Image description

মিনার রশীদ

জনৈকা এনজিও নেত্রী ও বর্তমান সরকারের এক শক্তিশালী উপদেষ্টা সব রাজনীতিবিদের প্রতি প্রশ্ন রেখেছেন, ‘গত ৫৩ বছরে আপনারা কী করেছেন?’ তার এই স্পর্ধা দেখে স্তম্ভিত হলাম! ভাবতে লাগলাম, এই প্রশ্ন করার সাহস ও সুযোগটি তারা কেন পেলেন, কীভাবে পেলেন?
 
মনে আজ অনেক প্রশ্ন আসছে, জানি না কাকে জিজ্ঞেস করা যাবে। গত ৫৩ বছরে রাজনীতিকে তার নিজস্ব গতিধারায় ফিরতে কারা বাধার সৃষ্টি করেছিল? ট্রায়াল অ্যান্ড এররের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক বিকাশের স্বাভাবিক গতিপ্রবাহকে কারা বাধাগ্রস্ত করেছিল?
 
এগুলোর প্রত্যেকটিতে বাইরের খুদ-কুঁড়ায় লালিত এনজিওদের বিশেষ ভূমিকা এখন আর গোপন নেই! এনজিওদের টাকাতেই এদেশের এলিট সুশীল সমাজ গড়ে উঠেছে! যে এক-এগারো জাতিকে কয়েক দশক পিছিয়ে দিয়েছে এবং ভয়ংকর এক ফ্যাসিবাদকে জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছিল, তার প্রযোজক-পরিচালক সবই ছিল এসব কথিত এনজিও!
 
টিআইবি নামক এক এনজিও মতলববাজি হিসাব দেখিয়ে অপছন্দের দলটিকে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন প্রতিপন্ন করেছিল এবং সঙ্গের সব ঢুলিরা ঢাকঢোল বাজিয়ে সারাদেশকে জানিয়েছিল! সেই চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম বছরটি অবশ্য আগের সরকারের শেষ বছরের আমলনামা ছিল। কিন্তু এই সুশীলরা জানে যে, আওয়ামী লীগ তাদের গলাবাজি দিয়ে সেটাও বিএনপির কাঁধে চাপাবে এবং বাস্তবে হয়েছেও তাই। বিদেশি খুদ-কুঁড়ায় লালিত এই এনজিওগুলো এক-এগারোর সৃষ্টির পেছনের সমস্ত গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করেছে। আর এদের মিডিয়া পার্টনার হিসেবে কাজ করেছে একই করপোরেট হাউস থেকে পরিচালিত একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি কাগজ।
 
আরেক এনজিও সিপিডি (সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ) জোট বেঁধেছিল আলো-স্টার-চ্যানেল আইয়ের সঙ্গে! এরা সবাই মিলে এক-এগারো সৃষ্টি করে জাতিকে কমপক্ষে ৫০ বছর পিছিয়ে দিয়েছে! এরাই পরিকল্পিতভাবে সমাজকে ভয়ংকরভাবে ডিপলিটিসাইজ করে গেছে। এরাই কয়েকটি প্রজন্মকে আই-হেইট-পলিটিক্স প্রজন্ম হিসেবে গড়ে তুলেছে! আজকের মহাপরাক্রমশালী রেজোয়ানা এদেরই প্রডাক্ট, এদেরই সহযোগী!
 
এই সিপিডি চারদলীয় জোট সরকারের সময়ে হারিকেন জ্বালিয়ে সৎ মানুষ খুঁজেছে! কিন্তু আওয়ামী সরকারের আমলে আর সৎ মানুষ খোঁজার দরকার পড়েনি।
 
২০০১-২০০৫ সময়কার দুর্নীতির মাত্রা কোনোক্রমেই ২০০৯-২০২৪ সময়কার মাত্রার চেয়ে বেশি ছিল না। ২০০৯-২০২৪ সময়কার দুর্নীতির ভলিউম প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার। বছরে গড়পড়তা ২০ বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতি হয়েছে। আগেরবার দেশকে পাঁচ-পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন ডিক্লেয়ার করেছিল! এবার ১৫ বছরের মধ্যে একবারও চ্যাম্পিয়ন ডিক্লেয়ার করতে পারল না? এটাই টিআইবি, এটাই এদেশের এনজিও।
 
এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ না করে পারা যাচ্ছে না! ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে হাওয়া ভবনকে দুর্নীতির প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হয়েছিল । শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী সরকার শত চেষ্টা করে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগও ন্যূনতম বিশ্বাসযোগ্যভাবে প্রমাণ করতে পারেনি। বরং তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত একটি দুর্নীতির মামলা থেকে তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেয়ায় সেই বিচারককে জীবননাশের হুমকি দিয়ে দেশছাড়া করা হয়েছে। সেই জাজ মোতাহার হোসেইন দুঃসহ যন্ত্রণা ভোগ করে প্রবাসজীবন কাটাতে বাধ্য হয়েছেন। আমাদের মিডিয়াগুলো মোতাহার হোসেনের সেই কাহিনি তুলে ধরে না! কারণ তখন কেঁচো খুঁড়তে এরকম অনেক সাপ বেরিয়ে আসবে!
 
