বান্দরবান ৩০০ নম্বর আসনে রাজনীতির মাঠে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে ঘটে গেল এক নজিরবিহীন নাটকীয়তা। জোটের স্বার্থে শরিক দলকে ছেড়ে দেওয়া আসনটি মাত্র ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে আবারও ফিরে পেয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ফলে সংশ্লিষ্ট আসনে দলটির মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আবুল কালামই থাকছেন চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।
ঘটনার প্রেক্ষাপটে জানা যায়, নির্বাচনের আলোচনার শুরু থেকেই এই আসনে জামায়াতে ইসলামী তাদের অবস্থান বিবেচনা করে জেলা পরিষদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবুল কালামকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছিল। দলীয় নেতাকর্মীরা দীর্ঘ সময় ধরে মাঠে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। তবে জোটের অভ্যন্তরীণ আসন ভাগাভাগির সমীকরণে গত রোববার রাতে এক আকস্মিক সিদ্ধান্তে আসনটি জাতীয় নাগরিক কমিটিকে (এনসিপি) ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা আসে।
রোববার রাতের এই সিদ্ধান্তের পর দীর্ঘদিন প্রচারণায় থাকা স্থানীয় জামায়াত নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ ও হতাশা দেখা দেয়। আসনটি ছেড়ে দেওয়ার পর জোটের শীর্ষ পর্যায়ে নতুন করে হিসাব-নিকাশ শুরু হয়। মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদন এবং জনপ্রিয়তার মানদণ্ডে অ্যাডভোকেট আবুল কালামের অবস্থান সুসংহত দেখে পুনর্মূল্যায়নের দাবি ওঠে।
সোমবার সকালে দৃশ্যপটে পরিবর্তন আসতে শুরু করে। জোটের নীতিনির্ধারকদের মাঝে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এনসিপিকে অন্য কোনো উপায়ে ছাড় দেওয়ার সমঝোতায় এনে অবশেষে সোমবার দুপুরে জানানো হয়, আসনটি পুনরায় জামায়াতকেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে এই দ্বিধাদ্বন্দ্বের কারণে জামায়াত ও এনসিপি—উভয় প্রার্থীরই মনোনয়ন ফরম তৈরি করতে বেশ হিমশিম খেতে হয়।
এই নাটকীয় পরিবর্তনের ফলে আসনটিতে নির্বাচনি লড়াই এখন আরও জমজমাট হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
প্রসঙ্গত, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান ৩০০ নম্বর আসনে মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার শেষ দিনে ৫ জন ফরম জমা দিয়েছেন। সকালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-র প্রার্থী ও জেলা কমিটির আহ্বায়ক সাচিং প্রু জেরী দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ফরম জমা দেন। এছাড়া মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী ও জেলার নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ আবুল কালাম, এনসিপি-র প্রার্থী ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ শাহ সুজাউদ্দিন, ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ও জেলা সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ এবং জাতীয় পার্টি (কাদের)-এর সাংগঠনিক সম্পাদক আবু জাফর মোহাম্মদ ওয়ালীউল্লাহ।
শুরু থেকে এই আসনে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী দিলেও জোটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রোববার রাতে আসনটি এনসিপিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে নানা নাটকীয়তার পর পুনরায় আসনটি ফিরে পেলেন অ্যাডভোকেট আবুল কালাম।