Image description

রাগ হচ্ছে মানুষের এক ধরনের স্বাভাবিক মানসিক অনুভূতি। যা সাধারণত কোনো কিছুতে বিরক্তি, ক্ষোভ বা হতাশ হওয়া থেকে সৃষ্টি হয়। রাগ মানুষের ভেতরের তীব্র আবেগ, যা ক্ষেত্র বিশেষ মানসিক ও শারীরিক উভয় দিক থেকেই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। বাহ্যিক বা অভ্যন্তরীণ উভয় দিক থেকেই রাগ হতে পারে মানুষের।

 

রাগ মানুষের সহজাত আবেগ হলেও মাত্রাতিরিক্ত রাগ শারীরিক, মানসিক, পারিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কে ব্যাপকভাবে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। হঠাৎ রাগ হলে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ বা স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাকের মতো মারাত্মক মৃত্রুঝুঁকিও হতে পারে। রাগ শরীরে কেমন প্রভাব ফেলে, তা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের মেডিসিন স্পেশালিস্ট ডা. আফলাতুন আকতার জাহান। তাহলে এ ব্যাপারে জেনে নেয়া যাক।

হার্টে প্রভাব:
হঠাৎ রেগে গেলে কর্টিসেল ও অ্যাড্রেনালিনের মতো স্ট্রেস হরমোন নিঃসরণ হয়। যা রক্তনালিকে দ্রুত সংকুচিত করে। ফলে রক্তপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। এ থেকে দ্রুত রক্তচাপ ও শ্বাস বেড়ে যায়, হার্টের ওপর চাপ পড়ে ও হৃৎস্পন্দন এলোমেলো হয়। হার্টে রক্ত সরবরাহ কমে গিয়ে অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকও হয়। আর অতিরিক্ত রাগ যদি দীর্ঘদিন থাকে, তাহলে স্থায়ীভাবে ধমনি সংকুচিত হতে পারে। এ কারণে উচ্চ রক্তচাপ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দশগুণ বেড়ে যায়।

স্ট্রোকের ঝুঁকি:
রাগ ও মানসিক চাপ রক্তনালিতে প্লাটিলেট একত্র হয়ে জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করতে পারে। যা থেকে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস পায়:
অতিরিক্ত রেগে গেলে নার্ভের ওপর চাপ পড়ে। এটি রক্তনালি প্রদাহে দায়ী কিছু রাসায়নিক পদার্থ যেমন- ইন্টারলিউকিন-৬ নিঃসরণ করে। যা মানবদেহের রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা দুর্বল করে ফেলে। আপনার অজান্তেই রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাস করে আপনার অতিরিক্ত রাগ।

মানসিক স্বাস্থ্য:
রাগ হলে তখন কোনো কিছুতে মনোযোগ দেয়া যায় না। এ জন্য অন্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, তর্কাতর্কি, কখনো কখনো বাকবিতণ্ডা থেকে হাতাহাতির মতো ঘটনাও ঘটে যায়। এতে সম্পর্কের অবনতি হয়। ফলে মানসিক বিষাদ, অনিদ্রা এবং আত্মহত্যার প্রবণতাও বাড়ে।

দুর্ঘটনার সম্ভাবনা:
অতিরিক্ত রেগে গেলে গাড়ি চালানো ঠিক নয়। এ সময় গাড়ি চালালে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। কেননা, চালক মনোযোগ ঠিক রাখতে পারেন না। কখনো কখনো অতিরিক্ত গতিতে গাড়ি চালিয়ে থাকেন। এ থেকে স্বাভাবিকভাবেই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বেশি থাকে।