কাদের প্ররোচনায় বা নির্দেশে দেশের রাজনীতি ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ডেমোনাইজ করার এই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল—এ ধরনের প্রশ্নের জবাব দিতে দিতেই জীবন যাদের ওষ্ঠাগত হওয়ার কথা ছিল, বিদেশি খুদ-কুঁড়া খাওয়া সেই রেজাওয়ানারা আজ উলটো প্রশ্ন করেন, ৫৩ বছরে কী করেছেন? আর এই সুযোগটি পেয়েছে সমাজের তথাকথিত ভালো মানুষগুলোর রাজনীতিবিমুখ হওয়ার কারণে।
 
এসব মতলববাজ ও জ্ঞানপাপী গোষ্ঠীর প্রচেষ্টায় এদেশে একটা আজব শ্রেণি তৈরি হয়েছে। এরা সারাজীবন আই-হেইট-পলিটিক্স করে এসেছে! এখন এনজিওগ্রাম সরকারকে সব রোগের মহৌষধ হিসেবে গণ্য করছে! এরাই একেকজন বিরাট সংস্কারক সেজে রাজনীতির ওপর ছড়ি ঘোরাচ্ছে! অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, এরা শুধু রাজনীতি নয়, আমাদের ধর্মনীতি, দাম্পত্যনীতি সবকিছু ওলট-পালট করতে চাচ্ছে । কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছে আমাদের বোধ-বিশ্বাসকে! এরা শুধু রাজনীতির ৫৩ বছর নিয়েই প্রশ্ন করেনি, ধর্মনীতির ১ হাজার ৫০০ বছর নিয়েও প্রশ্ন করার আস্পর্ধা দেখিয়েছে।
 
ওয়ারিশ বণ্টনসহ সামগ্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা একটা প্যাকেজের মতো। এর সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে পারিবারিক মূল্যবোধ, ঐতিহ্য ও সামাজিক শৃঙ্খলা। এখানে যেমন পাশ্চাত্য প্যাকেজ রয়েছে, তেমনি ইসলামি প্যাকেজও রয়েছে। পাশ্চাত্য প্যাকেজ এখানে চরমভাবে নিষ্ঠুর ও স্বার্থপর। ১৮ বছর বয়েস হলেই পুত্র-কন্যাকে বাবা-মা নিজের মতো ছেড়ে দেয়। সেই সমাজে যার যার খরচ তার তার ওপর। একজন আরেকজনের ওপর নির্ভরশীল নয়। কাজেই এখানে ন্যায্য বণ্টন হলো সমান সমান। কিন্তু ইসলামি সমাজ ভিন্ন! এখানে মেয়েদের পরিবারের দায়িত্ব তো নিতেই হয় না, বরং নিজের খোরপোশের দায়িত্বও স্বামীর ওপর বর্তায়। ফলে এখানে ন্যায্য বণ্টন হলো ২:১। এদেশে শেকড়ছিন্ন একটি বিশেষ প্রজাতি রয়েছে। এদের শরীরটি এদেশে থাকলেও মনটি থাকে বাইরে কোথাও।
 
এদের হাতে সোপর্দ করেছি আমাদের সংস্কারের দায়িত্ব। আমরা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাবো, আর এই গোষ্ঠীটি করবে আমাদের সংস্কার! এদের বিরুদ্ধে টুঁ শব্দ করলেও তা হবে কবিরা গুনাহ সমতুল্য।
 
দুই
ফ্যাসিবাদের পতনের পর আমাদের মূলধারার মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ার মূল সংবাদ হওয়া উচিত ছিল শেখ হাসিনা ও তার অলিগার্কদের মহা লুটপাটের উপাখ্যানগুলো। কিন্তু অবাক করার বিষয় হলো, এসব আমাদের স্মৃতি থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে! ওপরে বর্ণিত বিচারক মোতাহার হোসেন ও সুখরঞ্জন বালীর করুণ কাহিনি ও বীরত্বগাথাগুলো জাতির সম্মুখে নিয়ে আসা দরকার ছিল! আমাদের বিরাট বিরাট মাওলানারা যখন যুগের দাজ্জালের সামান্য উপঢৌকন বা মাদরাসার সামান্য জমির বিনিময়ে নিজেদের ঈমান বিকিয়ে দিয়েছিলেন, তখন সুখরঞ্জন বালী ঈমানের এক পরাকাষ্ঠা দেখিয়েছেন। এই দাজ্জালকে সনাতন ধর্মের এক অশিক্ষিত মানুষ যেভাবে চিনতে পেরেছিলেন, ইসলাম ধর্মের বড় বড় মুফতি-মওলানারা তা পারেননি। আজকে দরকার ছিল এ রকম অসংখ্য বিষয়কে মূলধারার মিডিয়া ও সামাজিক মিডিয়ায় নিয়ে আসা। কিন্তু আমরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছি অন্য জায়গায় ভিন্ন কিছু নিয়ে।
 
