Image description

আরসিবি-র আইপিএল জয়ের উৎসবের সাক্ষী হতে গিয়ে বুধবার প্রাণ দিয়েছেন ১১ জন। আহত ৫০ জনেও বেশি। সেই ঘটনার একদিন পর জানা গেল, পুলিশের অনুরোধ আরসিবি কর্তৃপক্ষ না শোনার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। বুধবারের বদলে রবিবার এই অনুষ্ঠান করার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু আরসিবি রাজি হয়নি।

‘ডেকান হেরাল্ড’ সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, পুলিশের পক্ষ থেকে আরসিবি ম্যানেজমেন্ট এবং রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছিল, যাতে বুধবার কোনও অনুষ্ঠান না করা হয়। ১৮ বছর পর মানুষের আবেগ তুঙ্গে ছিল। তাই শোভাযাত্রা জাতীয় কোনও কিছু হলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে, এমন আশঙ্কা ছিল পুলিশের।

পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, “আমরা মঙ্গলবার রাত থেকেই আরসিবি ম্যানেজমেন্ট এবং সরকারকে অনুরোধ করতে শুরু করেছিলাম, যাতে বুধবার কোনও অনুষ্ঠান না করা হয়। পরের রবিবার আয়োজন করতে বলা হয়েছিল। ততদিনে মানুষের আবেগ একটু হলেও ঠাণ্ডা হতো। শোভাযাত্রা নিয়েও আপত্তি তুলেছিলাম আমরা। পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল যেকোনও একটি জায়গায় সংগঠিতভাবে অনুষ্ঠান করার।”

আরসিবি সেই পরিকল্পনায় রাজি হয়নি। তারা জানিয়েছিল, ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের কারণে এমনিতেই সূচি এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেছে। রবিবার অনুষ্ঠান করা হলে অনেক বিদেশি ক্রিকেটারকে পাওয়া যাবে না। তাই বুধবারই এই অনুষ্ঠান আয়োজন করতে চেয়েছিল তারা।

অনুমতি মিলেছিল সরকারেরও। তাদের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগ, রাজ্যের ক্রিকেট দলের সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে এই ফাঁকে জনপ্রিয়তা কিছুটা বাড়িয়ে নিতে চেয়েছিল তারা। সরকার রাজি না হলে তখন অন্য সমস্যা তৈরি হত।

মঙ্গলবার রাতের উৎসবের পর পুলিশকর্মীরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, “ভোর সাড়ে ৫টা পর্যন্ত আমরা রাস্তায় ছিলাম। পুলিশ কমিশনার থেকে কনস্টেবল, সকলে ছিলেন। প্রত্যেকে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছিলেন। এমন উন্মাদনা সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যায়নি।”

বিরাট কোহলিদের সঙ্গে উৎসবে শামিল হতে বুধবার চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম এবং তার বাইরে লক্ষ লক্ষ মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। সেখানে ধাক্কাধাক্কিতে পদপিষ্টের পরিস্থিতি তৈরি হয়।

মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, ঘোষণা করেছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী। বুধবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘‘এত মানুষ চলে আসবেন, আমরা ভাবতে পারিনি। স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ৩৩ হাজার। সেখানে দু’-তিন লক্ষ মানুষ ঢোকার চেষ্টা করছিলেন। স্টেডিয়ামের দরজাটাও ছোট। ভিড়ের কারণে তা ভেঙে যায়। এই জমায়েত কেউ আশা করেননি। তবে যা হয়েছে, আমি তার জন্য কোনও অজুহাত দিতে চাই না।’’

বুধবারের ঘটনায় ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। তার জন্য ১৫ দিন সময় দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের সামনে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই কমবয়সি। আমি গভীর ভাবে শোকাহত। এই যন্ত্রণা আইপিএল জয়ের আনন্দকে মুছে দিল। যা হয়েছে, তা হওয়ার কথা ছিল না।’’