নিলাম তালিকায় কোটি টাকার ওপরে ওপেনার নাঈম শেখকে নিয়ে আলোচনায় আসে চট্টগ্রাম রয়্যালস। কিন্তু হাবিবুল বাশার সুমনের মেন্টরের পদ থেকে সরে যাওয়া, ক্লাব ক্রিকেটে বিতর্কিত আমিন খানের সংশ্লিষ্টতা– সব কিছু নিয়ে কিছুটা অগোছালো দেখা গেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটিকে।
সব দল যেখানে কোচ ও অধিনায়কের নাম ঘোষণা দিয়েছে, সেখানে চট্টগ্রামের পক্ষ থেকে অধিনায়কের নাম আসেনি। বিদেশি একজন কোচের নাম শোনা গেলেও তাঁর আসাটা অনিশ্চিত। তার পরও নিজেদের কিছুটা গুছিয়ে নিয়েছে দলটি। সবার শেষে হলেও গতকাল সিলেটে অনুশীলন করেছে তারা। খেলোয়াড়দের সাজপোশাক দেখে বোঝার উপায় নেই কিছুদিন আগেও বিতর্ক গ্রাস করেছিল তাদের। বিসিবি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের শক্ত অবস্থানের কারণে অনেকটাই গুছিয়ে নিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি।
চট্টগ্রাম দলে প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করছেন মমিনুল হক। ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিতর্কিত কর্মকর্তা আমিন খান তাঁর নিয়োগে ভূমিকা রাখায় সন্দেহের তীর ছুটে গেছে ফ্র্যাঞ্চাইজির দিকে। মালিক পক্ষের সঙ্গেও আমিন খানকে রেস্তোরাঁয় দেখা গেছে। এই বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে দলের অন্দর ও বাহিরে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল বিষগুলোকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে চট্টগ্রামের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক পক্ষকে সতর্ক করায় এবং ইন্টিগ্রিটি ইস্যুতে শূন্য ছাড়ের হুমকি দেওয়ায় কোচিং ও টিম অফিসিয়াল সতর্ক হয়েছে। ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে হাবিবুল বাশার মেন্টরের পদ ছেড়ে দেওয়ার পর বিতর্কের আগুনে ঘি পড়ে। বাশারের জায়গায় জাতীয় দলের সাবেক ব্যাটার তুষার ইমরানকে মেন্টর ও ব্যাটিং পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রশংসিত হয়েছে দলটি।
বিদেশি কোচ নিয়োগেরও উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার জাস্টিন কেম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে মালিকপক্ষ। যদিও টুর্নামেন্টের প্রথম থেকে তাঁকে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তুষার ইমরান বলেন, ‘জাস্টিন বর্তমানে কোনো একটি দলের সঙ্গে আছেন। সম্ভবত সময় দিতে পারবেন না। আমার জানা নেই কবে আসবেন তিনি।’ ম্যানেজার লাবলুর রহমানও জানেন না বিদেশি কোচের নিয়োগ সম্পর্কে।
এই বিপিএলে নিলাম থেকে সবচেয়ে বেশি এক কোটি ১০ লাখ টাকায় ওপেনার নাঈম শেখকে দলে নিয়েছে চট্টগ্রাম। শেখ মেহেদীকে সরাসরি দলে নিয়েছে তারা। নিয়েছে বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম, আরাফাত সানি, পেসার শরিফুল ইসলাম, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ, আবু হায়দার রনি ও সুমন খানকে। শুভাগত হোম, সালমান হোসেনসহ বেশ কয়েকজন অলরাউন্ডার আছে তাদের। দেশি ক্যাটেগরিতে দারুণ সব খেলোয়াড় নিয়েছে চট্টগ্রাম।
তবে পিছিয়ে পড়েছে বিদেশি ক্রিকেটার সংগ্রহে। নিলাম থেকে ভিত্তি মূল্যে দলে নেওয়া পল স্টারলিং বিপিএল থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। নিরোশান ডিকওয়েলা জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায় ছাড়পত্র পাচ্ছেন না। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ক্যাম্পে থাকা লেগ স্পিনার আবরার আহমেদেরও খেলা হবে না। সরাসরি সাইনিং ক্রিকেটার ছিলেন তিনি। তবে বিকল্প বিদেশি ক্রিকেটার নিয়ে মাঠে নামতে চায় তারা।
ম্যানেজার লাবলুর রহমান বলেন, ‘প্রথম এক-দুই ম্যাচে দুই বা তিন বিদেশি খেলাতে হতে পারে। আইএল টি২০ শেষ হলে ভালো মানের ক্রিকেটার পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন বিদেশির সঙ্গে কথা হয়েছে। আশা করি, দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ একটি দল পাওয়া সম্ভব হবে।’ চট্টগ্রাম রয়্যালসের ম্যানেজমেন্ট আশা করে লিগের খেলা শুরু হলেই পেছনের বিতর্ক চাপা দেওয়া সম্ভব হবে।