
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) এক নারী শিক্ষার্থীকে অচেতন করে ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করছেন শিক্ষার্থীরা। শুক্রবার (২০ জুন) বিকাল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেন তারা।
মানববন্ধনে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীকে স্থায়ী বহিষ্কার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শান্ত তারা আদনান (২৩) ও স্বাগত দাশ পার্থ (২২)।
পুলিশ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গত ২ মে সুরমা আবাসিক এলাকায় একটি মেসে ডেকে নিয়ে ঐ নারী শিক্ষার্থীকে অচেতন করে ধর্ষণ করেন তারা। পরে তারা ভুক্তভোগীর অজান্তে ভিডিও ধারণ করে এবং তা প্রকাশের হুমকি দিয়ে বিষয়টি গোপন রাখতে বাধ্য করেন বলে জানা যায় । এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ৯ (৩) ধরা ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ এর ৮(১)/ ৮(২) ও ৮(৩) ধারায় মামলা করেন ভোক্তভোগী শিক্ষার্থী।
এর আগে গতকাল বিকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর ধর্ষণের লিখিত অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সহযোগিতায় দুজনকে আটক করেছেন পুলিশ। অভিযোগের পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় ডিজিটাল ট্রাকিং পদ্ধতিতে শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাশ পার্থকে আটক করে পুলিশ। তাদের একজনকে ক্যাম্পাস থেকে এবং আরেকজনকে সুরমা আবাসিক এলাকা থেকে আটক করা হয়। আটকদের মধ্যে আদনান ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হামলার ঘটনায় দায়ের করা একটি মামলার আসামিও তিনি। আটকের পর প্রক্টর অফিসে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ।
মানববন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জেমিমা জামান সেলিয়া বলেন, ' ভাবতেও আমাদের অনেক লজ্জা লাগছে যে যাদের সাথে আমরা এতোদিন একসাথে বসে ক্লাস করেছি তারা এতোটা অমানুষ ছিলো ভাবতে পারিনি। আমরা এই ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।'
তিনি আরও বলেন, 'তারা যদি আমাদের সাথে কোনোদিন ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আমরা অংশগ্রহণ করবো না।'
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন বলেন, 'আমরা চাই অভিযুক্ত দুইজনকে যেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।'
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেছুর রহমান বলেন, 'বৃহস্পতিবার রাতেই ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থী বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সব ধরণের সহযোগিতা ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'