Image description

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় ২৮৯ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার, সনদ বাতিল ও ফলাফল স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। যদিও গত ১৭ মার্চ সিন্ডিকেট সভার পর উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান এ তথ্য জানান, তবে মাস পেরিয়ে গেলেও সেই তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়নি, বরং ২৭ এপ্রিল জারি হওয়া অফিস আদেশে দেখা যায় মাত্র ২৫৯ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে—তাহলে বাকি ৩০ জন গেলেন কোথায়?

তথ্য অনুযায়ী, অফিস আদেশে অসামঞ্জস্যতা এবং তালিকা গোপন রাখায় ব্যাপক প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। এ পরিস্থিতিতে ২৭ এপ্রিল নতুন করে আন্দোলনে নামে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীরা। শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেদিনই ৮ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তবে তদন্ত কমিটির একাধিক সূত্র জানায়, প্রাথমিক বহিষ্কার তালিকায় এমন অনেক নাম ছিল যাদের বিভাগ অনুযায়ী পরিচয় মেলেনি। ফলে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্তের পরও তালিকা আবার তদন্ত কমিটির কাছে পাঠানো হয়। তদন্ত কমিটি তখন পরিচয় নিশ্চিত করে নতুন তালিকা প্রস্তুত করে দেয়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এ বি এম আজিজুর রহমান বলেন, ‘তালিকায় একাধিকবার নাম আসায় প্রকৃত সংখ্যা কমেছে। যদিও আবার তদন্ত কমিটির কাছে নাম যাচাইয়ের জন্য পাঠানো নিয়মবহির্ভূত, তবে তাড়াহুড়োর কারণে তা করা হয়েছিল।’

তবে ছাত্রদের একাংশ এই ঘটনাকে ‘প্রভাবশালীদের সুপারিশের ফল’ বলে মনে করছেন। তারা দাবি করছেন, নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠনের নেতারা প্রভাবশালী শিক্ষক ও ছাত্রনেতাদের মাধ্যমে নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন এবং সফলও হয়েছেন।

 

তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব রায়হান শরীফ বলেন, ‘শিক্ষার্থীরাই আমাদের প্রধান তথ্য-সহযোগী ছিল। অনেকসময় তারা সম্পূর্ণ পরিচয় দিতে পারেনি। অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন ছিল বলেই সময় নিয়েছি। আমাদের উদ্দেশ্য ছিল নির্ভুলভাবে তালিকা তৈরি করা।’

তবে বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতা এবং তালিকা গোপন রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জ্বল। তিনি বলেন, ‘বহিষ্কৃতদের নাম প্রকাশ না করায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সদিচ্ছা নিয়ে আমাদের প্রশ্ন জাগে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা পর্যন্ত করতে পারেনি প্রশাসন। অবিলম্বে বহিষ্কৃতদের নাম প্রকাশ করতে হবে।’

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি।