বাংলাদেশের দল নিরপেক্ষ কিন্তু দেশ প্রেমিক শিক্ষিত মহল সাম্প্রতিক ঘটনাবলী নিয়ে চরম বিভ্রান্তির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তারা ঠিক ভেবে পাচ্ছেন না, দেশে এগুলো কি ঘটছে? কেন ঘটছে? কারা ঘটাচ্ছে? এই প্রশ্নগুলোকে খুব সিরিয়াসলি অ্যাড্রেস করা উচিৎ। কারণ এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে এ দেশের অবস্থা হবে সেই ‘বাঘ আসছে, বাঘ আসছে’ গল্পের মত। বাঘ আসছে বাঘ আসছে বলে মজা করতে করতে যখন সত্যি সত্যি বাঘ আসবে তখন আর তার কবল থেকে রক্ষা পাওয়ার কোনো পথ থাকবে না। দেশের অবস্থা আমাদের মত সাধারণ মানুষদের চোখে অত্যন্ত শান্ত এবং স্থিতিশীল। কোথাও কোনো হৈ চৈ নেই, মিছিল মিটিং নেই, পল্টন, সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান বা নয়াপল্টনে কোনো জনসভাও নেই। নেই কোনো হরতাল নেই, কোনো অবরোধ। এমনকি এখন মানববন্ধন, গোলটেবিল বৈঠক এবং সেমিনারেরও আধিক্য নেই। তারপরেও দেখা গেল ২৮ সেপ্টেম্বর ইটালীয় নাগরিক তাভেলা সিজার গুলশানের মত অভিজাত এবং আপাত নিরাপদ এলাকায় আততায়ীর গুলিতে নিহত হলেন। তার ৫ দিনের মাথায় রংপুরে আততায়ীর গুলিতে নিহত হলেন জাপানি নাগরিক হোশি কোনিও। পরবর্তী ইতিহাস সকলেই জানেন। তাই সেগুলোর আর জাবর কাটব না। প্রায় সবগুলো পশ্চিমা দেশ ট্র্যাভেল অ্যালার্ট দিয়েছে। এশিয়াতেও সাউথ কোরিয়া দিয়েছে। এগুলোর রেশ এখনো কাটেনি। এই অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার বার দুর্বৃত্তের ছুরিতে নিহত হলেন পুলিশের এএসআই ইব্রাহিম মোল্লা। ইব্রাহিম মোল্লার মৃত্যুর রেশ কাটতে না কাটতেই গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১.৩০ মিনিটে হোসেনী দালানে পরপর ৩টি বোমা বিস্ফোরিত হয়। আরেকটি বোমাও নিক্ষেপ করা হয়েছিল, কিন্তু সেদিন সেটি ফাটেনি। হোসেনী দালানে শিয়া সম্প্রদায়ের লোকরা পরদিন ভোরে মহররমের তাজিয়া মিছিল বের করার জন্য রাত দেড়টায় সেখানে প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেই সময় সেখানে বোমা হামলা হয়। গত রোববারের অনলাইন পত্রিকার খবর মোতাবেক, বোমা হমলায় এক ব্যক্তি নিহত এবং শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছে। মাত্র ২৪/২৫ দিনের ব্যবধানে একের পর এক এসব হত্যাকা- বা দুঃখজনক ঘটনা খুব স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে না। গত শনিবার একাধিক চ্যানেলের টক শো’তে বক্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, সম্ভবত বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করার জন্য এসব সিরিজ হামলা হচ্ছে। কিন্তু কারা এগুলো করছে, সে সম্পর্কে টক শো’র আলোচকরা সুনির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি অথবা বিষয়গুলো স্পর্শকাতর বলে এড়িয়ে গেছেন। কিন্তু সরকার পক্ষ কোনরূপ সময় না নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে এসব হামলা করার জন্য বিএনপি ও জামায়াতকে দায়ী করেছে। হোসেনী দালান রোডে এই নারকীয় ঘটনা কে বা কারা ঘটিয়েছে সেটা আমরা জানি না। জানা সম্ভবও নয়। সেটি জানবে পুলিশ। কিন্তু সেই ঘটনা ঘটার মাত্র দেড় ঘণ্টা পর একটি রাজনৈতিক দল বা জোটের ওপর তার দায় দায়িত্ব চাপানো কতখানি দায়িত্বশীলতার পরিচয় বহন করে সেটি পাঠক বিবেচনা করবেন। এই বিস্ফোরণ ঘটেছে রাত ১.৩০ মিনিটে। তার পৌনে ২ ঘণ্টা পর লালবাগের আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি হাজী সেলিম রাত সোয়া ৩টার সময় অকুস্থলে যান। সেখানে গিয়ে তিনি ঢালাওভাবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর এই পাশবিক হামলার দোষ চাপান। হাজী সেলিম বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করতে স্বাধীনতা বিরোধীরাই তাজিয়া মিছিলে হামলা চালিয়েছে। তিনি আরো বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেন না, যারা সব সময় চায় দেশ যেন শান্তিতে না থাকে, তারাই এ ধরনের হামলা চালায়। অতীতেও এ ধরনের হামলা তারা চালিয়েছে। আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে সানজু নামের একজন মারা গেছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতের মধ্যে নারী ও শিশুসহ ১৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ছাড়া প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কিছু লোককে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।॥ দুই ॥বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামীর তরফ থেকেও এই ঘটনা সম্পর্কে তাদের বক্তব্য এসেছে। পুরান ঢাকার হোসনী দালান ইমামবাড়ায় বোমা হামলার ঘটনায় অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি। শনিবার দুপুরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘হোসেনী দালানের ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এ ব্যাপারে নিরপেক্ষ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অবিলম্বে দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি করছি।’ পুলিশের আইজিপি বোমা হামলার ঘটনার সঙ্গে পরোক্ষভাবে বিএনপিকে দায়ী করেছেন- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘ওনারা তো সরকারি দলের লোকজনের মতো কথাবার্তা বলছেন।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দেশে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অনেক লোক আছেন, যাদের মাধ্যমে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের সাজা দিতে না পারলে এক সময় এসব ঘটনা ফ্রাংকেনস্টাইন হয়ে উঠবে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাবে।’জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ এ সম্পর্কে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। শনিবার (২৪ অক্টোবর) গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘হোসেনী দালানের সামনে তিনটি বোমা বিস্ফোরণে এক যুবক নিহত ও শতাধিক লোক আহত হওয়ার ঘটনার নিন্দা জানানোর কোন ভাষা নেই। বাংলাদেশে শিয়া মুসলমান সম্প্রদায় আবহমান কাল থেকেই পুরান ঢাকার হোসেনী দালান থেকে ১০ মহররম তাজিয়া মিছিল বের করে থাকে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এ ধরনের কোন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটতে দেখা যায়নি। এ ধরনের হামলার ঘটনা এক নজির বিহীন ঘটনা। এ সরকারের আমলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে চরম অবনতি ঘটেছে হোসেনী দালানের সামনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা তারই বাস্তব প্রমাণ।’ মকবুল আহমাদ বলেন, ‘সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার কারণেই দুর্বৃত্তরা এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটানোর সাহস পেয়েছে। সরকারের দুর্বলতার কারণেই দেশে বিভিন্ন ধরনের অঘটন ঘটছে। এতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতাই বারবার প্রমাণিত হচ্ছে।’হোসেনী দালানের সামনে বোমা বিস্ফোরণে এক যুবক নিহত ও শতাধিক লোক আহত হওয়ার নির্মম ঘটনার সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ তদন্ত করে ঐ ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান মকবুল আহমাদ।॥ তিন ॥অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের তরফ থেকে এবার মোটামুটি সুনির্দিষ্টভাবে হোসনী দালানে বোমা হামলা সম্পর্কে বিএনপি এবং জামায়াতকে দায়ী করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগের তরফ থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, উপদেষ্টা গওহর রিজভি এবং অন্যদিকে পুলিশের আইজি শহিদুল হক এই বিষয়ে যেসব উক্তি করেছেন তার মূল সুর মোটামুটি এক। সংবাদপত্র পাঠক ভাইয়েরা আওয়ামী লীগ ও পুলিশের বক্তব্য নিশ্চয়ই পড়েছেন। পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে শিয়াদের