Image description

বর্তমানে এক বড় উদ্বেগের নাম- মাথার চুল পড়ে যাওয়া। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে মধ্যবয়সীরা অনেকেই দ্রুত চুল পাতলা হয়ে যাওয়া, অতিরিক্ত ঝরে যাওয়া এবং মাথার মাঝখানে টাক পড়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন। চুল হারানোর শঙ্কা থেকে জন্ম নেয় দুশ্চিন্তা ও আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি।

তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে ভিন্ন তথ্য- টাক পড়া আসলে চুল পড়ে যাওয়ার ফল নয়। এটি চুলের গঠন সূক্ষ্ম ও দুর্বল হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া। চুল এতটাই সরু হয়ে পড়ে যে তা খালি চোখে দেখা যায় না। একই সঙ্গে চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি প্রায় থেমে যায়। ফলে দুর্বল চুল মাথার ত্বক ফুঁড়ে বেরোতে পারে না এবং সেখানেই আটকে থাকে।

৬০ বছর বয়সী গবেষক পল ক্যাম্প চার দশকের বেশি সময় ধরে পুরুষদের টাক সমস্যা নিয়ে গবেষণা করছেন। তার মতে, ৫০ বছরের আগেই প্রায় ৮৫ শতাংশ পুরুষ কোনো না কোনোভাবে টাক সমস্যায় ভোগেন। এতে তাদের মধ্যে মানসিক চাপ ও হীনমন্যতা তৈরি হয়। বর্তমানে কিছু ওষুধ রয়েছে যা চুল পড়া সাময়িকভাবে কমাতে পারে। এছাড়া চুল প্রতিস্থাপন প্রযুক্তির মাধ্যমে মাথার এক অংশ থেকে চুল নিয়ে অন্য অংশে প্রতিস্থাপন করা যায়। তবে চুল গজানোর প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া পুরোপুরি ফিরিয়ে আনার কোনো কার্যকর পদ্ধতি এখনো উদ্ভাবিত হয়নি।

বিজ্ঞানীরা এখন মনে করছেন, টাকের মূল কারণ ত্বকের এক বিশেষ স্তর- ডারমাল পাপিলা কোষের ক্ষতি। এই কোষ থেকেই চুল জন্মায় এবং এখানেই থাকে চুলের গোড়া। ডারমাল পাপিলার কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করে চুলের ঘনত্ব, রঙ এবং মোটা-পাতলা হওয়ার বৈশিষ্ট্য। কিন্তু কিছু পুরুষের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন (DHT) নামের হরমোনের প্রভাবে এই কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

পল ক্যাম্প বলেন, ‘প্রতিটি চুলের গোড়ায় সাধারণত প্রায় এক হাজার ডারমাল পাপিলা কোষ থাকে। এই সংখ্যা যত বেশি, চুল তত বেশি ঘন ও স্বাস্থ্যকর হয়। কিন্তু কোষের সংখ্যা চুলপ্রতি ৫০০-র নিচে নেমে এলে চুল সরু হয়ে যায় এবং আরও কমে গেলে তা খালি চোখে আর দেখা যায় না। এর থেকেও সংখ্যায় কমে গেলে চুল আর খালি চোখে দেখা যায় না। সেই চুল মাথার ত্বক ভেদ করে বেড়িয়ে আসতে পারে না।’

এই সমস্যা সমাধানে পল ক্যাম্পের প্রতিষ্ঠান হেয়ারক্লোন কাজ করে যাচ্ছে। যাদের মাথায় এখনো কিছুটা ঘন চুল আছে, তাদের ত্বক থেকে ফলিকল সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হয়। মাইনাস ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এই কোষগুলো জমিয়ে রাখা হয় এবং পরে তা থেকে হাজার হাজার কোষ ক্লোন করে চুল প্রতিস্থাপন করা যায়। এই কোষ থেকেই গজাতে পারে নতুন, মোটা ও দৃঢ় চুল।

ইঁদুরের ওপর এই পদ্ধতির পরীক্ষা ইতোমধ্যেই সফল হয়েছে। সামান্য পরিসরে কিছু মানুষের ওপরও এর প্রয়োগ হয়েছে এবং আশানুরূপ ফল মিলেছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন। এ বিষয়ে পুরো নিবন্ধটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন।