
ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানে সরব ভূমিকা পালন করেছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। সামাজিক মাধ্যমে লেখালেখির পাশাপাশি রাজপথেও দেখা যায় তাকে। শেখ হাসিনার পতনের পর বিজয়ের উচ্ছ্বাসে রিকশায় ঢাকায় ঘুরেছিলেন তিনি। এরপর থেকেই আওয়ামী লীগ সমর্থকদের সমর্থকের রোষানলে পড়তে হচ্ছে এই অভিনেত্রীকে।
সম্প্রতি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে শেখ হাসিনার সঙ্গে হাস্যোজ্জ্বল একটি পুরোনো ছবি প্রকাশ করেন বাঁধন। ক্যাপশনে তিনি জানান, একসময় শেখ হাসিনাকে ভালোবাসতেন। তবে সময়ের সঙ্গে উপলব্ধি করেছেন—ক্ষমতা মানুষকে শয়তানেও পরিণত করতে পারে।
ছবিটি নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বাঁধন লিখেন, ‘এই ছবিটা? ওই সময় আমি মজা করে তাকে বলেছিলাম—অনেকে ভাবছে আমরা নাকি আগে থেকে ঠিক করে একই রঙের পোশাক পরেছি। তিনি তখন হেসেছিলেন। সেই হাসিটা তখন আমার কাছে সত্যি মনে হয়েছিল। সেই মুহূর্তে তিনি আমাদেরই একজন বলে মনে হয়েছিল।’
বাঁধন আরও বলেন, ‘তার গল্প আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিল। এক রাতে পুরো পরিবার হারিয়েছিলেন, শরণার্থী হিসেবে জীবন কাটিয়েছেন, তবুও সেই দেশেই ফিরে এসেছেন—যে দেশ তার সবকিছু কেড়ে নিয়েছিল। এমন সাহস খুব কম মানুষই দেখাতে পারে। কিন্তু সময়ের সাথে আমি দেখেছি, ক্ষমতা মানুষকে শয়তানেও পরিণত করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু তার সঙ্গে হাসলাম মানে এই নয় যে, আমি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথে আছি! তাহলে আমার সহকর্মী আওয়ামী লীগ নেতারা এত ভয় পাচ্ছেন কেন? আমি কথা বলি—মানুষের কথা বলি। আমি দেশের মানুষের পাশে আছি। আপনারা কেন আমাকে নিয়েই এত ব্যস্ত? জানি, হয়তো আপনারা আর রাজনীতিতে ফিরতে পারবেন না, কিন্তু অন্তত মানুষ হিসেবে আচরণ তো করতে পারেন। ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটের দায়িত্বে যারা আছেন, তাদের জিজ্ঞেস করুন ২০২৪ সালের নির্বাচনে তারা আমাকে কী প্রস্তাব দিয়েছিল। মানুষের মতো আচরণ করা কঠিন হয়ে গেছে—কারণ অনেকে আর মানুষ নেই। কিন্তু চেষ্টা করলে সম্ভব। একজন প্রকৃত নেতা হোন, মানুষ হোন।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার জবাবে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘আমাকে যেভাবে আক্রমণ করেছেন, দেশের নারীদের সঙ্গেও আপনারা ঠিক এভাবেই আচরণ করেন। যান, চালিয়ে যান এইসব বাজে কথা! আপনারা জিতেছেন—অভিনন্দন। কিন্তু আমাকে আক্রমণ করা ছাড়া আপনাদের আর কোনো কাজ নেই? নাকি ঠিক করেছেন, যে সবচেয়ে খারাপ মানুষ, তাকেই আপনারা ক্ষমতায় এনে সংসদ সদস্য বানাবেন?’