Image description
 

অর্চিতা স্পর্শিয়া। অভিনেত্রী ও মডেল। জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর নতুন সিজনে যুক্ত হয়েছেন তিনি। ডার্ক ও সিরিয়াস চরিত্রের গণ্ডি ভেঙে এবার ফান-কমেডির পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত, চার মাসের আড়াল– সবকিছু নিয়ে কথা বললেন এই অভিনেত্রী। 

জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এ কাজ করছেন। এতে যুক্ত হওয়ার সিদ্ধান্তটা কীভাবে এলো?
গত কয়েক বছর ধরে সিরিয়াস জনরায় বেশি কাজ করা হচ্ছিল। ডার্ক চরিত্রেও আমাকে দেখা গেছে। অনেক দিন ধরেই ইচ্ছে ছিল সেখান থেকে বেরিয়ে একটু ফান-কমেডি বা হালকা কিছু করতে– যাতে আরও বেশি দর্শকের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়। এমন সময় ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ টিম থেকে যখন কল এলো, আমি আর না করতে পারিনি। এটি তো একটা বড় প্রজেক্ট, একটা ব্র্যান্ড। সবার কাছে জনপ্রিয়। মনে হয়েছে, আমি সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছি।

 
 

ধারাবাহিকটির আপনার অভিনীত পর্ব প্রচারে আসার পর দর্শক সাড়া কেমন পাচ্ছেন?
এককথায় অসাধারণ। ধারাবাহিকটি তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় সেটা জানতাম। কিন্তু এতটা জনপ্রিয়, সেটা অভিনয় না করলে অনুভব করতে পারতাম না। আমি স্পর্শ চরিত্রে অভিনয় করেছি, সেটা জানার পর থেকেই অগণিত টেক্সট ও শুভ কামনা পাচ্ছি। আর নাটকে আমার অভিনীত পর্ব প্রচারে আসার পর থেকে তো সেটা বেড়েছে বহুগুণে।

 

 

আপনি তো এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় কখনও করেননি। আপনার অভিনয়ের জনরা তো একটু আলাদা ছিল...
এ জন্যই আমি দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া পাচ্ছি। অনেকেই অবাক হয়েছেন– আমি কীভাবে ফানি টাইপের চরিত্র করছি! তারা আমাকে এইভাবে কল্পনাই করেননি। সবাই বেশ সারপ্রাইজড। যারা ব্যাচেলর পয়েন্টের নিয়মিত দর্শক, তারা আমাকে পেয়ে খুব খুশি। এতে অভিনয় করে আমিও খুশি। উপভোগ করছি বেশ। 

নাটকটিতে যুক্ত হওয়ার আগে প্রায় চার মাস আপনাকে কোথাও দেখা যায়নি, কেন?
হ্যাঁ, পুরোপুরি ইচ্ছাকৃত। মূলত ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’-এর কাজের জন্যই আমি বিরতি নিয়েছিলাম। গত কোরবানির ঈদের পর নিজেকে পর্দায় অফ রেখেছিলাম। আমি চাচ্ছিলাম, কয়েক মাস দর্শক আমাকে না দেখুক, তারপর হঠাৎ করেই ব্যাচেলর পয়েন্টে দেখুক। আমার ক্যারিয়ার গ্রাফ দেখলে বুঝবেন– আমি সব সময় পর্দায় থাকি না। কয়েক মাস পর পর আসি, তবে ভালো কাজ নিয়ে আসার চেষ্টা করি। তার ফলাফল পাচ্ছি। দর্শকরা দারুণভাবে গ্রহণ করছেন।

শোনা গেছে, এই সময় অস্ত্রোপচারও করাতে হয়েছে?
হ্যাঁ, একটা অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিল। সেটার জন্যই পুরোপুরি আড়ালে ছিলাম। এখন আলহামদুলিল্লাহ সুস্থ। সুস্থ হয়েই নতুন করে কাজে ফিরলাম।

 

 

নির্মাতা কাজল আরেফিন অমির সঙ্গে এটি আপনার প্রথম কাজ। অভিজ্ঞতা কেমন?
অমি ভাই খুবই মেধাবী নির্মাতা। আগে তাঁর সঙ্গে কাজ করা হয়নি, কিন্তু সব অভিনয়শিল্পীরই ইচ্ছে থাকে ভালো নির্মাতার সঙ্গে কাজ করার। আমরা চেষ্টা করেছি, এই কোলাবোরেশনটা যেন শক্ত কিছু হয়। শুটিংয়ে গিয়ে পুরোনো দিনের ভাইব পেয়েছি। ক্যারিয়ারের শুরুতে যেভাবে ধারাবাহিক নাটকে কাজ করতাম, সেই অনুভূতিটা আবার ফিরে এসেছে। দিনগুলো সত্যিই খুব মিস করেছি।

‘কাঠবিড়ালি’ ও ‘নবাব এলএলবি’ সিনেমা করে দারুণ প্রশংসিত হয়েছিলেন। এখন সিনেমায় নেই কেন?
বলতে পারেন, ব্যাটে বলে মেলেনি। সিনেমা মানেই কিন্তু বিশাল কিছু। সেই বিশালতায় যদি একসঙ্গে সবকিছু না ঘটে, তাহলে তো শুধু করার জন্য সিনেমা করা ঠিক হবে না। সিনেমার গল্প অনেক পেয়েছি। যেগুলো পেয়েছি সেগুলো করার চেয়ে না করাই উত্তম মনে হয়েছে। তবে সামনে দারুণ কিছু গল্পের সিনেমায় দেখা যেতে পারে। 

 

 

অভিনয় জীবনের শুরু থেকে এখন– এই পথচলা কেমন মনে হয়?
‘প্যারাসুট’ তেলের বিজ্ঞাপন দিয়ে শুরু। ‘বন্ধু তিন দিন’ বিজ্ঞাপনটা বেশ আলোচিত হয়েছিল। তারপর আর পিছু তাকাতে হয়নি। নাটক, সিনেমা– সব জায়গায় কাজ করেছি। দেখতে দেখতে দেড় দশক পার হয়ে গেছে। এই ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকাটাই বড় চ্যালেঞ্জ। যে টিকে থাকতে পারে, সেই জয়ী। আমি যে এখনও টিকে আছি, সেটাই আমার কাছে বড় সাফল্য।

সামনে কী ধরনের কাজ করতে চান?
আমি মানুষের গল্প বলতে চাই। ফিকশনাল চরিত্রের পাশাপাশি বাস্তব চরিত্রে আরও বেশি কাজ করতে চাই। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে হয়তো নতুন নতুন চরিত্র আবিষ্কার করব। সমাজে যে গল্পগুলো আছে, সেগুলো পর্দায় তুলে ধরতেই আমার বেশি আগ্রহ।