বাংলাদেশের পরিস্থিতি যে ভালো নেই, এটা আমরা সবাই জানি। পরিস্থিতি কখনোই ভালো ছিল না। তবে আমরা দীর্ঘকাল চেষ্টা করেছি, সংগ্রাম করেছি এই পরিস্থিতি বদলানোর জন্য, কিন্তু বদলাতে পারিনি। সংগ্রাম চলেছে, আত্মত্যাগ ঘটেছে, কিন্তু ব্যবস্থাটা বদলায়নি এবং সংগ্রাম ও আত্মত্যাগ সত্ত্বেও ব্যবস্থাটা বদলায়নি বলেই এই ব্যবস্থাকে আরও খারাপ মনে হচ্ছে। আর ব্যবস্থা যে ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে সেই বিষয়েও কোনো সন্দেহ নেই।
আজকে আমাদের এই দেশে কোনো কিছুই নিরাপদ নয়। ব্যাংকে টাকা থাকলে সেটা লোপাট হয়ে যাচ্ছে, দেশি দুর্বৃত্তরা লোপাট করছে, বিদেশি দুর্বৃত্তরা লোপাট করছে স্থানীয় লোকজনের যোগসাজশে। যে টাকা বাইরে থেকে আমাদের মেহনতি ভাই ও বোনেরা পাঠাচ্ছেন, সেই টাকা এভাবে লুণ্ঠিত হচ্ছে, যে টাকা গার্মেন্টসের শ্রমিকেরা উপার্জন করছেন, সেই টাকাও ওই একইভাবে লুণ্ঠিত হচ্ছে। এবং যেটা খুব পরিষ্কার সত্য এবং যে সত্যের মধ্য দিয়ে এই বাস্তবতা, আজকের এই বাস্তবতা উন্মোচিত হয়ে যায় সেটা হলো মেয়েদের অবস্থা।
১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যখন প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এখানে ছাত্রী ছিল মাত্র একজন, আজকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীর সংখ্যা হয়েছে ১৭ হাজারের বেশি, কিন্তু মেয়েদের নিরাপত্তা বাড়েনি। এবং নিরাপত্তার অবস্থা মেয়েদের জন্য যে কতটা খারাপ সেটা সম্প্রতি যে ঘটনা ঘটেছে, যে নির্মম ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, সোহাগী জাহান তনু যেভাবে নিহত হয়েছেন, সেটাই তা উন্মোচিত করেছে। তনু একজন তরুণী, তিনি ধর্ষিত ও নিহত হলেন বাংলাদেশের সবচেয়ে সুরক্ষিত যে এলাকা সেখানে। এবং আমরা দেখলাম যে সেই হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দেওয়া হতো, যদি না তঁার সহপাঠীরা প্রতিবাদ করতেন এবং যদি না দেশজুড়ে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হতো। সঠিক তদন্ত হচ্ছে না, অপরাধীরা চিহ্নিত হচ্ছে না। এবং অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে বিচারটা।
এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি অসংখ্য ঘটনার একটি এবং এ ঘটনা বাস্তব সত্যকে উন্মোচিত করে দেয়। আমরা ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের তদন্তের ব্যাপারে দীর্ঘমেয়াদি তৎপরতা দেখেছি। আমরা দেখেছি সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড। কত দিন চলে গেল। মাসের পর মাস চলে গেল। বলা হয়েছিল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রহস্য উন্মোচিত হবে। ৪৮ ঘণ্টা, ৪৮ দিন, ৪৮ মাস চলে গেছে। কিন্তু রহস্য উন্মোচিত হয়নি, অপরাধীরা চিহ্নিত হয়নি। বিচার তো দূরের কথা। বিচার হয়নি এই জন্য যে ওই দাবিটা প্রবলভাবে তোলা যায়নি। বিচারব্যবস্থা একটা স্বাধীন, স্বাভাবিক ব্যবস্থা হওয়ার কথা, কিন্তু বিচারের জন্য এখানে দাবি করতে হয়, প্রবলভাবে দাবি না করলে বিচার হয় না। সাংবাদিকেরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন না। সাংবাদিকদের সেই অনৈক্যের কারণে সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পেছনের ঘটনা উন্মোচিত হয়নি, অপরাধীরা শাস্তি পায়নি। আজকে এই যে তনু হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে বলে আমরা আশা করছি তার একটা মাত্র কারণ আছে, একটাই মাত্র ভরসা আছে, সেটা হলো দেশজুড়ে ছাত্ররা এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে। এই বিক্ষোভ হচ্ছে ভরসা এবং এর ওপরই ভরসা করে আমরা আছি, টিকে আছি এবং আমরা ভাবছি যে আমাদের সুদিন আসবে।
