কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, স্ক্যামারদের জন্য মানুষের সঙ্গে প্রতারণামূলক কাজ করা তত সহজ হচ্ছে।কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, স্ক্যামারদের জন্য মানুষের সঙ্গে প্রতারণামূলক কাজ করা তত সহজ হচ্ছে। তারা যেভাবে স্ক্যাম ছড়িয়ে থাকে, সেগুলো আলাদা করা বেশ কঠিন। এ কারণে এআইয়ের মাধ্যমে স্ক্যামের ঘটনা বাড়ছে। স্মার্টফোন, ক্রোমবুক, ল্যাপটপ ও ট্যাবলেটের মতো ডিভাইসগুলো এখন বেশ সহজলভ্য হয়েছে। ফলে এসব ডিভাইসের সাহায্যে এআইয়ের ব্যবহারও বেড়েছে। সেজন্য এআইয়ের মাধ্যমে ছড়ানো স্ক্যাম থেকে বাঁচতে এর নানা ধরন সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকা জরুরি বলে মনে করেন প্রযুক্তিবিদরা।
ভয়েস ক্লোনিং স্ক্যাম
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের মতো সহজলভ্য উৎস থেকে নমুনা সংগ্রহ করে, এআই প্রযুক্তির সাহায্যে স্ক্যামাররা যে কারো কণ্ঠ নকল করতে পারেন। এর মাধ্যমে তারা ওই ব্যক্তির পরিবার ও বন্ধুদের খুব সহজেই প্রতারণায় ফেলতে পারে। উদাহরণস্বরূপ একজন প্রতারক দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার কথা বলে দ্রুত টাকা পাঠানোর বা ব্যক্তিগত তথ্য জানানোর অনুরোধ করতে পারে। এসব থেকে বাঁচতে স্প্যাম কল ব্লক করতে হবে। পাশাপাশি অপরিচিত নম্বর থেকে কল এলে যেকোনো উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
ডিপফেক ইমপার্সোনেশন স্ক্যাম
ডিপফেক হলো এক ধরনের সিনথেটিক মিডিয়া, যেখানে এআই টুল ব্যবহার করে ভুয়া ছবি, ভিডিও বা অডিও তৈরি করা হয়। বর্তমানে ডিপফেক চেনা আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় কঠিন হয়ে উঠেছে। স্ক্যামাররা প্রতারণার অংশ হিসেবে বিশেষ করে সেলিব্রিটিদের ভুয়া কনটেন্ট তৈরি করে। এর মাধ্যমে তারা অর্থও দাবি করে। প্রাথমিকভাবে সবকিছু এতটাই বাস্তবসম্মত মনে হয় যে যথাযথ চিন্তা করার সুযোগও থাকে না। তবে ডিপফেক চিহ্নিত করার উপায় রয়েছে। কনটেন্টের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক কিছু দেখা যাচ্ছে কিনা তা লক্ষ করতে হবে। পাশাপাশি নানা ধরনের অনলাইন টুলও রয়েছে এসব ক্ষেত্রে সাহায্য করার জন্য।
বিনিয়োগ স্ক্যাম
স্ক্যামাররা এআই ব্যবহার করে মানুষকে অর্থ বিনিয়োগে ফাঁসানোর চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে তারা ভুল পরামর্শ দেয়, ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে অথবা এআই-সম্পর্কিত কোম্পানি নিয়ে অতিরিক্ত প্রচারণা চালায়। এসব থেকে নিরাপদ থাকতে সবসময় বিশ্বস্ত আর্থিক পরামর্শদাতার সঙ্গে পরামর্শ করা, বিনিয়োগ কোম্পানির কাছ থেকে প্রাপ্ত যেকোনো বার্তা যাচাই করা ও যথাযথ গবেষণা ছাড়া ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার না করা বা অর্থ স্থানান্তর থেকে বিরত থাকা উচিত।
ফিশিং স্ক্যাম
স্ক্যামাররা এআই ব্যবহার করে এমন সব ফিশিং বার্তা তৈরি করে যেগুলো দেখে মনে হয় পরিচিত বা বিশ্বাসযোগ্য কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে পাঠানো হয়েছে। এ বার্তাগুলোয় ভুয়া লিংক থাকে, যা মানুষকে ক্লিক করতে প্রলুব্ধ করে। লিংকগুলো ভুয়া ওয়েবসাইটে নিয়ে যায়, যেখানে লগইন তথ্য চাওয়া হয় বা ক্ষতিকর সফটওয়্যার ইনস্টল করতে বলা হয়। কেউ যদি তাদের তথ্য দেয়, স্ক্যামাররা তা চুরি করে অপব্যবহার করতে পারে।
চাকরির স্ক্যাম
প্রতারকরা এআই ব্যবহার করে ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপন ও নিয়োগকারীর প্রোফাইল তৈরি করে। এমনকি তারা এআই ব্যবহার করে ভুয়া ইন্টারভিউও নিতে পারে। এ চাকরির প্রতারণা মানুষকে ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন আইডি নম্বর ও ব্যাংক বিবরণী শেয়ার করতে প্রলুব্ধ করে। কেউ যদি এসব তথ্য শেয়ার করে, তাহলে স্ক্যামাররা তা প্রতারণা বা পরিচয় চুরির জন্য ব্যবহার করতে পারে।