Image description

মো: রেজুয়ানুল হক

 

৬৮০ খ্রিস্টাব্দ মোতাবেক ৬১ হিজরির ১০ মহররম সংঘটিত কারবালার নৃশংস ঘটনা মুসলমানদের জন্য একটি শোকাবহ ঘটনা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অতি আদরের দৌহিত্র হজরত হুসাইনসহ আহলে বাইতের সম্মানিত ১৮ জন সদস্য এই ঘটনায় শহিদ হন। ৬৮০ সালে হজরত মুয়াবিয়া রা. এর ইন্তেকালের পর তদীয় পুত্র ইয়াজিদ খলিফা হয়। প্রায় পুরো উমাইয়া খিলাফত (৬৬১-৭৫০ খ্রি.) ইয়াজিদের আনুগত্য করলেও বিশিষ্ট কয়েকজন সাহাবি তার আনুগত্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন আহলে বাইতের সদস্য হজরত হুসাইন, হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর ও আব্দুল্লাহ ইবনে উমর প্রমূখ সাহাবি। আল্লামা ইবনে খালদুন বলেছেন ইয়াজিদের খিলাফতের ব্যাপারে সবাই একমত ছিল শুধু আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর ব্যতীত। (আল মুকাদ্দিমা-১/৩৯১-২)

হজরত আলি রা. এর রাজধানী শহর কুফার জনগণও ইয়াজিদকে খলিফা হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকার করে এবং তারা হজরত হুসাইনকে কুফায় আমন্ত্রণ জানায়। কুফার জনগণ দেড়শো চিঠি পাঠিয়ে হজরত হুসাইনকে কুফায় আমন্ত্রণ জানায় এবং খিলাফতের বাইআত নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। হজরত হুসাইন এরপরও সেখানে যাননি। পরে তারা অনেক প্রতিনিধি পাঠিয়ে হজরত হুসাইনকে কুফায় যেতে রাজি করে। তিনি প্রথমে স্বীয় চাচাতো ভাই মুসলিম ইবনে আকিলকে কুফায় জনমত যাচাইয়ের জন্য পাঠান। মুসলিম ইবনে আকিল কুফায় পৌঁছলে তার হাতে প্রথমে বার হাজার পরে আঠারো হাজার কুফাবাসী হজরত হুসাইনের পক্ষে বাইআত গ্রহণ করে। (ইসলামের ইতিহাসের পঞ্চাশ বছর -১৮৪)

ইবনে খালদুনের ৩০ হাজার কুফাবাসীর বাইয়াতের কথা বলেছে। (তারিখে ইবনে খালদুন-৩/২৯) মুসলিম ইবনে আকিল এই অবস্থা দৃষ্টে অভিভূত হন এবং হজরত হুসাইনকে কুফায় যেতে অনুরোধ করেন। এমতাবস্থায় আব্দুল্লাহ ইবনে মুসলিম, আম্মারা ইবনে ওলিদ ও আম্মারা ইবনে সাদ কুফার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ইয়াজিদকে অবগত করে। তারা চিঠিতে কুফার বর্তমান গভর্নর নুমান ইবনে বশিরের শান্তিপূর্ণ নীতি সম্পর্কেও অবগত করে। ফলে ইয়াজিদ বসরার গভর্নর উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কুফার গভর্নর নিযুক্ত করে। এরপরেই কারবালার ঘটনার পটভূমি রচিত হতে থাকে। নতুন গভর্নরের হুমকি ধামকি ও কূটকৌশলে কুফাবাসী মত পরিবর্তন করে এবং হজরত হুসাইনের পক্ষ ত্যাগ করে। 

হজরত হুসাইন ইতোমধ্যেই মুসলিম ইবনে আকিলের ইতিবাচক প্রতিবেদনে আস্থাশীল হয়ে কুফার উদ্দেশ্যে মক্কা ত্যাগ করেন। পথিমধ্যে তিনি কুফার পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও তাঁর প্রেরিত প্রতিনিধি মুসলিম ইবনে আকিলের হত্যাকাণ্ডের সংবাদ পান। নিহত প্রতিনিধির আত্নীয় -স্বজনদের প্রতিশোধ স্পৃহার কারণে তিনি কুফার উদ্দেশ্যে যাত্রা অব্যাহত রাখেন। কিছুদূর অগ্রসর হয়ে তিনি হুর ইবনে ইয়াজিদের নেতৃত্বে পাঠানো উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের  এক হাজার সৈন্যের মুখোমুখি হন। তারা তাঁকে কুফায় যেতে বাঁধা দেয় এবং কারবালার ময়দানে অবতরণ করতে বাধ্য করে। ২ মহররম তিনি পরিবার ও সাথীদের নিয়ে কারবালার ময়দানে অবতরণ করেন। স্বীয় ভুল বুঝতে পেরে পরবর্তীতে হুর ইবনে ইয়াজিদ হজরত হুসাইনের বাহিনীতে যোগ দেন এবং তাঁর পক্ষে যুদ্ধে যোগ দেন। হুর ইবনে ইয়াজিদের সঙ্গে আলোচনা চলাকালীন উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ উমর বিন সাদের নেতৃত্বে চার হাজার সৈন্যের একটি বাহিনী কারবালার ময়দানে পাঠায়। এরপরেই পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করে। নয় মহররম শিমার উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের  নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ অথবা যুদ্ধ- এই কঠোর আদেশ নিয়ে কারবালার ময়দানে অবতরণ করে। দশই মহররম কারবালার নৃশংস ঘটনা ঘটে। আহলে বাইতের সম্মানিত ১৮ জন সদস্যসহ ৭২ জন শহিদ হন। অপরপক্ষে উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের বাহিনীর ৮৮ জন নরাধমের করুণ মৃত্যু হয়। (ইসলামের ইতিহাসের পঞ্চাশ বছর -১৯৪) ইতিহাসের নৃশংস এই ঘটনার পেছনে দায়ীদের খোঁজে দেখানোই এই লেখাটির আলোচ্য বিষয়।

এক. ইয়াজিদ
কারবালার ঘটনার দায়ভার প্রথমত বর্তায় ইয়াজিদের ঘাড়ে। ইয়াজিদ হজরত হুসাইন (রা.) কে হত্যার নির্দেশ দিয়েছে এমন তথ্য সহিহ সনদে বর্ণিত নেই। বরং সে হজরত হুসাইন (রা.) যাতে কুফাবাসীর আমন্ত্রণে কুফায় না আসেন-এরকম অনুরোধে আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইরকে (রা.) চিঠি লিখেছিল। ফলে আব্দুল্লাহ ইবনে জুবাইর (রা.) হজরত হুসাইন (রা.) কে কুফায় যেতে অন্তত দুইবার অনুরোধ করেছেন। এছাড়া আরো অনেকে তাঁকে কুফায় না যেতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি কারো অনুরোধের প্রতি কর্ণপাত করেননি।কুফাবাসীর বাহ্যিক আকুল আবেদন তাঁর কাছে এসব অনুরোধের ঊর্ধ্বে মনে হয়েছে এবং তিনি স্বীয় ইজতিহাদের উপরেই আস্থাশীল হয়ে পড়েন। তারপরও নিম্নোক্ত কারণে ইয়াজিদ কারবালার ঘটনার জন্য এক নম্বর আসামি।

* কারবালার ঘটনা ঘটেছে ইয়াজিদের শাসনামলে। তার শাসিত মাটি রঞ্জিত হয়েছে আহলে বাইতের রক্তে। ঘটনা যেভাবেই ঘটুক দায়ভার শাসকের, ইয়াজিদের।

* কারবালার নৃশংস ঘটনার সংবাদ শুনে ইয়াজিদ অপরাধীদের সামান্য তীরস্কার করেছে, শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি প্রধান অপরাধী কুফার গভর্নর উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে অপসারণও করেনি। ইয়াজিদের এমন নির্লিপ্ততা তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দেয়।

* ইয়াজিদ কুফার গভর্নর উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে হজরত হুসাইনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে নিষেধ করেনি। সে উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে স্পষ্ট নির্দেশ দিতে পারত যে, নবীদৌহিত্রের সঙ্গে যাতে কোনো বেয়াদবি না হয়। এতে কারবালার ইতিহাস ভিন্নভাবে লেখার সুযোগ হতে পারত।

