
সদ্য সমাপ্ত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আয়োজক পাকিস্তানের পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। গ্রুপপর্বের শেষ ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হলেও প্রথম দুই ম্যাচে হেরে সবার আগে বিদায় নিয়েছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) তীব্র সমালোচনা করেছেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি। দেশটির ক্রিকেটের অবস্থা আইসিইউতে থাকা রোগীর মতো বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক এই অলরাউন্ডার।
সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে দলটির অবস্থার সমালোচনা করে আফ্রিদি বলেন, ‘সবসময়ই আমরা প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলি। এরপর যখন কোনো টুর্নামেন্ট আসে এবং আমরা ব্যর্থ হই, তখন কথা হয় সার্জারি (দলের আমূল পরিবর্তন) নিয়ে। মূল ব্যাপার হচ্ছে- ভুল সব সিদ্ধান্তের কারণে পাকিস্তান ক্রিকেট আইসিউতে আছে।’
গত বছর অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের পর থেকে পাকিস্তান দলের বাইরে আছেন শাদাব খান। তবে নিউজিল্যান্ড সিরিজের দলে রাখা হয়েছে তাকে। এমনকি সহ-অধিনায়কও করা হয়েছে এই লেগ স্পিন অলরাউন্ডারকে। তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন আফ্রিদি।
সাবেক এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘কোন কারণে তাকে (শাদাব খান) আবার দলে ডাকা হয়েছে? ঘরোয়া ক্রিকেটে তার পারফরম্যান্স কী, অথবা অন্য কোথাও; যে তাকে ডাকা হলো?’
পাকিস্তান ক্রিকেটে ধারাবাহিকতার অভাব নিয়েও সরব হয়েছেন আফ্রিদি। বারবার নেতৃত্বে পরিবর্তনও পছন্দ নয় তার। দীর্ঘমেয়াদে এগুলো ক্ষতি করে বলেও মনে করেন তিনি, ‘বোর্ডের সিদ্ধান্ত এবং নীতিতে কোনও ধারাবাহিকতা নেই। আমরা অধিনায়ক, কোচ বা কিছু খেলোয়াড় পরিবর্তন করতে থাকি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত, বোর্ড কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা কী?’
ব্যর্থতার পর অন্যদের ওপর দোষ চাপানোর সংস্কৃতিরও সমালোচনা ঝড়ল আফ্রিদির কণ্ঠে, ‘কোচরা তাদের চাকরি বাঁচাতে খেলোয়াড়দের দোষারোপ করে এবং টিম ম্যানেজমেন্ট তাদের চাকরি বাঁচাতে খেলোয়াড় এবং কোচদের দোষারোপ করে, এটি দেখা দুঃখজনক। যখন অধিনায়ক এবং কোচদের মাথার ওপর ক্রমাগত তলোয়ার ঝুলে থাকে, তখন আমাদের ক্রিকেট কীভাবে এগিয়ে যাবে?’
সমালোচনা সত্ত্বেও আফ্রিদি স্বীকার করেছেন যে পিসিবির বর্তমান চেয়ারম্যান মহসিন নকভি পাকিস্তান ক্রিকেটের উন্নতি করতে চান। কিন্তু খেলা সম্পর্কে তার গভীর জ্ঞানের অভাব রয়েছে বলেও মনে করেন আফ্রিদি, ‘তিনি পাকিস্তানের জন্য ভালো করতে চান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি অন্যের পরামর্শের ওপর নির্ভর করেন। আমি তাকে বলেছিলাম যে তিনি একসঙ্গে তিনটি কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন না। তাকে একটি চাকরিতে মনোযোগ দিতে হবে কারণ পিসিবি চেয়ারম্যান হওয়া একটি পূর্ণকালীন চাকরি।’