র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পর বাংলাদেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের ঘটনা নাটকীয়ভাবে কমেছে; বলছে মার্কিন মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)। এই বাস্তবতাকে উদাহরণ হিসেবে টেনে সংস্থাটি মন্তব্য করেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষমতার অপব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনার সক্ষমতা রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সরকারের প্ররোচনায় মানবাধিকারকর্মী ও গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের হুমকি দিচ্ছেন ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। বৃহস্পতিবার এইচআরডব্লিউর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দফতর। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠান হিসেবে র্যাবের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এইচআরডব্লিউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়েছেন। তাদের পরিবারের সদস্যকে গুম করা হয়নি মর্মে জোর করে মিথ্যা বিবৃতিতে স্বাক্ষরও করিয়ে নিয়েছেন। এইচআরডব্লিউ বলছে, বিদেশে বসে যেসব বাংলাদেশি কথিত রাষ্ট্রবিরোধী কাজ করছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের একটি তালিকা তৈরি করেছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থান করা ভিন্নমতের ওই ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য যারা বাংলাদেশে রয়েছেন, তাদের লক্ষ্য করে হয়রানি করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের মানবাধিকারকর্মী ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নজরদারি ও হয়রানি বাড়িয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় সরকারের সমালোচনাকারীদের গ্রেফতার চলছে বলে জানিয়েছে এইচআরডব্লিউ। সংস্থাটির ভাষ্য মতে, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই আইন সংস্কার ও স্থগিতের আহ্বান জানানো হলেও তা আমলে নেয়নি বাংলাদেশ সরকার। এ ছাড়া গত জুলাইয়ে সরকার তথ্য সুরক্ষা আইনের খসড়া প্রকাশ করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আইনের মাধ্যমে নজরদারি আরও বাড়াতে পারে এবং গোপনীয়তার অধিকার লঙ্ঘন করতে পারে।