Image description

বান্দরবানে অন্তঃসত্ত্বা শিক্ষিকাকে মাশরুফাকে হেনস্তা, অপমান ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাংবাদিক সমিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে প্রটেস্ট অ্যাগেইনস্ট হিজাবোফোবিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও উদ্বেগজনক একটি বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য হলো একটি খুবই নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য ঘটনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো, যা আমাদের বোন, মাশরুফা সাঈদীর সাথে ঘটেছে। যিনি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বেসিক ট্রেনিং ফর প্রাইমারি টিচার্সের (বিটিপিটি) প্রশিক্ষণার্থী ছিলেন। 

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বান্দরবানের প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (পিটিআই) কেন্দ্রে চূড়ান্ত মৌখিক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে, মাশরুফা সাঈদীকে তার পোশাক এবং হিজাব পরিধানের কারণে অকথ্য মানসিক অত্যাচার এবং হেনস্তার শিকার হতে হয়েছে। এটি শুধু একটি সাধারণ দুর্ব্যবহার নয়, বরং এটি তার ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রতি তীব্র আঘাত এবং নারীর প্রতি সামাজিক অবজ্ঞার শামিল। 

এই ঘটনার সময় বান্দরবানের ডিপিও মোফাজ্জল হোসেন খান ও ইন্সট্রাক্টর জেনারেল মশিউর রহমান মন্ডল মাশরুফাকে প্রকাশ্যে অপমান করে এবং তাকে তার পোশাক নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করেন। 

তাদের কাছ থেকে পাওয়া কিছু অবমাননাকর প্রশ্ন ছিল এমন- আপনার মুখ বন্ধ কেনো? আপনি এরকম হলে প্রাইমারিতে কেনো আসছেন? এখনো আপডেট হতে পারেন না কেনো? আপনি এরকম হলে চাকরি ছেড়ে চলে যান? আপনার মুখে বন্ধ রাখলে কোনো পাপ মোচন হবে? আপনার মুখ বন্ধ কেনো থাকবে? আপনি জানেন, আমি এই পর্দা করার কারণে একজনকে সাসপেন্ড করেছি? 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, আমরা বলতে চাই এ ধরনের প্রশ্ন শুধু মাশরুফার ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও ধর্মীয় অধিকারকেই ক্ষুণ্ন করেনি বরং এটি নারী হিসেবে তার যে এজেন্সি, সেটির কালেক্টিব অবমাননা করা হয়েছে বলে মনে করি আমরা। মাশরুফা সাঈদী কেবল তার ধর্মীয় বিধান পালন করেছেন, যেটি তার মৌলিক অধিকার। বাংলাদেশের আইনেও এ ইস্যুতে তাকে বিন্দুমাত্র প্রশ্নবিদ্ধ করার কোনো সুযোগ নেই।

আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এই ধরনের আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটি কেবল মাশরুফা সাঈদী বা তার মত অন্যান্য নারী শিক্ষিকার প্রতি অবিচার নয়, বরং এটি পুরো সমাজের জন্য একটি হুমকি, যেখানে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মানুষের অধিকারকে কাঠামোগত বিদ্বেষের শিকারে পরিণত করা হচ্ছে।