Image description

দেখতে দেখতে এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার নিজেদের মাটিতে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে গৌহাটি টেস্টে হেরে ভারত যখন সমালোচনার ঘূর্ণিতে, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন এবার হয়তো কাঁপবে নির্বাচক–দল ব্যবস্থাপনার চেয়ার। কিন্তু বিসিসিআই জানিয়েছে—তা নয়। বরং পুরো পরিস্থিতি ধীরে-সুস্থে বিশ্লেষণ করেই সামনে এগোবে বোর্ড।

 

 

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হার ভারতের। এর আগে গত ১২ মাসে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও টেস্ট সিরিজ হার দেখেছে গিল-বুমরাহরা। যদিও এই সময়ের মধ্যেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ জয় এবং সাদা বলের ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও এশিয়া কাপের সাফল্য রয়েছে, তবুও সাম্প্রতিক ধারাবাহিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলে।

 

 

 

সিরিজ শেষে প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরকে প্রশ্ন করা হয়—টেস্ট দলের কোচ হিসেবে নিজেকে যোগ্য মনে করেন কি না? গম্ভীর উত্তর দেন, বোর্ড চাইলে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এরপরই বিসিসিআইর একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়ে দেন, এখনই কোনো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই।

 

 

 

তিনি বলেন, ‘দল এখন পরিবর্তনের পর্যায়ে আছে। বিশ্বকাপ সামনে, আর গম্ভীরের চুক্তি ২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। তাই কোনো তাৎক্ষণিক পরিবর্তন নয়। নির্বাচক ও টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে আলোচনা হবে, কিন্তু হঠাৎ কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না বোর্ড।’

 

 

 

দুই ম্যাচেই ভারতের ব্যাটিং ভেঙে পড়া ছিল নজরকাড়া। বিশেষ করে দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে ৯৫/১ থেকে ১২০/৭—এই ধসই মূলত ম্যাচ ও সিরিজ হাতছাড়া করিয়েছে। স্পিন সহায়ক উইকেটে খেলতে চাইলেও প্রতিপক্ষের এক পেসার একই ধাপে চার উইকেট তুলে নেন। কোথাও যেন প্রযুক্তিগত দুর্বলতা ও মানসিক ভঙ্গুরতা পরিষ্কার হয়ে যায়।

 

 

 

ওয়াশিংটন সুন্দরকে ব্যাটিং অর্ডারে তুলে আনা, আবার অন্য অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের স্থায়ী জায়গায় না রাখা—এসব নিয়েও ওঠে সমালোচনা। দীর্ঘ ব্যাটিং লাইন থাকা সত্ত্বেও দুই টেস্টে ভারতের একটি সেঞ্চুরিও নেই।

 

 

গম্ভীর ম্যাচ শেষে বলেন, ‘এই ড্রেসিং রুমে থাকা প্রত্যেকেই দায়ী, আমিও। এখানে কোনো একক দায়ের জায়গা নেই। দলগত খেলায় সবাইকেই দায়িত্ব নিতে হবে।’

 

 

সেই সঙ্গে তিনি বারবার তরুণ দল, পরিবর্তনের সময় এবং ঠাসা সূচির কথাও উল্লেখ করেন।

 

 

বিসিসিআই বড় ধরনের পরিবর্তন না করলেও সিরিজ–পরবর্তী সময়ে দল ব্যবস্থাপনা ও নির্বাচকদের নিয়ে একটি অভ্যন্তরীণ বৈঠক ডাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যেখানে আগামী মাসগুলোতে কোন পথে এগোবে ভারতীয় টেস্ট দল—সেই আলোচনা হবে।

 

 

ঘরোয়া মাটিতে টানা হোয়াইটওয়াশ নিঃসন্দেহে ভারতের জন্য অস্বস্তিকর। তবুও বোর্ডের বিশ্বাস—এই দলকে সময় দিতে হবে, এবং তাড়াহুড়ো কোনো সিদ্ধান্ত কেবল আরও ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।

 

 

প্রশ্ন এখন একটাই—এই ‘পরিবর্তনের সময়’ কতদিন চলবে, আর কখন আবার পুরোনো আধিপত্যে ফিরবে ভারত?