Image description

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মিছিলে সশরীরে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, ভয়ের কোনো কারণ নেই। নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে। গ্রামে-গঞ্জে, শহরে, বন্দরে-বাজারে, অলিতেগলিতে, রাজপথে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার এই নির্বাচনী মিছিলে আমিও থাকব।

গতকাল সোমবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, দেশের জনগণ সাক্ষী; কারণে-অকারণে শর্তের পর শর্ত জুড়ে দিয়ে কিংবা নানা অজুহাতে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী একাধিক চক্র নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে বারবার নানা বিঘ্ন সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছে। এখনও চলছে ক্ষেত্র বিশেষে। তবে সব বাধা উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন জনগণের সেই কাঙ্ক্ষিত জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করেছে। সতর্ক থাকতে হবে, ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু এখনও থেমে নেই। গণতন্ত্রের পক্ষের সাহসী সন্তান ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনা, সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। কী ছিল ওসমান হাদির অপরাধ? আমি মনে করি, কয়েকটি প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই গণতন্ত্রকামী জনগণের সামনে ঘাতকদের চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা গেলে কারা খুশি হবে এমন প্রশ্ন রেখে তারেক রহমান বলেন, নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান সরকারকে বহাল রাখা গেলে কারা লাভবান হবে? দেশে জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে কাদের লাভ? বিশ্বাস করি, এসব প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই হাদির ঘাতকেরা লুকিয়ে রয়েছে। স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের শত্রুরা ঘাপটি মেরে রয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিজয় দিবসের এই গৌরবজনক সময়ে দৃঢ়ভাবে বলে দিতে চাই, যারা স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণকে ভয় দেখাতে চায়, তারা অবশ্যই ব্যর্থ হবে। আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মিছিল নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকি, ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই পিছু হটতে বাধ্য হবে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কেবল ‘এক্সপেরিমেন্ট আর এক্সপেরিয়েন্স’ অর্জনের নির্বাচন নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, বারবার বলেছি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অতীতের যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ। এবারের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন-সাধ-আশা-আকাঙ্ক্ষা-স্বার্থ এবং সম্ভাবনা। সর্বোপরি এবারের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের স্বার্থ এবং সার্বভৌমত্ব সুসংহত রাখার প্রশ্ন।  

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশ হঠাৎ করেই সাগরের বুকে ভেসে ওঠা কোনো ভূখণ্ড নয়। লাখো শহীদের আত্মত্যাগ আর অসংখ্য মা-বোনের সম্মান-সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামক এই ভূখণ্ডটির স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সম্প্রতি হাদির ওপর আক্রমণকারীকে চিহ্নিত করা গেছে, সে আওয়ামী লীগের লোক। অথচ একটি পক্ষ হীনউদ্দেশ্যে এই ঘটনার জন্য বিএনপিকে চিহ্নিত করতে চায়। তিনি সতর্ক করে বলেন, একটি গোষ্ঠী গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায়। আগামী নির্বাচন দেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটিই নির্ধারণ করবে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে নাকি পিছিয়ে যাবে।

প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।