Image description

কুমিল্লার মুরাদনগরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা নিজেদের নিরাপত্তার পাশাপাশি যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার পদত্যাগ দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মুরাদনগর থেকে আসা শতাধিক সনাতন ধর্মালম্বী অংশগ্রহণ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুরাদনগর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সহসভাপতি দীন দয়াল পাল। এসময় উপস্থিত ছিলেন- মুরাদনগর উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটি সভাপতি দুলাল দেবনাথ ও নিবাস ঘোষ।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, মুরাদনগর উপজেলায় যানজট নিরসনে সাবেক পাঁচবারের এমপি মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেন। তবে পুলিশকে ব্যবহার করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা, চাচাতো ভাই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের দিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের মারধর করে পুলিশে দেয়।

এর প্রতিবাদে থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল হয় এবং সেদিন সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে রাতভর শালিসও চলে। সেখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বী নেতাও উপস্থিত ছিলেন।

অথচ রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের শালিসে বসে বিষয়টি সমাধান করতে আসা বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দেয় এবং পবিত্র ঈদ ও রমজানজুড়ে পুরো মুরাদনগরে পুলিশ ও ডিবি আতঙ্ক বিরাজ করে। এখনো কুমিল্লার এসপি ও ডিবির হয়রানির শিকার মুরাদনগরের মানুষ। রাত হলেই পুলিশের গাড়ির হর্ণে আতঙ্কিত হয়ে ওঠে মুরাদনগরের মানুষ। পুলিশের এমন তৎপরতায় মনে হয়, এ যেন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের দুঃশাসনের প্রতিচ্ছবি।

লিখিত সংবাদ সম্মেলনে দীন দয়াল পাল আরও বলেন, ‘মুরাদনগরের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে কাউকে চাঁদা দেওয়া তো দূরের কথা হীনমন্যতায়ও ভুগতে হয়নি। অথচ কয়েকদিন আগে অন্তর্বতী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়ার বাবার নেতৃত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টার বাবার হয়ে সাংবাদিকদের তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে হট্টগোল করা রাজিব ফেসবুকে অপপ্রচার করে, আমাদের সনাতন ধর্মালম্বী রামচন্দ্রপুরের প্রবীণ ব্যবসায়ী নিতাই চন্দ্র সাহার থেকে নাকি বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন মোল্লা চাঁদা নিয়েছেন। বিষয়টি সম্পূর্ণ অপপ্রচার এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে বিএনপির সম্প্রীতি নষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।’

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, শুধুমাত্র জনপ্রিয়তার অপরাধে পাঁচবারের এমপি কায়কোবাদকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন ও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ষড়যন্ত্রমুলক মামলা দিয়ে দেশান্তর করে। এমনকি তাকে ব্রিক ফিল্ডে (ইট ভাটায়) পুড়িয়ে হত্যা করার জন্য তার গাড়িতে গুলি করে।’

‘শুধু তাই নয়, এখনো মুরাদনগরের এ জনপ্রিয় নেতাকে নিয়ে নানা ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা। নব্য ফ্যাসিবাদ ইতোমধ্যে কুমিল্লার এসপি ডিবিসহ মুরাদনগরের দুই ওসিকে দিয়ে কায়কোবাদ দাদার বিশ্বস্ত নেতাকর্মীদের পাশাপাশি মুরাদনগরের কায়কোবাদপ্রেমী আমজনতাকে হয়রানি করছে।’

সংবাদ সম্মেলন শেষে নিজেদের নিরাপত্তা ও উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের পদত্যাগ দাবি করে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মুরাদনগরের সনাতন ধর্মালম্বী জনতা।