* ইয়াজিদ হজরত হুসাইন (রা.) কে এর সঙ্গে আলোচনার আমন্ত্রণ জানাতে পারত। এমনকি উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে হজরত হুসাইনের সঙ্গে যুদ্ধ এড়ানোর জন্য যেকোনো প্রস্তাব মেনে নেওয়ার নির্দেশ দিতে পারত। কেননা পরবর্তীতে হজরত হুসাইন কারবালায় উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদের সেনাপতি উমর বিন সাদকে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সুতরাং এটি বলতেই হবে যে, ইয়াজিদের হাতে আহলে বাইতের রক্তের দাগ লেগে আছে। আল্লামা ইবনে খালদুন যথার্থই বলেছেন যে, 'হুসাইনের হত্যার জন্য ইয়াজিদ ও তার সহচররাই দায়ী।' (আল মুকাদ্দিমা-১/৩৯৮)

দুই. উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদ
হজরত হুসাইন (রা.) এর প্রতিনিধি মুসলিম ইবনে আকিল কুফার অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য আগমন করলে ইয়াজিদ এখানের শান্তিপ্রিয় গভর্নর হজরত নুমান ইবনে বশীর (রা.) কে অপসারণ করে নরপিশাচ উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে গভর্নর নিয়োগ দেয়। সে ছিল বসরার গভর্নর। কুফা ও বসরা দুটি প্রদেশকেই তার অধীন করে দেওয়া হয়। ঐতিহাসিক তথ্য বিশ্লেষণ করলে এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, কারবালার নৃশংস ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ছিল সে। তার ব্যক্তিগত জেদ, উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও নিষ্ঠুরতা কারবালার নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যায়। সে মুসলিম ইবনে আকিলকে হত্যা করে। এমনকি তার আশ্রয়দাতা হানি ইবনে উরওয়াকেও হত্যা করে। হজরত হুসাইন (রা.) কুফার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করলে সে প্রথমত ১০০০ সৈন্যের বাহিনী দিয়ে হুর ইবনে ইয়াজিদকে পাঠায়। কিন্তু হুর ইবনে ইয়াজিদ হজরত হুসাইন (রা.) এর সঙ্গে যোগ দেয়। সে আরো ৪০০০ সৈন্য দিয়ে উমর বিন সাদকে পাঠায়। হজরত হুসাইন (রা.) উমর বিন সাদকে তিনটি প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবগুলো হলো-১. আমাকে মদিনায় ফেরত যেতে দেওয়া হোক।
২. আমাকে ইয়াজিদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হোক।
৩. আমাকে দূরবর্তী কোনো যুদ্ধের ময়দানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। সেখানে ইসলামের শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করব। (তারিখে তাবারি -৫/৩৮৯, ইসলামের ইতিহাসের পঞ্চাশ বছর -১৯১)

উমর বিন সাদ এই প্রস্তাবের বিষয়টি নিয়ে উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদের নিকট চিঠি লিখে সিদ্ধান্ত চাইলেন। কিন্তু সে উমর বিন সাদকে কোনো প্রস্তাব না মেনে হজরত হুসাইন (রা.) কে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। অন্যথায় ফুরাত নদীর পানি বন্ধ করে দিতে নির্দেশ দেয়। নির্দেশ পালন না করতে পারলে তাকে পদত্যাগ করতে বলে। পার্থিব খ্যাতি লাভের আশায় বিভোর উমর বিন সাদ নবীদৌহিত্রের সঙ্গে অন্যায় আচরণ শুরু করে। হজরত হুসাইন (রা.) নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ না করে যুদ্ধের মহিমান্বিত পথ বেছে নেন। হজরত হুসাইন বলেন, 'এই অপমানের চেয়ে মৃত্যু শ্রেয়।' (তারিখে ইবনে খালদুন-৩/২৯)

উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদ তিনটি প্রস্তাবের কোনো একটি মেনে নিলে কারবালার ঘটনার অবতারণা নাও হতে পারত। সে শিমার বিন জিল জাওশানকে কারবালার ময়দানে উমর বিন সাদকে সহযোগিতা করার জন্য পাঠায়। শিমার কারবালার ময়দানে পৌঁছার পর পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তিত হতে থাকে। 

