Image description

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মাদকের বিচরণ বারবার সংবাদ শিরোনাম হলেও দৌরাত্ম্য থামানো যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ আগে থেকেই মাদকসেবনে যুক্ত, আবার কেউ কেউ ভর্তি পরবর্তী সময়ে মাদকের সংস্পর্শে আসে।

প্রশাসনের সুস্পষ্ট নীতিমালা ও কঠোর আইনি পদক্ষেপের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রমেই বাড়ছে মাদকের বিস্তার। এই প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসকে মাদকমুক্ত রাখতে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ‘ডোপ টেস্ট’ বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছেন সচেতন শিক্ষার্থীরা।

তারা বলেন, ডোপ টেস্ট চালু হলে মাদকসেবী শিক্ষার্থীদের সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে, যা ক্যাম্পাসে একটি সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে দেশের একাধিক সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সময় ডোপ টেস্ট সনদ জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হলেও ইবিতে এখনো এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা বা নির্দেশনা জারি হয়নি।

জানা যায়, শিক্ষার্থীদের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরেই মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ক্যাম্পাসে মাদকের চালান ও বিতরণে সক্রিয় শক্তিশালী সিন্ডিকেট দমনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ আরও জোরালো করতে হবে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে ২০১৯ সালের ১ ডিসেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি ও চূড়ান্ত পরীক্ষার আগে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করে।

বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ডোপ টেস্টের সনদ ছাড়া ভর্তির সুযোগ নেই। অথচ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ না থাকায় শিক্ষার্থীদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় মাদকের ছোবলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

সচেতন শিক্ষার্থীদের দাবি, যদি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি সুস্পষ্ট ডোপ টেস্ট নীতিমালা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করে, তাহলে শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা ও মাদকমুক্ত প্রজন্ম গঠনে এটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে।

ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আতিফ মো. রাহিব বলেন, ‘আমরা দেখে আসছি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট করা হচ্ছে, যা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের ক্যাম্পাসে মাদক নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখছে। সুতরাং ইবিতেও ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করলে মাদক নিয়ন্ত্রণের কাজ অত্যন্ত সহজতর হবে।’

উপ–উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এয়াকুব আলী বলেন, ‘মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়া বা ডোপ টেস্টের ব্যাপারে সরকার থেকে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে কিনা আমার জানা নেই। ইউজিসি যদি ডোপ টেস্ট নিয়ে এ ধরনের কোনো নীতিমালা করে থাকে, আমি মনে করি এটি শিক্ষা কার্যক্রমের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ নীতি। এটি পালন করতে কালক্ষেপণ করা উচিত নয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে উপাচার্যদের সঙ্গে কথা বলব। মাদকের ব্যাপারে তাকে জিরো টলারেন্সের পরামর্শ দেব। ক্যাম্পাসে মাদকসেবন, ব্যবসা বা লেনদেন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। যারা মাদক সেবন করে, তাদেরকে ধরে প্রচলিত আইনে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।’