Image description

২০০৩ সালের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেই ঐতিহাসিক সেমিফাইনালের পর কেটেছে দীর্ঘ দুই দশক! এরপর থেকেই ভারতের বিপক্ষে অধরা জয়ের খোঁজে ছিল বাংলাদেশ। অবশেষে সেই জাতীয় স্টেডিয়ামেই এসেছে প্রত্যাশিত জয়।

এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের উত্তপ্ত লড়াইয়ের এক ম্যাচে শেখ মোরছালিনের নিখুঁত ফিনিশিংয়ে যেন এক নতুন ইতিহাস লিখে লাল-সবুজেরা। সেই এক গোলই শেষ পর্যন্ত লাল–সবুজ শিবিরকে এনে দেয় অলিখিত শিরোপায় মোড়ানো প্রাপ্তি।

তবে এমন জয়োৎসবের দিনেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিন্ন এক আলোচনায় মেতেছিলেন লাল-সবুজের ক্রীড়াপ্রেমীরা। মাঠের লড়াই ছাপিয়ে মূলত ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন ঘোষকে ঘিরে জমে থাকা অতীত ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেটিজেনরা। অবশ্য, ময়ূখও কৌশলে সেই জবাব দিয়েছেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশকে সাধুবাদ জানিয়ে মাঠের লড়াই মাঠেই রাখার আহ্বান জানান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া ময়ূখ রঞ্জনের সেই পোস্ট দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:

ঘুম থেকে উঠে বাংলাদেশের জনপ্রিয় একাত্তর টিভির খেলার পেজে দেখলাম আমাকে নিয়ে পোস্টার হয়েছে। শিরোনাম দেওয়া হয়েছে- “প্রিয় দাদার মুখে কুলুপ!” সত্যিই তো মুখে কুলুপ! ফেক নিউজ করেনি।

আমার যখন ৫ বছর বয়স ছিল তখনও ভারতীয় ফুটবলের এই হাল দেখতাম। ১৫ বছর বয়সেও। আজ ৩৫! আজও এক হাল।

এত বড় দেশ, এতগুলো ওয়ার্ল্ডকাপ, ১৪০ কোটি মানুষ একটাকা করে দিলেও বিপুল ফান্ড আসবে। উৎসাহের কোন ঘাটতি নেই। আমাদের হয়ে ১১ জন লুডো বা ডাংগুলি খেললেও লক্ষ লক্ষ ফ্যান চিয়ার করতে চলে আসবে মাঠে। তবে? ইচ্ছাকৃত খেলা টা depreciate করে রাখা হচ্ছে? সরকার, প্রশাসক, টিম ও ফ্যানদের এবার সিরিয়াস ভাবা উচিত! রোগটা কি!

তবে ডিয়ার বাংলাদেশ, একটা জিনিস ঠিক বলেছো। “প্রিয় দাদার মুখে কুলুপ!” হ্যাঁ! আমার দেশের ছেলেগুলো পারেনি খেলতে। ১০০ টা পরাজয় এলেও আমি বা আমরা দেশকে বা টিমকে গাল দেবো না। ওদের মনোবল ভেঙে দেবো না আরও।

আমাদের বাচ্চাগুলো তিরঙ্গার হয়ে খেলছিল। ওটাই সবচেয়ে বড় কথা। আর আমাদের কোন খেলোয়াড় হেরে যাওয়ার জন্য মাঠে নামে না। গলদ আছে আমাদের ব্যাকঅফিসে। ওটা আমরা ঠিক করবই।

আবার বলছি। দেশ আজ খারাপ খেলেছে। কিন্তু দেশকে গাল দেওয়া আমাদের কালচার না। দাদার মুখে কুলুপ থাকবেই ভাতিজা! আমরা গণভবনের সম্পত্তি নষ্ট করিনা, দেশের প্রধানের অন্তর্বাস ট্রফির মতো নিয়ে রাস্তায় মিছিল করিনা।

তবে একটা জিনিস করি। সব দুঃখের দাওয়াই। গোটা স্টেডিয়াম যখন চিৎকার করে ওঠে, ‘হু হা ইন্ডিয়া- আয়া ইন্ডিয়া’ সব রাগ ভুলে আবার আশায় বুক বাঁধি। ভারতীয় ফুটবল ঘুরে দাঁড়াবেই কিন্তু তার আগে ফুল বডি চেকআপ লাগবে। রোগ মাঠে না রোগ শরীরেই।

Well played বাংলাদেশ। যুদ্ধটা খেলার মাঠেই থাক। ময়দানেই আমাগো - তোমাগো এই রেষারেষিটুকুই থাক। ভারত বিরোধিতা সীমান্তে এনো না। ২০ গোল খাবা। ওখানে কিন্তু precision strike আর স্ট্রাইকারের নামগুলিও জানো তোমরা। —— ময়ূখ রঞ্জন ঘোষ

উল্লেখ্য, ভারতীয় গণমাধ্যম রিপাবলিক বাংলার সাংবাদিক ময়ূখ রঞ্জন তার কর্মকাণ্ডের কারণে বিতর্কিত। বাংলাদেশ থাকবে না, দখল হবে চট্টগ্রাম এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসকে নিয়েও এমন সব উদ্ভট বক্তব্যের জন্য তিনি বাংলাদেশে ব্যাপক সমালোচিত। আবার তার অঙ্গভঙ্গি ও চিৎকার-চেঁচামেচির কারণে দর্শকরাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ উপভোগ করেন তাকে। তবে সম্প্রতি রিপাবলিক বাংলায় তার টক শোতে বাংলাদেশের রাজনীতিবিদসহ নানা পেশার লোকজন অংশ নিচ্ছেন। সেখানেও হাসি, বিতর্কিত তথ্য নিয়ে সরব ময়ূখ।