তিন. কুফাবাসী
কুফার বিপুল সংখ্যক অধিবাসী হজরত হুসাইনকে কুফায় আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রায় দেড়শোর মত চিঠি পাঠিয়েছে। এসব চিঠিতে হজরত হুসাইনকে কুফায় যাওয়ার তীব্র আবেদন ও ইয়াজিদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি ছিল। এমনকি প্রতিনিধি পাঠিয়ে হজরত হুসাইনকে কুফায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টার ত্রুটি করেনি তারা। কিন্তু উবাইদুল্লাহ ইবনে জিয়াদ কুফায় গভর্নর হয়ে আসার পর এরা প্রতিশ্রুতির কথা ভুলে যায়, এমনকি চূড়ান্ত বিশ্বাসঘাতকতার আশ্রয় নেয়। ‌

হজরত হুসাইনের প্রতিনিধি মুসলিম ইবনে আকিল যখন জানতে পারেন যে তার আশ্রয়দাতা হানি ইবনে উরওয়ারকে গভর্নর উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ নির্যাতন করেছে তখন তিনি কুফার জনগণকে (যারা তার হাতে হজরত হুসাইনের উপর আনুগত্যের শপথ করেছিল) নিয়ে গভর্নরের বাসভবন ঘেরাও করে। গভর্নর উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ তার বাড়ির ফটক বন্ধ করে দিয়ে কূটচালের আশ্রয় নেয়। সে কুফার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং তার কূটচালে কুফার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা আন্দোলন থেকে সরে আসে। (ইসলামের ইতিহাসের পঞ্চাশ বছর -১৮৬)

কুফার জনগণ যদি বিশ্বাসঘাতকতা না করত তাহলে উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের পরাজয় ছিল অবশ্যম্ভাবী। তারা মুসলিম ইবনে আকিলকে কোনো সহযোগিতা করেনি। এমনকি তার গোপনীয় আশ্রয়স্থল সম্পর্কে উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদকে জানিয়ে দেয়। মুসলিম ইবনে আকিল মৃত্যুর পূর্বে হজরত হুসানকে কুফাবাসীর বিশ্বাসঘাতকতার সংবাদ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু ইতোমধ্যেই তিনি কুফার পথে রওয়ানা দিয়েছিলেন।

মুসলিম ইবনে আকিলকে যখন ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয় তখন তিনি দুই হাত তুলে বলেছিলেন, 'হে আল্লাহ, আমাদের ও ঐ সম্প্রদায়ের মাঝে ফয়সালা করুন যারা প্রতারণা করেছে এবং সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অসহায় করেছে।' (ইসলামের ইতিহাসের পঞ্চাশ বছর, পৃষ্ঠা -২০০)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. কে এক ব্যক্তি ইহরাম অবস্থায় মাছি মারার বিধান সম্পর্কে জানতে চান। তিনি তাকে বলেন, তুমি কোন অঞ্চলের অধিবাসী? সে বললো আমি ইরাকের অধিবাসী। আবদুল্লাহ ইবনে উমর বললেন, তোমরা নবীর প্রিয় দৌহিত্রকে হত্যা করেছো আর মাছি হত্যার বিধান জানতে চাচ্ছো! (বুখারী শরীফ, হাদিস নম্বর -৫৫৬৮)

এছাড়াও কারবালার নৃশংস ঘটনার জন্য উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের পরামর্শদাতা শিমার বিন জিলজাওশান ও কারবালার ময়দানের সেনাপতি উমর বিন সাদকে দায়ী করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। তাদের অতি উৎসাহী ভূমিকা, নেতৃত্ব লাভের আকাঙ্ক্ষা ও উচ্চাভিলাষ কারবালার ঘটনাকে নৃশংসতার দিকে নিয়ে গিয়েছে। মুহাম্মদ রেজা-ই-করীম বলেন, উবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ হজরত হুসাইনের দেওয়া তিনটি প্রস্তাবের একটি মেনে নিতে আগ্রহী ছিলেন কিন্তু শিমার তাকে বারণ করে এবং হজরত হুসাইনকে নিষ্ঠুরভাবে দমন করে খ্যাতি অর্জনের পরামর্শ দেয়। (আরব জাতির ইতিহাস-১৪৩)।

লেখক: প্রভাষক, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, শ্রীবরদী সরকারি কলেজ, শ্রীবরদী, শেরপুর।