Image description
 

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সম্প্রতি তোলপাড় সৃষ্টি করেছেন বিসিবি পরিচালক ও সিসিডিএম চেয়ারম্যান আদনান রহমান দীপন। তার দাবি, গত ছয় মাসে বর্তমান বোর্ডের দুর্নীতি নাজমুল হাসান পাপনের ১৫ বছরের দুর্নীতিকেও ছাড়িয়ে গেছে। তবে এই অভিযোগ সরাসরি নাকচ করে দিয়েছেন বিসিবি পরিচালক ও সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তার মতে, এটি দীপনের একান্তই ব্যক্তিগত মত। বরং বর্তমান বোর্ড গত দেড় দশকের অনিয়ম ও জঞ্জাল সরাতেই এখন বেশি মনোযোগী।

আমিনুল ইসলাম বুলবুল স্পষ্ট করে বলেন, ‘ওনার (দীপন) এই বক্তব্য আমি মেনে নিচ্ছি না। এটা তার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মত। আমরা এ ধরনের কোনো অডিট বা কাজ করছি না। আমরা মূলত বাংলাদেশ ক্রিকেটের গত ১৫ বছরের অডিট করছি। যেখানে মনে হয়েছে কাজ করা উচিত, সেখানেই হাত দেওয়া হয়েছে।’

 
 

বিগত বোর্ডের সময়কার অনিয়মের উদাহরণ টানতে গিয়ে বুলবুল বলেন, ‘আমরা একটা ট্রানজিশন পিরিয়ডের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। গত ১৫ বছর একটা নির্দিষ্ট সিস্টেমে চলেছে, যেখানে পিচের মাটি কেনার ভাউচার থাকলেও বাস্তবে মাটির কোনো হদিস নেই। এসব অডিট এখন চলছে।’

আসন্ন বিপিএল নিয়ে আমিনুল ইসলাম জানান, এটি তার জন্য একেবারে নতুন অভিজ্ঞতা। ১২তম আসরে এসে প্রথমবারের মতো কোনো ভূমিকায় তিনি। তবে চ্যালেঞ্জ থাকলেও এবারের বিপিএল নিয়ে দুটি পরিষ্কার লক্ষ্য রয়েছে বোর্ডের।

 

বুলবুল বলেন, ‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য একটি সুষ্ঠু ও পরিচ্ছন্ন বিপিএল উপহার দেওয়া। দ্বিতীয়ত, বিপিএলের পরেই আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তাই এখান থেকে সরাসরি প্রস্তুতি না হলেও, এই ফরম্যাটের একটা ভালো প্রস্তুতি যেন আমরা নিতে পারি, সেদিকে নজর থাকবে।’ নিরাপত্তার বিষয়ে আইনশৃঙ্খল রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশনার ওপর শ্রদ্ধাশীল থাকার কথাও জানান তিনি।

বিসিবিকে ঢেলে সাজাতে ‘ত্রিপল সেঞ্চুরি প্রোগ্রাম’-এর আওতায় কাজ চলছে বলে জানান এই বিসিবি পরিচালক। তিনি বলেন, ‘এইচআর বিভাগ থেকে আমরা এক্সটার্নাল অডিট রিপোর্ট পেয়েছি। সেই অনুযায়ী বোর্ডের পুরো অর্গানোগ্রাম পরিবর্তন করা হয়েছে, যা আগামী বোর্ড মিটিংয়ে অনুমোদনের জন্য উঠবে। বেশ কিছু বড় পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তিও দেওয়া হয়েছে।’

ক্রীড়াঙ্গনের বহুপ্রতিক্ষিত ‘বিকেন্দ্রীকরণ’ নিয়ে আশার কথা শুনিয়েছেন আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, ২০২৩ সালে মাত্র ১২টি জেলায় লিগ হলেও, ২০২৪-এ তা ২৪টি জেলায় উন্নীত হয়েছে। ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ১২টি জেলায় খেলা শুরু হয়েছে এবং বোর্ডের লক্ষ্য ৬৪টি জেলাতেই লিগ চালু করা।

তিনি বলেন, ‘লিগ না হলে ক্রিকেটের কোনো মানেই হয় না। আমরা জেলাগুলোর জন্য একটা টেমপ্লেট তৈরি করেছি। বোর্ড কোথায় সাহায্য করবে আর জেলাগুলো কোথায় ভূমিকা রাখবে, তা ঠিক করা হয়েছে। আমরা চাই সর্বোচ্চ সংখ্যক জেলায় লিগ হোক।’

এছাড়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে শক্তিশালী ফরম্যাট হলো ৫০ ওভারের এই লিস্ট ‘এ’ টুর্নামেন্ট। আমরা মাঠ, আম্পায়ার ও বল সরবরাহসহ সব ধরনের লজিস্টিক সাপোর্ট দেব। আশা করি ক্লাবগুলো এগিয়ে আসবে এবং নির্দিষ্ট সময়েই লিগ মাঠে গড়াবে।’