Image description

খুলনা–১ (দাকোপ–বটিয়াঘাটা) আসনে হিন্দু সম্প্রদায় অধ্যুষিত এলাকায় ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি কৃষ্ণ নন্দীর প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছে জামায়াতে ইসলামী। এ সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে ভোটারদের মধ্যে নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে আসনটিতে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেছে। ১৯৯৬ থেকে চারবার বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আমীর এজাজ খানকে এবারও প্রার্থী করা হয়েছে।

জামায়াতের মতো ধর্মভিত্তিক দলে প্রার্থী হওয়া বিষয়ে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, "ধর্মীয় বলা হলেও জামায়াতের কাছে হিন্দু–মুসলিম সবাই আস্থাশীল। সবাই তাদের কাছে সুরক্ষা পাবে। সে জন্য জামায়াতে যোগ দিয়েছি, সেটাই ভোটারদের বলবো।" এই আসনে ৪৩ শতাংশ মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের। প্রথম দফায় বিএনপি আসনটিতে প্রার্থিতা স্থগিত রাখে। জামায়াত প্রথমে বটিয়াঘাটা উপজেলা আমির মাওলানা আবু ইউসুফকে প্রার্থী করলেও ৩ ডিসেম্বর কৃষ্ণ নন্দীকে প্রার্থী হিসেবে চূড়ান্ত করা হয়। দাকোপ উপজেলার চালনা পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বারুইখালী গ্রামের কৃষক ও হিন্দু নেতা রবি শংকর রায় বলেন, দল বা সম্প্রদায় দেখে কাউকে বিচার করা ঠিক নয়; দেখতে হবে প্রার্থীর আচরণ, সহনুভূতি ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা আছে কিনা। তিনি বলেন, "আমি এ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীকে কখনও দেখিনি। তাকে চিনি না। তিনি এলাকায়ও কখনও আসেননি। তবে তিনি যদি এলাকার উন্নয়নে ভূমিকা রাখেন, মানুষের মন জয় করতে পারেন; তাহলে তাকে ভোট দিতে আমরা দ্বিধা করবো না।"

ব্যবসায়ী কৃষ্ণ নন্দীর গ্রামের বাড়ি ডুমুরিয়ার চুকনগর। তিনি চুকনগর দিব্যপল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তার বাবা মুসলিম লীগ নেতা খান এ সবুরের সঙ্গে রাজনীতি করতেন। ২০০৩ সালে জামায়াতের মিয়া গোলাম পরওয়ারের মাধ্যমে তিনি দলে যোগ দেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর স্থানীয় এমপি ও সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে কৃষ্ণ নন্দীর। মন্ত্রীর সঙ্গে নানা কর্মসূচিতে তার ছবি সামাজিক মাধ্যমে রয়েছে। অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ৫ আগস্ট তার বাড়িতেও হামলা ও লুটপাট হয়। এদিকে ডুমুরিয়া উপজেলায় বিএনপির কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান লিটন বলেন, "কৃষ্ণ নন্দী আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী এবং মন্ত্রীর সঙ্গে তার সুসম্পর্ক ছিলো। তাকে প্রার্থী করার মধ্য দিয়ে ধর্মীয় রাজনৈতিক দল হিসেবে জামায়াত তাদের অবস্থান ক্ষুণ্ন করেছে। স্থানীয় মানুষও বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ।" তবে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, ব্যবসায়ী হিসেবে মন্ত্রীর সঙ্গে তার সম্পর্ক ছিলো। মন্ত্রী হওয়ার পর একদিন তাকে ফুল দিয়েছিলেন, সেই ছবিই এখন ছড়ানো হচ্ছে। আওয়ামী লীগ বা মন্ত্রীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে পারলে তিনি জামায়াত ছাড়ার ঘোষণা ও দেন।