে চাকা। ডাস্টবিনের তিন পাশে বাংলাদেশ সরকার ও রেলওয়ের লোগো আছে। আর লেখা আছে, ‘সৌজন্যে, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ।’
রেলের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানিয়েছেন, ঈদের আগে ও পরে ঢাকা থেকে ডাস্টবিনগুলো ট্রেনে করে পাঠানো হয়। এগুলো উপহার পাওয়া ডাস্টবিন হলেও স্থানীয় কিছু ব্যক্তি ধারণা করছেন, এসব আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কার্যাদেশ দিয়ে কেনা ডাস্টবিন। আওয়ামী লীগের ঠিকাদার গোপনে সরবরাহ দিতে ডাস্টবিনের গায়ে ‘সৌজন্য’ লিখে দিয়েছেন বলেও তাঁরা ধারণা করছেন। এ জন্য ডাস্টবিন বিতরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক শহীদুল আলম বলেন, ‘আমার কাছে একদল লোক এসে নিজেদের ১৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের নেতা-কর্মী পরিচয় দিয়ে বলেছেন, “এগুলো আওয়ামী লীগের ঠিকাদার সরবরাহ করেছে। কৌশলে তাতে সৌজন্য লেখা হয়েছে। এসব ডাস্টবিন যেন এভাবেই পড়ে থাকে। ” তাই কোথাও পাঠাইনি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
শহীদুল আলম জানান, এসব ডাস্টবিন রাজশাহী থেকে এই অঞ্চলের বিভিন্ন স্টেশনে পাঠানোর কথা। ঈদের আগে কিছু ডাস্টবিন পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। পরে আর পাঠানো হয়নি।
শহীদুল আলম আরও জানান, যাঁরা তাঁর দপ্তরে এসেছিলেন তাঁদের একজন নিজেকে রেলওয়ে স্টেশন-সংলগ্ন ১৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি পরিচয় দিয়েছেন। তবে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের এখন কোনো কমিটি নেই। তাই কে তাঁর কাছে গিয়েছিলেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জানতে চাইলে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিএনপি নেতা মো. ভুটান বলেন, ‘আমরাও দেখছি, কিছুদিন ধরে ডাস্টবিনগুলো স্টেশনে পড়ে আছে। কেন পড়ে আছে, কারা বিতরণে বাঁধা দিয়েছে তা জানি না।’
এ বিষয়ে রেলওয়ের ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মহব্বতজান চৌধুরী বলেন, ‘মেঘনা গ্রুপ রেলওয়েকে বেশ কিছু ডাস্টবিন উপহার দিয়েছে। সারা দেশের বিভিন্ন স্টেশনে ডাস্টবিনগুলো পাঠানো হয়েছে। রাজশাহীর আশপাশের স্টেশনগুলোতে দেওয়ার জন্য রাজশাহী স্টেশনেও কিছু ডাস্টবিন পাঠানো হয়েছে। এগুলো বিতরণে কেউ বাঁধা দিয়েছে কিনা তা জানি না।’