Image description

বিশ্বকাপের শুরুতেও চেলসির স্কোয়াডে ছিলেন না, এমনকি নকআউট পর্বের শুরুতেও নয়। জোয়াও পেদ্রো চেলসিতে যোগ দিয়েছেন এক সপ্তাহও হয়নি। ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ড লন্ডনের ক্লাবটিতে দ্বিতীয় বারের মতো নেমেছিলেন, আর তাতেই করলেন বাজিমাত। তাও আবার নিজের সাবেক ক্লাব ফ্লুমিনেন্সের বিপক্ষে। তার জোড়া গোলে ২-০ ব্যবধানে ব্রাজিলের ক্লাবটির স্বপ্ন ধূলিসাৎ করে ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে চলে গেছে ২০২১ সালের চ্যাম্পিয়ন চেলসি।

ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপে ইউরোপের বাইরে কাপ গিয়েছিল সেই ২০১২ সালে। সেবারও ফাইনালে ছিল চেলসি। দলটাকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল ব্রাজিলের করিন্থিয়ান্স। তবে গেল রাতে ফ্লুমিনেন্সের বিদায়ে নিশ্চিত হয়ে গেল, টানা ১৩তম বারের মতো কোনো ইউরোপিয়ান ক্লাবই জিততে চলল এই বিশ্বকাপ। এদিক থেকে চেলসি তো উঠেই গেছে ফাইনালে, দ্বিতীয় সেমিফাইনালের দল দুটিও যে ইউরোপিয়ানই।

 

নিউইয়র্কের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে চেলসিকে ম্যাচের ১৮ মিনিটে এগিয়ে দেন পেদ্রো। বক্সের বাম পাশে বল পেয়ে বিপদসীমার একটু সামনে থেকে ডান পায়ের বাঁকানো শট নেন। সেটা ফ্লুমিনেন্স রক্ষণ তো বটেই, গোলরক্ষককেও ফাঁকি দিয়ে গিয়ে জড়ায় জালে।

হাজার হোক, নিজের শৈশবের ক্লাব ফ্লুমিনেন্স। এখানেই তার ফুটবলার সত্ত্বার ‘জন্ম’, বেড়ে ওঠা। সেই ক্লাবের বিপক্ষে গোল করে দু’হাত ওপরে তুলে ধরেন তিনি, আসামীদের মতো করে, যেন ভুল করে বসেছেন। কোনো উদযাপনেও যাননি পেদ্রো। 

 

সে গোলটা খেয়ে ম্যাচে ফেরার মরিয়া চেষ্টাই করেছে ফ্লুমিনেন্স। ২৫ মিনিটে এরকুলেসের শটটা যাচ্ছিল গোলমুখেই, তবে গোললাইন থেকে বলটা বিপদমুক্ত করে চেলসির লিড রক্ষা করেন স্প্যানিশ ডিফেন্ডার মার্ক কুকুরেয়া। 

এর মিনিট দশেক পর পেনাল্টিই পেয়ে গিয়েছিল ফ্লুমিনেন্স। রেনের সেটপিস গিয়ে লাগে চেলসির ডিফেন্ডার ট্রেভর চালোবাহর হাতে। তবে ভিএআর দেখে গিয়ে পেনাল্টি বাতিল করেন রেফারি। ফলে প্রথমার্ধে আর সমতা ফেরানো হয়নি ব্রাজিলিয়ান ক্লাবটির।

 

ম্যাচে দলটার ফেরার যত পথ ছিল, সব বন্ধ হয়ে যায় পেদ্রোর দ্বিতীয় গোলে। অধিনায়ক এনজো ফের্নান্দেজের পাস থেকে বল পেয়ে দারুণ এক গোল করেন পেদ্রো। ফলে ২-০ গোলের দারুণ জয় নিয়ে আরও একবার ফাইনালে চলে যায় চেলসি।

দলটার জন্য বিশ্বকাপের ফাইনাল নতুন কিছু নয় অবশ্য। এর আগেও দুই বার তারা খেলেছে এই মঞ্চে। ২০১২ সালে করিন্থিয়ান্সের কাছে হারতে হয়েছিল তাদের। তবে ২০২১ আসরের ফাইনালে পালমেইরাসকে হারিয়ে তারা শিরোপার আক্ষেপটা ঘোচায়। 

 

 

তবে চলতি মৌসুমের বিষয়টা আলাদা। ঘরোয়া লিগে মৌসুমটা আদৌ ভালো কাটেনি, দেশের মাটিতে অন্য দুই টুর্নামেন্টেও বাদ পড়তে হয়েছে চতুর্থ রাউন্ড থেকে। শিরোপা বলতে এক কনফারেন্স লিগ। সব মিলিয়ে চেলসির মৌসুমটা বেশ বাজে যাচ্ছিল। ঠিক সেই মৌসুমে নতুন রূপে গড়া ৩২ দলের ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে চলে যাওয়া ক্লাবটার জন্য বড় কিছুই। এবার শিরোপার মঞ্চে নিশ্চয়ই কাউকে ছাড় দিয়ে কথা বলতে চাইবে না কোচ এনজো মারেস্কার দল।