আমাদের দেশে যে ব্যবস্থা বিদ্যমান সেই ব্যবস্থাটাকে চিহ্নিত করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে একে পুঁজিবাদী নাম দেওয়া। একসময় পুঁজিবাদের কিছু কিছু ভালো দিক ছিল। সেই দিকগুলো আমাদের দেশে আমরা দেখি না। পুঁজিবাদ উৎপাদন বৃদ্ধি করে, পুঁজিবাদ বিনিয়োগকে উৎসাহিত করে, পুঁজিবাদ মত প্রকাশের একপ্রকারের স্বাধীনতা দেয়। আমাদের দেশে সেই গুণগুলো আমরা দেখতে পাচ্ছি না। আমরা যা দেখতে পাচ্ছি, সেটা হলো পুঁজিবাদের সবচেয়ে নিকৃষ্ট দিকগুলোই। আমার দেখতে পাচ্ছি বিচ্ছিন্নতা, আমরা দেখতে পাচ্ছি ভোগবাদিতা, আমরা দেখতে পাচ্ছি নিপীড়ন। আর এই যে বিচ্ছিন্নতার বিষয় এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একাত্তর সালে ওই যে হানাদারেরা গণহত্যা করেছে আমাদের দেশে, তারা আশা করেছিল যে আক্রান্ত মানুষগুলো পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন হবে। আমরা যে তাদের তাড়িয়ে দিতে পেরেছি সেটার কারণ হচ্ছে একটাই। কারণ হলো আমরা বিচ্ছিন্ন হইনি, আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম। এই ঐক্যই ছিল সেদিন শক্তি।
বিচ্ছিন্নতার বিষয়টিকে নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। বিচ্ছিন্নতা ও একাকিত্ব এক জিনিস নয়। সাহিত্যে দুটো খুব বিখ্যাত চরিত্র আছে। দুজনেই তরুণ। একজনের নাম রবিনসন ক্রুসো, আরেকজনের নাম হ্যামলেট। আমরা দেখি যে রবিনসন ক্রুসো অল্প বয়সে একটা নির্জন দ্বীপে সঁাতরে গিয়ে উঠেছিলেন। তঁার জাহাজ ডুবে গেছে, সঁাতরে একাকী সেই নির্জন দ্বীপে এই তরুণ এসে উঠেছেন। একাকী অবশ্যই, কিন্তু বিচ্ছিন্ন নয়। রবিনসন ক্রুসোর হাতের কাছে কিছু হাতিয়ার ছিল, যা ভগ্ন জাহাজটি থেকে তিনি উদ্ধার করে আনতে পেরেছেন। সেগুলো উৎপাদনের কাজে লেগেছে। তিনি চাষবাস করেছেন, মাছ ধরেছেন, তিনি ছাগল পুষেছেন, তিনি প্রকৃতির সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছেন, তিনি গাছের ফল সংগ্রহ করেছেন। তিনি একটা তোতা পাখি সংগ্রহ করেছেন। একজন মানুষকেও পেয়ে গেছেন শেষ পর্যন্ত। তঁার একাকিত্ব ছিল, কিন্তু বিচ্ছিন্নতা ছিল না। এবং এই তরুণ তঁার বিচ্ছিন্নতা দূর করার আরেকটি উপায় খুঁজেছিলেন, সেটা হলো বাইবেল পড়া। এই যে মানুষ ধর্মের দিকে ঝোঁকে তার মূল কারণ হচ্ছে বিচ্ছিন্নতা। রবিনসন ক্রুসো চতুর্দিকে অন্ধকার দেখেছেন, নিঃসঙ্গ নির্জন দ্বীপ, কিন্তু সেখানে বাইবেল পড়ে তিনি সান্ত্বনা পেয়েছেন এবং নিজের বিচ্ছিন্নতা কিছুটা দূর করতে পেরেছেন।