তাজিয়া মিছিলের উপর হামলার সঙ্গে দুদিন আগে গাবতলীতে এএসআই খুনের যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি করেছেন আইজিপি। এএসআই ইব্রাহিম মোল্লার হত্যাকা-কে কেন্দ্র করে মাসুদ নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটক মাসুদের তথ্য অনুযায়ী, এই পরিকল্পনা বগুড়ায়ই হয়েছে, বলেন শহীদুল হক। গাবতলীতে পুলিশকে ছুরিকাঘাতের সময় গ্রেফতার হওয়া মাসুদ ও তার সঙ্গীরা বগুড়া থেকে ঢাকা এসেছিলেন বলে পুলিশ জানায়। আইজিপি বলছেন, কামরাঙ্গীরচরে পাওয়া বিস্ফোরক এবং ইমামবাড়ার বিস্ফোরকে মিল আছে। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে। ২৫ অক্টোবর ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের অনলাইন পোর্টালের খবরে প্রকাশ, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে জামায়াত-শিবিরের ৫৬ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে অস্ত্র, গুলি ও জিহাদি বই। শনিবার রাতে বিনোদপুর থেকে রাজশাহী মহানগর জামায়াতের আমীর আবুল হাশেমকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ। এর আগে সাভারে অস্ত্র-গুলি ও জিহাদি বইসহ চার শিবির নেতাকে আটক করা হয়। এর মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা শিবিরের প্রচার সম্পাদকও রয়েছেন। ঐ চ্যানেলটির খবরে প্রকাশ, বগুড়ায় আটক হয়েছে উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি হাসান আলীসহ আট জন। এছাড়া, নওগাঁর পৌর জামায়াতের আমির হোসাইন আহমেদকে আটক করেছে গোয়েন্দারা। বান্দরবানে জামায়াত-শিবিরের ৪২ নেতা-কর্মীকে আটকের পর জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। ইনডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের অনলাইন পোর্টালের খবরে আরও প্রকাশ, দেশকে অস্থিতিশীল করতে পরিকল্পিতভাবে নাশকতার চেষ্টা করছে জামায়াত-শিবির। নির্দিষ্ট টার্গেটে হামলা চালাতে অস্ত্র ও বিস্ফোরক মজুত করেছে তারা। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ঠেকাতেই নতুন এই ছক এঁকেছে দলটি। পুলিশ জানিয়েছে, মাসুদ শিবির কর্মী। পুলিশ খুনের মূল পরিকল্পনা করে শিবিরের বগুড়া জেলার আদমদীঘী উপজেলার সভাপতি এনামুল হক। জিজ্ঞাসাবাদের তথ্য অনুযায়ী, কামরাঙ্গির চর ও বগুড়ায় অভিযান চালায় পুলিশ। বিস্ফোরকসহ গ্রেফতার হয় জামায়াত-শিবিরের বেশ কজন নেতা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দেশজুড়ে আতঙ্ক তৈরি করতেই নাশকতার পথ বেছে নিয়েছে জামায়াত-শিবির। চোরাগোপ্তা হামলা কিংবা নাশকতা ঠেকাতে দেশজুড়ে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ॥ চার ॥কক্সবাজার, নারায়ণগঞ্জ ও বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলছেন, যে দেশে স্থিতিশীলতা বিনষ্টের জন্য বিএনপি এবং জামায়াত-শিবির নাশকতার চক্রান্ত করেছিল। অন্যদিকে আইনমন্ত্রী বলেছেন যুদ্ধাপরাধের রায় বাস্তবায়ন ঠেকানোর জন্যই দেশে এসব হামলা ও হত্যাকা- চলছে। তবে সরকারের এসব বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সাবেকমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার পতœী অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রাজধানীর গাবতলীতে বৃহস্পতিবার রাতে তল্লাশির সময় ছুরিকাঘাতে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ইব্রাহিম মোল্লা নিহত হয়েছেন। ঘাতক পালিয়ে গেলেও মাসুদ রানা নামের এক ব্যক্তিকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে পুলিশ। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে গাবতলীর পর্বত সিনেমা হলের সামনে চেকপোস্ট বসিয়ে যাত্রীবাহী একটি বাস থামিয়ে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে তল্লাশি করছিলেন দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা। এ সময় হঠাৎ দু’জন দৌড়ে পালিয়ে যেতে চাইলে তাদের ধাওয়া করেন এএসআই ইব্রাহিম। কিছুদূর গিয়ে তিনি একজনকে ধরে ফেললে তাকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় ওই যুবক। গুরুতর আহত অবস্থায় সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান ইব্রাহিম। রাতেই আটক মাসুদ রানাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দারুস সালাম থানায় নেয়া হয়।