এখন আমাদের মূল মিডিয়া ও সোশ্যাল মিডিয়ায় তাবৎ জাতীয়তাবাদী ও ইসলামি মগজ এনগেজড হয়ে পড়েছে যথাক্রমে আল বটর বাহিনী ও টেম্পোস্ট্যান্ডের কাহিনি নিয়ে। এই দুই শক্তির এই কাইজ্জায় কারা হাওয়া দিচ্ছে, তা সহজেই অনুমেয়।
সাম্প্রতিক সন্তোষ শর্মাকে নিয়ে যে বিব্রতকর ঘটনা জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে ঘটেছে, তাকে পারস্পরিক লজ্জা কাটাকাটির বিষয় হিসেবে না নিয়ে আরো গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করা উচিত! কারণ জামায়াত যাকে নিজেদের মঞ্চে তুলে অত্যন্ত গর্হিত কাজ করেছে বলে বিএনপির অনেক সুহৃদ ফেসবুক মাত করছেন, সেই তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপস্থিতিতে অন্য এক সভায় হাজির হয়ে তারেক রহমানের গুণকীর্তন করেছেন। শুধু ক্ষণিকের দেখা নয়, আরো হৃদয়বিদারক খবর হলো, সন্তোষ শর্মা যে পত্রিকার সম্পাদক তার নতুন প্রকাশক হলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের খুবই কাছের এক মানুষ!
 
তবে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কেউ কেউ যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছেন, সেটাকেও খুব স্বাস্থ্যকর বলে ঠেকছে না।
 
হাসিনা নামক দানবের হাত থেকে দেশ ও জাতিকে উদ্ধারে সোশ্যাল মিডিয়া এক গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। সেই সোশ্যাল মিডিয়া ধীরে ধীরে বিএনপি ও জামায়াত উভয়ের জন্যই মহা যন্ত্রণাদায়ক বস্তু হয়ে পড়ছে। দুটি দলই সোশ্যাল মিডিয়াকে ইগনোর করে কিংবা মিসহ্যান্ডলিং করে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে।
 
সোশ্যাল মিডিয়া হয়ে পড়েছে অনেকটা সৈয়দ মুজতবা আলীর সেই বিখ্যাত গল্পের গৃহভৃত্য আবদুর রহমানের মতো। সুঠামদেহী আবদুর রহমানকে নিজের গৃহভৃত্য হিসেবে পেয়ে বিদেশ-বিভুঁইয়ে নিজের নিরাপত্তা নিয়ে লেখক যেমন আশ্বস্ত হলেন, তেমনি এক আশঙ্কাও মনে জাগল। অগত্যা কোনো কারণে যদি এই ভৃত্য মনিবের ওপর নাখোশ হয়ে পড়ে, তখন তাকে কে উদ্ধার করবে? কথাটিকে তিনি একটু রস লাগিয়ে বলেছিলেন, ‘কুইনাইন খেলে জ্বর সারবে বটে, কিন্তু কুইনাইন সারাবে কে?’
 
সোশ্যাল মিডিয়া বিএনপি ও জামায়াত উভয়ের জন্যই ম্যালেরিয়ার প্রতিষেধক কুইনাইনের মতো হয়ে পড়েছে। এই কুইনাইন হাসিনার মতো ম্যালেরিয়ার হাত থেকে বিএনপি ও জামায়াতকে বাঁচিয়েছে। এখন এই কুইনাইনের হাত থেকে বাঁচার কৌশল ও কার্যকর উপায় তাদের বের করতে হবে।
 
