Image description

সুশান্ত সিং রাজপুতের মতো তাঁর জীবনও হুমকির মুখে রয়েছে — এমন দাবি তোলার একদিন পর, বলিউড অভিনেত্রী তনুশ্রী দত্ত জানালেন, তিনি গণমাধ্যমের প্রচণ্ড চাপের মুখে আছেন এবং যে হয়রানির মুখোমুখি হচ্ছেন, তা নিয়ে ধীরে ধীরে কথা বলছেন।

“আমি সাক্ষাৎকারে ভীষণ ব্যস্ত, আর শরীরটাও ভালো যাচ্ছে না। গত কয়েক বছর আমি ধীরে চলা, নিরিবিলি এক সাধনার জীবন কাটিয়েছি। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। সবাই একটু ধৈর্য ধরুন। আমি ধীরে ধীরে সবার সঙ্গে কথা বলব,” — সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন তনুশ্রী।

তিনি আরও যোগ করেন, “সাক্ষাৎকার শেষ করে যখন মন্দিরে পৌঁছালাম, তখন পূজা শেষ হয়ে গিয়েছিল।”

নিউজ১৮-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তনুশ্রী দত্ত বলেন, তাঁর জীবনও আজ হুমকির মুখে, একেবারে সুশান্ত সিং রাজপুতের মতো। তিনি বলেন, “বলিউড মাফিয়া গ্যাং খুবই শক্তিশালী। সুশান্তের মতো আমাকেও শেষ করার চেষ্টা চলছে।”

প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে মুম্বাইয়ের নিজের ফ্ল্যাটে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতকে। তাঁর মৃত্যু ঘিরে তখন দেশজুড়ে তীব্র ক্ষোভ, চাঞ্চল্য ও নানা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব ছড়িয়ে পড়ে। যদিও আজও তাঁর মৃত্যুর পেছনে কোনো অসাধুতা প্রমাণ হয়নি।

মঙ্গলবার রাতে একটি ভিডিও শেয়ার করেন তনুশ্রী, যেখানে তিনি বলেন, “বন্ধুরা, আমি নিজের বাড়িতেই হয়রানির শিকার হচ্ছি। আমি খুব চিন্তিত হয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পুলিশ আসে। তারা বলেছে থানায় গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানাতে। আমি হয় আগামীকাল, না হলে পরশু যাব। শরীর ভালো নেই। গত ৪-৫ বছরে এত হয়রানি সহ্য করেছি যে শারীরিক অবস্থাও ভেঙে পড়েছে।”

এছাড়া এক সাক্ষাৎকারে ২০১৮ সালের মি-টু আন্দোলনের সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। বলেন, “২০১৮ সালের মি-টু আন্দোলনের সময় মুম্বাই পুলিশের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা খুবই তিক্ত ছিল। তারা আমাকে এফআইআর করতে উৎসাহ দিয়েছিল। আমি ৪-৫ ঘণ্টা থানায় বসে থেকে বিস্তারিত বয়ান দিয়েছিলাম। এরপর বহুবার খোঁজ নিয়েছি, কিন্তু কিছুই হয়নি। মহারাষ্ট্রে ধর্ষক ও হয়রানিকারীরা প্রায়শই রাজনীতিকদের সঙ্গে ওঠাবসা করে। তারা রক্ষা পায়। তাই প্রকৃত বিচার পাওয়া এখানে প্রায় অসম্ভব।”

২০০৯ সালে ‘হর্ন ওকে প্লিজ’ ছবির একটি গানে শ্যুটিংয়ের সময় অভিনেতা নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছিলেন তনুশ্রী। ২০১৮ সালে জুম চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই অভিযোগ সামনে আনেন। যদিও নানা পাটেকর সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন।

এর আগে, ২০০৮ সালেই তনুশ্রী এই অভিযোগ নিয়ে সিনে অ্যান্ড টিভি আর্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশনে (CINTAA) অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু তা একটি ফৌজদারি মামলা হওয়ায় সংগঠনটি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

২০১৮ সালের ১৩ অক্টোবর তাঁর আইনজীবী নিতিন সাটপুতে মুম্বাইয়ের ওশিওয়ারা থানায় একটি আবেদন জমা দেন যাতে তিনি দাবি করেন, নানা পাটেকর, কোরিওগ্রাফার গণেশ আচার্য, প্রযোজক সামি সিদ্দিকি ও পরিচালক রাকেশ সারাংয়ের নার্কো টেস্ট, ব্রেইন ম্যাপিং এবং লাই-ডিটেক্টর টেস্ট করানো হোক।

কিন্তু ২০১৯ সালের জুন মাসে ওশিওয়ারা থানার পুলিশ নানা পাটেকরকে নির্দোষ ঘোষণা করে এবং বলে, তনুশ্রীর অভিযোগ “প্রতিহিংসাপরায়ণ ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত” হতে পারে।