
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রাঙ্গনে যেসব মুখ উজ্জ্বল হয়েছে, আলোকিত হয়েছে- তাদের উল্কাপাত শুরু হয়েছিল স্কুলে পড়াকালীন। রূপালি পর্দায় দ্যুতি ছড়িয়েছেন স্কুলে পড়ার সময়ই। এ রকম আলোকিত ও গুণী অভিনেত্রীদের নিয়েই এই আয়োজন।
শাবানা
১৯৬৭ সালে 'চকোরি' চলচ্চিত্রে চিত্রনায়ক নাদিমের বিপরীতে তাঁর চলচ্চিত্রে আবির্ভাব ঘটে।
বলা যায়, স্কুলের গণ্ডি পেরোনোর আগেই চলচ্চিত্রে পদার্পণ করেন ১১ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া এই অভিনেত্রী। শাবানা অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ছিল 'ঘরে ঘরে যুদ্ধ'।
ববিতা
১৯৬৯ সালে শেষ পর্যন্ত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন প্রথম নায়িকা চরিত্রে। ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় এবং ওই দিন তাঁর মা মারা যান।
ববিতা পড়াশোনা করেছেন যশোর দাউদ পাবলিক বিদ্যালয়ে। সেখানে অধ্যয়নকালে বড় বোন কোহিনুর আক্তার (সুচন্দা) চলচ্চিত্রে প্রবেশের সূত্রে পরিবারসহ চলে আসেন ঢাকায়। গেণ্ডারিয়ার বাড়িতে শুরু হয় কৈশোরের অবশিষ্টাংশ।
শাবনূর
উইকিপিডিয়া অনুসারে মাত্র ১৩ বছর বয়সে চলচ্চিত্রে পা রাখেন শাবনূর। ১৯৭৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন এই অভিনেত্রী। পারিবারিকভাবে তার নাম রাখা হয় কাজী শারমিন নাহিদ নূপুর। পরে স্বনামধন্য নির্মাতা এবং তাঁর মেনটর এহতেশাম তার নাম রাখেন শাবনূর। শাবনূর শব্দের অর্থ রাতের আলো। শাবনূরের পিতার নাম শাহজাহান চৌধুরী। তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় তিনি।
শাবনূরের প্রথম চলচ্চিত্র 'চাঁদনী রাতে'। তার বিপরীতে নায়ক ছিলেন সাব্বির। এই ছবিটি ব্যর্থ হয়। যা ১৯৯৩ সালে মুক্তি পায়। শাবনূরের পড়াশোনা সম্পর্কে জানা যায়, তিনি আইএ পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। তবে নায়িকা হিসেবে শুরুটা যে স্কুল পেরোনোর আগেই ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
রত্না
২০০২ সালে ক্লাস সেভেনে পড়া অবস্থায় 'কেন ভালোবাসলাম' ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে নাম লেখান রত্না। সেলিম আজম পরিচালিত এ ছবিতে তিনি ফেরদৌসের বিপরীতে অভিনয় করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হন রত্না, কাজ করেন শীর্ষ নায়কদের সঙ্গেও। কিন্তু চলচ্চিত্রে অশ্লীলতার জোয়ার বইতে শুরু করলে নিজেকে গুটিয়ে নেন চলচ্চিত্র থেকে। এ সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকল্যাণ বিষয়ে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। নতুনভাবে চলচ্চিত্রে ফিরে আসার চেষ্টা করছেন রত্না। তার বাবা মান্নান কবির একজন মুক্তিযোদ্ধা।
পূর্ণিমা
পূর্ণিমার চলচ্চিত্র জগতে পথচলা শুরু হয়েছিল জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত 'এ জীবন তোমার আমার' ছবির মাধ্যমে। তখন তিনি মাত্র নবম শ্রেণিতে পড়েন। ড. তুহিন মালিক পরিচালিত 'ওরা আমাকে ভালো হতে দিলো না' চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে ২০১০ সালে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন 'এ জীবন তোমার আমার' দিয়ে। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ১৯৯৭ সালে, তখন তিনি ক্লাস নাইনে পড়তেন।
অমৃতা খান
অমৃতাও বাংলাদেশি অভিনেত্রী এবং মডেল। ২০০২ সালে মডেল ও নৃত্যশিল্পী হিসেবে তিনি মিডিয়াতে প্রথম পা রাখেন। তিনি একটি নাটকেও কাজ করেছেন, যার নাম 'উনিশ বছর পরে'। ২০১৩ সালে বাংলাদেশি চলচ্চিত্রে তার অবির্ভাব ঘটে রয়েল এবং অনিক দুজন নতুন পরিচালকের যৌথ পরিচালনায় 'গেইম' চলচ্চিত্রের মাধ্যমে, চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ২০১৫ সালের ২ জানুয়ারি। এই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সময় তিনি একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে ও লেভেলে পড়ছিলেন।
পূজা চেরি
চলতি বছর পোড়ামন ২ ছবির নায়িকা হিসেবে অভিনয় করতে যাচ্ছেন শিশুশিল্পী পূজা চেরি। ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট গার্লস পাবলিক স্কুলে নবম শ্রেণিতে পড়েন পূজা। স্কুলের গণ্ডি না পেরোতেই দুই ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন পূজা চেরি। গত ৬ এপ্রিল পোড়ামন ২ ছবির নায়িকা হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয় পূজার। তার বিপরীতে অভিনয় করবেন রোশান। পোড়ামন ২ এর কাজ শুরু না হতেই এলো নতুন খবর। এবার কলকাতার আদিত্যর বিপরীতে 'নূরজাহান' নামের একটি ছবিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন। কলকাতার রাজ চক্রবর্তী প্রডাকশনের সঙ্গে যৌথ প্রযোজনায় থাকছে বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়া। আলোচিত মারাঠি ছবি 'সাইরাত'-এর রিমেক 'নূরজাহান'। পরিচালনা করবেন রাজের সহকারী অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়।