যে কোন ঘটনায় রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খোঁজা রীতিতে পরিণত হয়েছে বলে মনে করেন অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা। তিনি বলেন, ‘আমরা বড় বেশি রাজনৈতিক হয়ে গেছি। সব কিছুতেই এদিক আর ওদিক। মাঝখানে কিছু ভাবতে পারি না। যে ব্যক্তি এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তার মধ্যে কিছু ছিল বলেই পালিয়ে যেতে চেয়েছে। সে সন্ত্রাসী, জঙ্গি, সাধারণ চোর- যে কোন কিছু হতে পারে। কিন্তু আমাদের মধ্যে প্রবণতা হলো, কোন দলকে দোষারোপ করা। যে দল ক্ষমতায় নেই তার ওপরই দায় পড়বে, এটাই বর্তমান অবস্থা।’ উল্লেখ করা যেতে পারে যে, বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে দারুস সালাম থানার এএসআই ইব্রাহিম মোলা দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। শনিবার তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসানকে কমিটির প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, মিরপুর জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) কাইয়ুম উজ্জামান ও গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (পশিম বিভাগ) মো. সাজ্জাদুর রহমান। তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে গত শনিবার। দেখা যাচ্ছে যে, যাদেরকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে তারা সকলেই পুলিশের সিনিয়র অফিসার। আর আইজিপি হলেন পুলিশের প্রধান। তিনি যদি তদন্ত শুরুর আগেই এমন মন্তব্য করেন তাহলে ঐ তদন্ত ঐধরনের মন্তব্য দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার সমূহসম্ভাবনা থাকে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। ঢাকার এই রক্তাক্ত মঞ্চে আবার উদয় ঘটেছে সাইট ইন্টেলিজেন্সের। এর আগে তারা বলেছিল যে, ইটালীয় ও জাপানি নাগরিক হত্যা করেছে আইএস। বাংলাদেশ সরকার দৃঢ়ভাবে এ বক্তব্য নাকচ করেছে। এখন আবার হোসেনী দালান বোমা হামলাতেও নাক গলিয়েছে সাইট ইন্টেলিজেন্স। এবারও বলেছে যে, আইএস নাকি এই বোমা হামলা করেছে। আমি এজন্য শুরুতেই বলেছিলাম যে, সম্প্রতি যা কিছু ঘটছে সেগুলোতে সচেতন মানুষ যেমন বিভ্রান্ত, তেমনি বিচলিত। এই বিভ্রান্তি চলতেই থাকবে যদি এসব ঘটনার অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য তদন্ত এবং বিচার না হয়। তদন্তের আগে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ওপর দোষ চাপানো আইনের কষ্টিপাথরে কতখানি যুক্তিযুক্ত সেটিও বিবেচনার দাবি রাখে। সারাদেশ রাজনৈতিকভাবে শান্ত এবং স্থিতিশীল। তারপরেও নতুন করে শত শত রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীকে গ্রেফতার করা কতখানি সমীচীন সেটিও বিবেচনার দাবি রাখে। এসব কি জঙ্গিবাদি তৎপরতা নাকি ক্রিমিনালদের সন্ত্রাস তাও অকাট্য প্রমাণসহ দেশবাসীকে জানানো উচিৎ। শেষ কথা হলো, অবাধ গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মতামত প্রকাশের স্বাধীনতাই হলো এসব সশস্ত্র তৎপরতার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় বুল ওয়ার্ক। Email:
[email protected]
পাঠক মন্তব্য
Regaeding foreigners killing: প্রধানমন্ত্রী তো কোনোরকম তদন্ত-বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগেই বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করে চূড়ান্ত রায়ই জানিয়ে দিলেন - Now death sentence may come from Awami Pig Cadre mentally unballanced Manik & Surendra.
সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন