Image description
জকসু নির্বাচন

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের ডোপটেস্ট করে প্রার্থীতা যাচাই করবে নির্বাচন কমিশন। এতে মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে প্রার্থীতা বাতিল বলে গণ্য হবে।

বৃহস্পতিবার রাতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচনী খসড়া আচারণবিধি বিধিমালায় এসব নির্দেশনা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে দেখা যায়, ডোপটেস্ট ও বাতিল সংক্রান্ত বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, কমিশন প্রত্যেক প্রার্থীর মাদকাসক্তির বিষয়টি পরীক্ষা করবেন এবং মাদকাসক্ত প্রমাণিত হলে উক্ত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল বলে গণ্য হবে। কেউ টেস্টে অনুপস্থিত থাকলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলে গণ্য হবে।
 
এছাড়া এই আচরণবিধিতে বলা হয়েছে- কোন প্রার্থী ফৌজদারি অপরাধে শাস্তিপ্রাপ্ত হলে ভোটাধিকার ও প্রর্থীতা বাতিল হবে। এবং কোন শিক্ষার্থী শৃঙ্খলাপরিপন্থী ও যৌন অপরাধ সংগঠিত অথবা এ জাতীয় অপরাধের শাস্তিপ্রাপ্ত হলে তিনি ভোটাধিকার হারাবেন এবং নির্বাচনের প্রার্থীতা অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে‌।
 
নির্বাচনী এই আচরণবিধিতে আরও বলা হয়েছে, কোন প্রার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজে যুক্ত থাকার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শাস্তিপ্রাপ্ত হলে শাস্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে। তবে উক্ত শিক্ষার্থীর শাস্তি ভোগের মেয়াদ শেষ হলে এবং নিয়মিত শিক্ষার্থীর মর্যাদা ফিরে পেলে তিনি নির্বাচনে ভোটার ও প্রার্থী হওয়ার অধিকার ফিরে পাবেন। এবং কোনো শিক্ষার্থী যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত অপরাধে শাস্তিপ্রাপ্ত হলে তিনি নির্বাচনে অযোগ্য বলে গণ্য হবে।

নির্বাচনী আচরণবিধিতে আরো বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে একজন প্রার্থীকে তার বিভাগ, হল, শিক্ষাবর্ষ, উল্লেখযোগ্য কারিকুলাম ও কো-কারিকুলাম কার্যক্রমের এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণের যৌক্তিকতার বিবরণীর মধ্যে থাকতে হবে। এবং কোনো ক্লাস বা পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে শ্রেণিকক্ষে বা পরীক্ষার হলরুমে কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। নির্বাচনের আচরণ এ বিধিমালায় ক্যাম্পাসে যে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ ও মিছিল নিষিদ্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ব্যতীত ২৫ জনের অধিক একসাথে জমায়েত হওয়া যাবে না। এবং নির্বাচনী প্রচারণায় কোন বহিরাগত ব্যক্তি থাকতে পারবেনা। বৈধ ভোটার ও প্রার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারী ব্যতীত অন্য যে কেউ বহিরাগত হিসেবে বিবেচিত হবেন। কর্মরত কোন সুস্থ কর্মকর্তা এবং কর্মচারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে উইকেন্ড বা প্রফেশনালের শিক্ষার্থীগণ নির্বাচনী প্রচারণায় কোনো রকম অংশগ্রহণ বা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। 

নির্বাচন আচরণবিধির খসড়া এই নীতিমালায় পোস্টার, লিফলেট বা হ্যান্ডবিল সংক্রান্ত লিফলেটে বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণায় কেবলমাত্র হ্যান্ডবিল বা প্রচারপত্রে সীমাবদ্ধ রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এবং কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী তার নির্বাচনী প্রচারপত্রে তার নিজের ছবি ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তির ছবি ব্যবহার করতে পারবে না।

কোনোভাবেই নির্বাচনী প্রচারণায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই ব্যবহার করা যাবে না। নির্বাচনী যানবাহন সংক্রান্ত বিধিনিষেধে বলা হয়েছে, নির্বাচনী প্রচারণার সময় কোনো রকম যানবাহন ব্যবহার করা যাবে না। এবং কোনো প্রার্থী তার প্রচারণায় ধর্মীয় উপাসনালয়ে নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবে না। এবং ভোটার গণকে কোনো রকম পানীয়, খাদ্য পরিবেশন বা কোনোরূপ উপঢৌকন দিতে পারবেন না এবং নির্বাচনী প্রচারণাকালে ব্যক্তিগত চরিত্র হরণমূলক বক্তব্য বিদ্বেষমূলক, উস্কানিমূলক বক্তব্য দিতে পারবে না। এবং নির্বাচনের প্রচারণার সময় বলা হয়েছে নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা আগে শেষ করতে হবে। প্রত্যাহারের সময় বলা হয়েছে কোনো রকম মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে। কোনো প্রার্থী কিংবা তার পক্ষে কোনো ব্যক্তি স্পিকার বা সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করতে পারবে না। তবে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি সাপেক্ষে হ্যান্ডমাইক ব্যবহার করা যাবে।

এর আগে জকসু নির্বাচন পরিচালনায় পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. গিয়াস উদ্দিন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়। এতে সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসানকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে এবং আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. শহিদুল ইসলাম, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. কানিজ ফাতেমা কাকলি, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জুলফিকার মাহমুদ এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আনিসুর রহমান সহকারী নির্বাচন কমিশনার হিসেবে রয়েছেন।