Image description

নানা বিতর্ক, নাটকীয়তা আর আইনি লড়াই পেরিয়ে শেষ হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচন। নির্বাচন শেষে নতুন পরিচালনা পর্ষদ আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব নিলেও বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না। এবার বহুল প্রত্যাশিত এই নির্বাচনের ওপর আঙুল তুললেন জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক। তার দাবি, ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সরাসরি হস্তক্ষেপে আমিনুল ইসলাম বুলবুল সভাপতি নির্বাচিত হন। একইসঙ্গে কাউন্সিলরদের হুমকির অভিযোগও সামনে আনেন সাফজয়ী এই ফুটবলার।

মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) জিয়া আন্তভলিবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ নিয়ে আমিনুল হক বলেছেন, ‘বিসিবি নির্বাচন নিয়ে প্রধান উদ্বেগ হলো সরকারি হস্তক্ষেপ এবং ক্রীড়া উপদেষ্টার সরাসরি হস্তক্ষেপ। তাঁর হস্তক্ষেপের প্রতিটি ঘটনার প্রমাণ রয়েছে। আমি শুনে অবাক হয়েছি যে ক্রীড়া উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন কাউন্সিলরকে হুমকি দিয়েছেন, নির্বাচনে ভোট দেওয়ার জন্য তাঁদের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন। অনেক কাউন্সিলর আমাকে ফোন করে বলেছেন যে তাঁদের ডেকে নিয়ে এভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে 'নির্বাচন আগে থেকেই ফিক্সড' অভিযোগ তুলে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছিলেন সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালসহ ১৬ জন প্রার্থী। তাদের অভিযোগেও সরকারি হস্তক্ষেপ এবং কাউন্সিলর মনোনয়নে অনিয়মের প্রসঙ্গও এসেছিল। বুলবুলের পাঠানো একটি চিঠির বৈধতা প্রসঙ্গে বিষয়টি আদালতেও গড়ায়। এই চিঠি নিয়ে বিএনপির এই নেতাও প্রশ্ন তুললেন।

এ নিয়ে আমিনুল হক বলেন, ‘বুলবুল ভাইয়ের (আমিনুল ইসলাম) যে চিঠিটি জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠকরা রিট করে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন, তার ফলে একটি আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে গেলেও, আদালত রায় দিয়েছেন যে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির পর একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর অর্থ হলো, যদি হাইকোর্ট চিঠিটিকে অবৈধ ঘোষণা করে, তবে ইতিমধ্যে নির্বাচিত সদস্যদের থাকা সত্ত্বেও পুরো নির্বাচনব্যবস্থাও বাতিল হয়ে যেতে পারে।’

বিসিবি নির্বাচনে এতদিন নানা বিতর্ক থাকলেও আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে স্পষ্ট কোনো অভিযোগ ছিল না। তবে এবার আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ভোট কেনার অভিযোগও তুললেন সাবেক এই ফুটবলার।

 

তিনি বলেন, ‘আমার কাছে তথ্য আছে যে আর্থিক লেনদেনও হয়েছে। এটি অত্যন্ত পীড়াদায়ক যে বোর্ড পরিচালকেরা আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে নির্বাচিত হতে পারেন। এটি তাঁদের হাতে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি বিশাল সন্দেহ তৈরি করে। আমি মনে করি পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাপনা এবং এই প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী বা ক্রীড়া সংগঠকেরা স্বাভাবিকভাবে মেনে নেবেন না।’

এদিকে নির্বাচনের ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই বোর্ড মিটিংয়ে বসেছিলেন পরিচালকরা। যেখানে পরিচালকদের মাঝে বিভিন্ন কমিটির দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে বিতর্ক-নাটকীয়তার অধ্যায় পেরিয়ে দেশের ক্রিকেটের কল্যাণে নির্বাচিত পরিচালকরা কাজ করবেন, এমনটাই প্রত্যাশা ক্রীড়াপ্রেমীদের।