Image description
 

রাতের ভোটের মতো আগামী নির্বাচনেও ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে আশঙ্কা ব‍্যক্ত করা হয়েছে। এ জন‍্য এখনও নির্বাচন কমিশনের প্রতি শতভাগ আস্থা না আসাকে কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে নির্বাচন আদৌ হবে কিনা তা নিয়েও সংশয় ব‍্যক্ত করা হয়েছে। 

বুধবার চট্টগ্রাম মহানগরের জিইসি মোড়ে হোটেল পেনিনসুলা মিলনায়তনে এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আঞ্চলিক পরামর্শ সভায় এই অভিমত দেওয়া হয়েছে। 

 
 

এতে বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরের মতো সংবেদনশীল খাতে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় বৈদেশিক বিনিয়োগ করতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির পুনর্মূল্যায়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে। সেই সঙ্গে অধিকার বাস্তবায়নে নাগরিকদের এগিয়ে আসতে হবে। এ সভায় আরও বলা হয়েছে, আগের চাইতে চাঁদাবাজী ও দখলবাজী বেড়েছে। রাজনৈতিক দলের সংষ্কার না হওয়ায় হতাশা বেড়েছে।

সভায় ‘নির্বাচন-পরবর্তী সরকারের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী’- এমন প্রশ্নে সমবেত নাগরিকরা ই-ভোটিংয়ের মাধ্যমে সংষ্কার ও আগামী নির্বাচন নিয়ে তাদের প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। তাদের প্রধান প্রত্যাশা- স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা, নিরাপত্তা, সুশাসন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, শিক্ষা সংষ্কার, দুর্নীতি প্রতিরোধ, নৃ-গোষ্ঠীসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার, সুশাসন সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব, নাগরিক অধিকার বাস্তবায়ন, মানবাধিকার ও বাক-স্বাধীনতা।

 

নাগরিকরা পরে দ্বিতীয় দফায় ভোটে অংশ নিয়ে ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে আপনার প্রত্যাশা কী’ এমন প্রশ্নের বিষয়ে তাদের মতামত দেন। এ ক্ষেত্রে সব দলকে সমান সুবিধা দেওয়া, সব দলের অংশগ্রহণ, স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা, কঠোর নিরাপত্তা, কেন্দ্রে সিসিটিভি স্থাপন ও হলুদ সাংবাদিকতা প্রতিরোধের মতো বিষয়গুলো প্রাধান্য পেয়েছে।

জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার এই পরামর্শ সভা সঞ্চালনের শুরুতেই মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টাসহ উপদেষ্টারা সম্পদের প্রতিশ্রুত হিসাব না দেওয়ায় জনগণের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করেছে।

সভায় স্থানীয় নাগরিকরা বাণিজ্য নগরী চট্টগ্রামের বিভিন্ন সমস‍্যা তা নিরসনের দাবি তুলে ধরেছেন। বন্দর বিশেষজ্ঞ আলী আকবর বলেছেন, চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশি অপারেটরদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। অথচ এর কোনো প্রয়োজন ছিলো না। চট্টগ্রাম উইমেন চেম্বারের পরিচালক রুহি মোস্তফা বলেছেন, নারীরা এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

সভার সূচনা বক্তব্যে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, টাকার মূল‍্যমানে স্থিতিশীলতা এলেও কর্মসংস্থান দুর্বল। বিনিয়োগ নেই। তিনি রাজনীতিবিদদের দায়বদ্ধতার মধ্যে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য জানতে চান, রাজনৈতিক দলগুলো যে ক'জন নারীকে মনোনয়ন দিয়েছে তা যথেষ্ট কিনা? এর জবাবে নাগরিকরা বলেন, একেবারেই হতাশাজনক। তিনি আরও জানতে চান, ১২ বছরের নীচের শিশুদের জন‍্য সামাজিক মাধ্যম নিষিদ্ধ করা উচিত কিনা? এর জবাবে সবাই হ‍্যাঁ সূচক জবাব দেন।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে কর্তৃত্ববাদী শাসনের অবসান ঘটেছে। এখন জবাবদিহিতার কথা বলতে হবে। বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন পরস্পরের পরিপূরক। এই তিন জায়গায় সঠিকভাবে এগুতে হবে। আর জনগণের কাছে আসতে হবে রাজনীতিবিদদের। ভোট চাইতে হলে তাদের জনগণের কাছে অবশ্যই আসতে হবে। 

ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক নাজিম উদ্দিন রাতের ভোটের মতো আগামী নির্বাচনেও ভোটাধিকার প্রয়োগ নিয়ে আশঙ্কা ব্যক্ত করেন। এমন আশঙ্কার বিষয়ে জানতে চাইলে সমবেত সকলে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যকে জানান, নির্বাচন কমিশনের প্রতি শতভাগ আস্থা এখনও আসেনি।

বিস্তারিত আসছে...