কাঁদছে ফিলিস্তিনিরা, মুসলিম নেতারা হাসছেন!
দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডবে প্রতিদিন ঝরছে হাজারো ফিলিস্তিনির প্রাণ। ইসরায়েলের নির্বিচার বিমান হামলায় স্বজন হারিয়ে, সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব ফিলিস্তিনিরা কাঁদছে। অন্যদিকে হাসছেন মুসলিম নেতারা। ইসরায়েলের বর্বর হামলা থামানোর লক্ষ্যে শনিবার (১১ নভেম্বর) সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে জড়ো হন মুসলিম দেশগুলোর নেতারা। সম্মেলনে মুসলিম নেতাদের একে-অপরের সঙ্গে হাসাহাসি করতে দেখা গেছে। গাজায় মানবিক বিপর্যয় নিয়ে কথা বলতে জড়ো হলেও; তাদের মুখে লেগেছিল হাসি! আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত কয়েকটি ছবিতে দেখা গেছে এমন চিত্র।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও এএফপির প্রকাশিত দুটি ছবির মধ্যে একটিতে দেখা গেছে, কাতারের আমির ও ইরানের প্রেসিডেন্ট কিছু একটা বলে হাসছেন। ওই সময় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের মুখেও মুচকি হাসি দেখা যায়। অপর ছবিতে দেখা যাচ্ছে, মিসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ এল-সিসি হাসছেন। তার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা সৌদির ক্রাউন প্রিন্স কোনো এক নেতাকে হাত বাড়িয়ে সম্মেলন মঞ্চে গ্রহণ করে নিচ্ছেন।
শনিবারের এই সম্মেলনে ইসরায়েলের নিন্দা জানানো ছাড়া তেমন বড় কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নিষ্ঠুর হামলার নিন্দা জানিয়েছেন আরব ও মুসলিম দেশগুলোর নেতারা। একই সঙ্গে তারা গাজায় দ্রুত যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। তবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি তারা।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাত নিয়ে শনিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে জরুরি সম্মেলনে বসেন আরব লিগ (২২ সদস্যদেশ) ও ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য (৫৭) দেশের নেতারা। গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা ঘিরে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া ক্ষোভের মধ্যে এ জরুরি সম্মেলন আহ্বান করা হয়।
কয়েকজন আরব কূটনীতিকের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, সম্মেলনে আলজেরিয়া, লেবাননসহ কয়েকটি দেশ ইসরায়েলসহ এর মিত্রদের জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধে হুমকি প্রদানের প্রস্তাব দেয়। একই সঙ্গে ইসরায়েলের সঙ্গে আরব লিগের যেসব দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে, তা ছিন্ন করার প্রস্তাব দেয় তারা। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইনসহ অন্তত তিনটি দেশ এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে মত দেওয়ায় তা বাতিল করা হয়। সম্মেলন শুধু ইসরায়েলের নিন্দা ও পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনার মাধ্যমেই শেষ হয়।
মুসলিম নেতারা সম্মেলনে হাসাহাসি করলেও ইসরায়েলের পক্ষ নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র জন কিরবি হামাসের হামলায় নিহত ইসরায়েলিদের কথা বলতে গিয়ে ক্যামেরার সামনে কেঁদেছিলেন।