আমরা এর বিপরীতে আরেকটি চরিত্র দেখি। অত্যন্ত পরিচিত চরিত্র, শেক্সপিয়ারের হ্যামলেট। হ্যামলেট কিন্তু একাকী ছিল না। হ্যামলেট ছাত্র, হ্যামলেট তখনকার দিনের জার্মানিতে সবচেয়ে বিখ্যাত যে বিশ্ববিদ্যালয় উটেনবার্গ, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। হ্যামলেট দর্শনের ছাত্র। হ্যামলেটের বন্ধু আছে, হ্যামলেট নাটক লিখতে পারে, অভিনয় করতে পারে, তলোয়ার চালাতে পারে। তার আছে উদ্ভাবনী শক্তি। মেধায় হ্যামলেট তার ওই রাজ্যে, ডেনমার্কের ওই রাজ্যে সবচেয়ে উচ্চপর্যায়ের মানুষ। কিন্তু হ্যামলেট দেখছে সে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এই যে ভিড় চতুর্দিকে তার, মানুষ আছে, অনেক মানুষ, রাজপুত্র সে, সবাই তার সমর্থক, কিন্তু সে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তার বাবা মারা গেছে, রটিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে বাবাকে সাপে কামড়েছে। তার বাবা মারা যাওয়ার পরে তার চাচা রাজা হয়েছে এবং তার মা, হ্যামলেটের মা, নতুন রাজাকে বিয়ে করেছে। এসব ঘটনা হ্যামলেটকে বিচলিত করছিল। এর মধ্যে হ্যামলেটের বাবার প্রেতাত্মা এসে দেখা দিল এবং বলল যে আমি খুব কঠিন যন্ত্রণায় দগ্ধ হচ্ছি, তুমি যদি এর প্রতিশোধ না নাও তাহলে আমার এই দুর্ভোগ, এই যন্ত্রণা দূর হবে না। ঘটনা কী? প্রেতাত্মা বলল সাপে কাটেনি আমাকে। আমাকে ওই যে দুর্বৃত্ত, তোমার পিতৃব্য, তোমার চাচা, সে–ই হত্যা করেছে। আমার কানের ভেতর বিষ ঢেলে দিয়েছিল। বাগানে আমি ঘুমাচ্ছিলাম। এটার তুমি প্রতিশোধ নেবে। এবং বলল কিন্তু তুমি তোমার মাকে যন্ত্রণা দেবে না। হ্যামলেট তার মাকে ভালোবাসে, বাবাকে ভালোবাসে এবং সে দেখতে পাচ্ছে যে একটি দুর্বৃত্ত তার বাবাকে হত্যা করেছে, তার মাকে বিয়ে করেছে এবং মায়ের বিয়ে সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। হ্যামলেট তাই প্রতিশোধ নেবে। কিন্তু কী করে প্রতিশোধ নেবে? সে তো একা হয়ে যাচ্ছে।
আমরা যে ব্যবস্থার মধ্যে আছি, সেটা হ্যামলেটের ডেনমার্কের মতোই অন্যায় ব্যবস্থা। এখানে ন্যায় পর্যুদস্ত হচ্ছে। সুবিচার নেই। শোষণ-নিপীড়ন চলছে। এখানে আজ কোনো প্রকার নিরাপত্তা নেই। আমরা যদি এই ব্যবস্থাটাকে বদলাতে চাই তাহলে একা কেউ পারব না। সংঘবদ্ধ হতে হবে এবং সেখানে সংগঠনের প্রয়োজন। আমরা আন্দোলন দেখেছি, স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন দেখেছি, কিন্তু বাংলাদেশে যেটা প্রয়োজন সেটা হচ্ছে সমাজ পরিবর্তনের সংগঠিত সুষ্ঠু আন্দোলন। ধারাবাহিক আন্দোলন। আমরা মুক্তির যে স্বপ্নের কথা ভেবেছিলাম, সেই স্বপ্ন সফল হয়নি। তার কারণ হচ্ছে, আমরা পুরোনো ব্যবস্থাটাকে বদলাইনি। আমরা রাষ্ট্র বদলিয়েছি। একবার সাতচল্লিশে রাষ্ট্র বদলালাম, দেশ ভাগ করলাম, একবার একাত্তরে রাষ্ট্র ভাঙলাম, পাকিস্তান রাষ্ট্রকে দুই টুকরো করে বেরিয়ে এলাম। রাষ্ট্র ছোট হলো, কিন্তু রাষ্ট্রের চরিত্র বদল হলো না। মানুষের মুক্তি এল না। তার কারণ হচ্ছে সমাজে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটল না। সমাজ মানে অনেকগুলো সামাজিক সম্পর্ক, সেই সম্পর্কগুলো বদলাল না। সম্পর্ক রয়ে গেল প্রভু ও ভৃত্যের, সম্পর্ক রয়ে গেল ধনী ও দরিদ্রের এবং এই ভৃত্য ও দরিদ্র এখন নিপীড়িত হচ্ছে।
৪৫ বছরে যে উন্নতি হয়েছে, সে উন্নতি পুঁজিবাদী উন্নতি, সেই উন্নতি কয়েকজনের উন্নতি, বাকি মানুষকে বঞ্চিত করে। এই উন্নতি পাহাড়ের মতো, এই উন্নতি নদীর মতো নয়। আমরা নদীর মতো উন্নতি চাই, যে উন্নতি সর্বত্র প্রবহমান হবে এবং যে উন্নতি সব মানুষের জীবনকে স্পর্শ করবে। ভূমিকে উর্বর করবে, প্রকৃতিকে বঁাচাবে। সেই উন্নতি বাংলাদেশে কিছুতেই আসবে না, যদি না আমরা সমাজকে পরিবর্তন করতে পারি। সমাজে পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু সব পরিবর্তনই পুঁজিবাদী পরিবর্তন।
