Image description

জুলাই বিপ্লবের পর দেশে শুধু বিএনপির অন্তর্কোন্দলে ১২৭টি হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম।

তিনি বলেন, আপনারা মনে করছেন অমুক দল ক্ষমতায় আসবে, সেই আশায় গুড়েবালি। এবারের নির্বাচনে মূল প্রভাব থাকবে নতুন ভোটারদের, কিন্তু তাদের প্রায় ৩৮ শতাংশই ধানের শীষ চিনে না, বরং তাদের সহিংস আচরণ ও নৈরাজ্য দেখে বিরক্ত-বিক্ষুব্ধ।

শুক্রবার বিকালে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার, সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি এবং দেশ ও ইসলামবিরোধী সব ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের প্রতিবাদে ইসলামী আন্দোলন মহানগর শাখার গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

ফয়জুল করীম বলেন, আপনারা চাঁদাবাজি-খুন ও অবৈধভাবে মানুষের জমি ও স্থাপনা দখল করবেন। জনগণের ওপর অত্যাচার চালাবেন, অবিচার করবেন আর মুখে বলবেন জিয়ার আদর্শের সৈনিক। এসব আর সাধারণ মানুষ শুনতে চায় না। তারা চায় ইসলাম ও ন্যায়ভিত্তিক কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হোক।

ইসলামী আন্দোলনের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বিএনপির কাছে চাঁদা চায়, টাকা না পেয়ে জ্যেষ্ঠ নেতার হাত-পা ভেঙে দিচ্ছে, কব্জি কেটে নিচ্ছে। যাদের কাছে নিজ দলের লোকজন নিরাপদ নয়, তাদের কাছে দেশের সাধারণ নাগরিক কীভাবে নিরাপদ থাকতে পারে? যে দলের কর্মীদের নেতাকে চাঁদা দিতে হয়, সেই দলের কাছে দেশের ব্যবসায়ীরা নিরাপদ থাকতে পারে না। তাদের খুনখারাবির কারণে জনগণের জান ও মাল নিরাপদ নয়।

তিনি বলেন, যারা নিজেরাই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার হুমকি দেয়, নিজেই আইন হাতে তুলে নেয়, তাদের হাতে দেশের আইন নিরাপদ থাকতে পারে না। যারা মেয়র হওয়ার আগেই নগর ভবন দখল করে তাদের হাতে মানুষের জান, মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা থাকতে পারে না। যারা রায় পক্ষে নেওয়ার জন্য বিচারকে পর্যন্ত হুমকি দেয়, তাদের হাতে আইন-আদালত সুরক্ষিত থাকবে কীভাবে? এদের আর জনগণ কোনো অবস্থাতেই গ্রহণ করবে না।

বক্তারা আরো বলেন, জুলাই-আগস্টের খুনিদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো নির্বাচন চাই না। আর যদি নির্বাচন হতেই হয়, তাহলে পিআর পদ্ধতি তথা সংখ্যানুপাতি ভোট হতে হবে। তাহলে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হবে।

অনুষ্ঠানে রংপুরের ছয়টি আসনের মধ্যে পাঁচটিতে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন ফয়জুল করীম। তাদের মধ্যে আছেন রংপুর-১ আসনের এটিএম গোলাম মোস্তফা বাবু, রংপুর-২ আসনের মাওলানা আশরাফ আলী, রংপুর-৩ আসনের আমিরুজ্জামান পিয়াল, রংপুর-৪ আসনে জাহিদ হোসেন, রংপুর-৫ আসনে গোলজার হোসেন।

ইসলামী আন্দোলনের রংপুর মহানগর সভাপতি মাওলানা আবদুর রহমান কাসেমীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আমিরুজ্জামান পিয়ালের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) অ্যাডভোকেট এম হাসিবুল ইসলাম, রংপুর জেলা সেক্রেটারি মাহমুদুর রহমান, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন রংপুর মহানগর সভাপতি মাওলানা নুর মোহাম্মদ জিহাদী, জেলার সভাপতি একরামুল হক প্রমুখ।