সামনে যেই দলই সরকার গঠন করুক না কেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা সিটিজেন জার্নালিজমের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি শক্তিশালী গবেষণা সেল গঠন করা তাদের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। এই গবেষণা সেল হতে হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও মুক্ত ‘চিত্ত যেথা ভয়শূন্য’ টাইপের! টপ নেতৃত্বের পছন্দের বা আরামের জিনিসগুলোই এরা পরিবেশন করবে না। বরং এই সেল সংশ্লিষ্ট বিষয়ের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ, জনমত যাচাই, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট মূল্যায়ন ও বাস্তবসম্মত নীতিপ্রস্তাব তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আবেগ বা তাৎক্ষণিক চাপ কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিক ফ্যাশনে তাড়িত হয়ে নয়, বরং তথ্যনির্ভর ও কৌশলগত চিন্তার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণই একটি দলের দীর্ঘমেয়াদি সফলতা নিশ্চিত করতে পারে। তাই সময় এসেছে বিএনপি ও জামায়াতের মতো দলগুলোয় শক্তিশালী গবেষণা সেল গঠন করে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হওয়ার। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা থেকে মনে হচ্ছে, তা না হলে দুটো দলই মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। শাহজাহানপুরের মির্জা আব্বাস কিংবা কিশোরগঞ্জের ফজলুদের মতো অত্যন্ত গরম নেতাদের দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াকে বাগ মানাতে চাইলে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যেতে পারে।
 
তিন
ড. ইউনূস কি জাতির পরিত্রাণদাতা নাকি পেইন কিলার?
ড. ইউনূস নিঃসন্দেহে এ মুহূর্তে আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। তাই বলে তাকে ছাড়া আমরা কি টিকতে পারব না?
স্থায়ী ও টেকসই প্রতিরক্ষা পলিসি তৈরির পরিবর্তে একটা আবেগি আত্মতৃপ্তিবোধে জাতিকে ডুবিয়ে রাখা হচ্ছে।
বিষয়টি আরেকটু খোলাসা করছি। কার্যকর প্রতিরক্ষা ও জিও-পলিটিক্যাল কৌশল বাদ দিয়ে ‘ইন্ডিয়াকে মোকাবিলায় আমাদের ইউনূস আছে’ এরকম একটা মিথ্যা নিরাপত্তাবোধ (False Sense of Security) দেওয়ার চেষ্টা চলছে। তারা ভুলে যাচ্ছেন যে এই দুনিয়ায় কেউ ইনডিসপেন্সিবল নন। এমনকি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর এই জাতি টিকে ছিল, টিকে থাকতে হয়েছিল ।
 
এই কিছিমের রোমান্টিক চিন্তা বাদ দিয়ে আমার দেশ সম্পাদক মহোদয়ের প্রস্তাবিত বাধ্যতামূলক সামরিক ট্রেনিংয়ের বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। এখানেও কিছু ঝুঁকি রয়েছে। তাই সবাইকে এই ট্রেনিংয়ের আওতায় না এনে কিছু সিলেক্টিভ পন্থায় এক বা দুই কোটি রিজার্ভ সৈন্য রাখার পরিকল্পনা নেওয়া যেতে পারে।
 
বাংলাদেশের বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে ক্লাস টুয়ের বাচ্চাকে যদি জিজ্ঞেস করেন ‘এখন আমাদের করণীয় কী,’ তা হলে সেই দুধের বাচ্চা যতটুকু সঠিকভাবে আপনাকে করণীয়টি বলে দেবে, তা বুঝতে অক্ষম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যারা বসেছেন তারা।
 
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে যিনি নিয়োগ পেয়েছেন, সেই ভদ্রলোকের চেহারা-সুরত মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবিরের থেকে পুরাপুরি ভিন্ন হলেও ভেতরের মাল হুবহু একই। জসিম নামের এই ভদ্রলোক শেখ হাসিনাকে অনেক সেবা দিয়ে এখন ড. ইউনূসকেও অনেক সেবা দিচ্ছেন!
 
তিনি হঠাৎ আওয়ামী চেতনায় চেতনায়িত হয়ে পাকিস্তানের কাছে ’৭১ সালের পাওনা চেয়েছেন। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতায় যখন পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন জরুরি হয়ে পড়েছে, সে সময় এ রকম একটা ডিপ্লোমেটিক ব্লান্ডার করার পরেও বহাল তবিয়তে চেয়ারে বসে আছে। এই জসিমের মতো অনেক জসিম ড. ইউনূসের আশেপাশে রয়েছে!
 
দেশের পলিটিশিয়ানরা চেনাজানা শয়তান (Known devil) হলে বিদেশি খুদ-কুঁড়ায় বেড়ে ওঠা এসব এনজিওরা অজানা-অচেনা শয়তান (Unknown devil), তাই আমি থামবস রুলে ফিরে যাই—‘দেশ চালাতে হবে রাজনীতি দিয়ে, এনজিও দিয়ে নয়।’
 
যে দেশে নীতির রাজা রাজনীতিতে শয়তানরা ঢুকতে পারে, সেই দেশে বিদেশি শক্তির পুতুল হিসেবে স্বীকৃত এনজিওতে এরা ঢুকবে না, তার কোনো গ্যারান্টি নেই।