যে কথাটা আমাদের জন্য খুব বেশি করে মনে রাখা প্রয়োজন সেটা হলো এই যে দেশের অবস্থা আরও খারাপ হবে, যদি না আমরা পতনের বিরুদ্ধে দাঁড়াই। আমরা একাকী এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারব না। একাকী এর বিরুদ্ধে যে দাঁড়াবে সে বিচ্ছিন্ন হতে থাকবে। কিন্তু যদি সংগঠিত আন্দোলন হয় তাহলে যেমন করে ওই যে আমরা অত বড় পাকিস্তানি বাহিনীর ৯৫ হাজার সদস্যকে আমাদের এখানে আত্মসমর্পণ করালাম তেমন ঘটনা ঘটাতে পারব। পাকিস্তানিরা পরাজিত হয়েছে যে শক্তির কাছে, সেটা হচ্ছে ঐক্যের শক্তি। এই শক্তিতে কৃষক এসেছিলেন। আমরা যেন এই ভুলটা না করি, এটা যেন আমরা বুঝতে ব্যর্থ না হই যে আমাদের দেশে যে বিপ্লব হয়নি তার একটা কারণ আমরা মধ্যবিত্তরা কৃষকের কাছে যেতে পারিনি। চীনে যে বিপ্লব হলো তার কারণ কৃষকের জাগরণ ঘটেছে। মুক্তির লড়াইটা কৃষকের লড়াই ছিল। আমাদের একাত্তরের যুদ্ধে যাঁরা লড়াই করেছেন, তাঁরা অধিকাংশই কৃষক এবং কৃষকের সন্তান। যে নারী লাঞ্ছিত হয়েছেন তিনি কৃষকের মেয়ে, তিনি কৃষকের বোন, তিনি কৃষকের স্ত্রী। যে ৩০ লাখ মানুষের প্রাণদানের কথা বলি, তার অধিকাংশই কৃষক।
তো আমরা যে সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলন করেছি, তাতে কৃষককে সঙ্গে নিতে পারিনি। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি আর ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি একই সময়ে গঠিত হলেও চীন বিপ্লব করল, ভারত করতে পারল না। তার কারণ হচ্ছে চীন কৃষকের কাছে গেছে, কৃষককে সংগঠিত করেছে এবং সেই কৃষকেরাই বিদ্রোহ করেছেন। সেই বিদ্রোহই চীনকে নতুন জায়গায় নিয়ে গেছে।
ভিয়েতনামেও একই ঘটনা। আমেরিকা পরাজিত হলো। কার কাছে? না কৃষকদের নিয়ে গঠিত বাহিনীর কাছে। কিন্তু আজকে চীনের কী অবস্থা? আজকে চীন পুঁজিবাদী এবং ওই চীন, যে চীন একদিন পৃথিবীকে মুক্ত করবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল, নিজের দেশকে মুক্ত করেছিল, সেই চীন পুঁজিবাদী হয়ে এখন ক্রমাগত অধোগতি হচ্ছে। সেখানে বেকারত্ব দেখা দিচ্ছে, সেখানে দুর্নীতি দেখা দিচ্ছে, সেখানে প্রকৃতি ধ্বংস হচ্ছে, সেখানে নদী দূষিত হচ্ছে। পুঁজিবাদের যত যত বালামসিবত আছে, সব চীনে এখন দেখা দিচ্ছে।
শিক্ষাটা হচ্ছে এই যে পুঁজিবাদের পথে মুক্তি নেই এবং মুক্তির লড়াইটা হচ্ছে পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই। সে জন্য যাঁরা সমাজতন্ত্রের কথা বলেন, তাঁদের অবস্থান হওয়া চাই খুব পরিষ্কার। পুঁজিবাদের বিকল্প পুঁজিবাদ নয়, পুঁজিবাদের বিকল্প হচ্ছে সমাজতন্ত্র। এবং এই সমাজতন্ত্রের যে সংগ্রাম, সেই সংগ্রাম একটা সংগঠিত, একটা সুসংগঠিত ধারাবাহিক সংগ্রাম। এতে স্বতঃস্ফূর্ততা থাকবে। আন্দোলনের জন্য স্বতঃস্ফূর্ততা একটা বড় গুণ, কিন্তু ওই গুণ পর্যাপ্ত নয়। আন্দোলনকে সংগঠিত হতে হবে।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী: ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়৷
উৎসঃ প্রথমআলো
পাঠক মন্তব্য
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন