Image description

পাকিস্তানের জনপ্রিয় মডেল ও অভিনেত্রী হুমাইরা আসগরের মর্মান্তিক মৃত্যু শোবিজ অঙ্গনে গভীর ছায়া ফেলেছে। মঙ্গলবার (৮ জুলাই) করাচির ডিফেন্স এলাকার একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা। 

এর পরই তার জীবনের এক বেদনাদায়ক স্বীকারোক্তির ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়—যেখানে তিনি শোবিজের ভণ্ডামি ও আত্মপ্রবঞ্চনার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন।

লাহোরে জন্মগ্রহণ করা হুমাইরা তার স্বপ্ন পূরণের আশায় করাচিতে চলে আসেন। তবে এ শহরেই থেমে গেল তার জীবন প্রদীপ। মৃত্যুর প্রায় এক মাস পর ৮ জুলাই তার পচাগলা দেহ উদ্ধার করা হয়। 

যদিও মৃত্যুর কারণ এখনো পরিষ্কার নয় এবং পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে তার মৃত্যু সংবাদে সোশ্যাল মিডিয়ায় ও সহকর্মীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। অনেকেই অবিশ্বাস প্রকাশ করে প্রশ্ন তুলেছেন—কীভাবে এতো নিঃসঙ্গতায় মৃত্যু হলো তার, কেউ জানলো না?

২০১৩ সালে মডেল হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করা হুমাইরা কাজ করেছেন আলী জিশান, দীপক পরওয়ানি, সানা সাফিনাজের মতো শীর্ষ ফ্যাশন ডিজাইনারদের সঙ্গে। তিনি জিলেবি ও লাভ ভ্যাকসিন চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন। তবে সর্বাধিক পরিচিতি পান ২০২২ সালের রিয়েলিটি শো তামাশা-তে অংশগ্রহণের মাধ্যমে।

এদিকে মৃত্যুর পর ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে হুমাইরাকে দেখা যায় শোবিজ ইন্ডাস্ট্রির ভণ্ডামি নিয়ে খোলামেলা বক্তব্য দিতে।

 

এক সাক্ষাৎকারে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, এই ইন্ডাস্ট্রির কোন দিকটা সবচেয়ে অপছন্দ? তিনি উত্তর দেন, ‘আমাদের শোবিজে অনেক মানুষ আছেন, যারা ভীষণ ভণ্ডামি করেন।’

তিনি জানান, বিনোদন জগতে কিছু মানুষ অবশ্যই আন্তরিক ও মানসিকভাবে শক্তিশালী। তবে বেশিরভাগই কৃত্রিমতার চাদরে মোড়ানো।

তার ভাষায়, ‘এই ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকে মুখে হাসি ঝুলিয়ে রাখে—যেটা আমি পারি না। আমি চেষ্টা করেছি মানিয়ে নিতে, কখনো মুখোশও পরেছি, কিন্তু এই ভুয়া সৌজন্য আমি শিখতে চাইনি’।

হুমাইরার এসব কথা তার মৃত্যুর পর নতুন তাৎপর্য পেয়েছে। শিল্পীজীবনের অন্তরালে থাকা মানসিক চাপ, সামাজিক নিঃসঙ্গতা এবং সহানুভূতির অভাব নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।

তার সহকর্মী ও ভক্তরা সোশ্যাল মিডিয়ায় শোক ও বিস্ময় প্রকাশ করছেন। অনেকেই শোবিজ অঙ্গনের ভেতরে আত্মসমালোচনার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিশেষ করে সৃজনশীল পেশায় জড়িত নারীরা যে নানান অদৃশ্য চাপ ও নিঃসঙ্গতার শিকার হন, তা নিয়ে নতুন করে খতিয়ে দেখা ও ঢেলে সাজানোর দাবি উঠেছে।

এদিকে করাচি পুলিশ জানিয়েছে, এখনো হুমাইরার মৃত্যুর সঠিক কারণ ও সময় নির্ধারণ করা যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ চলছে।সূত্র: সামা টিভি