বিএনপি যদি ইসলামিক ভোকাবুলারী বেশি বেশি ব্যবহার করে বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি করতে চায়, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের রাজনীতি করতে চায়- সেইটাই সঠিক বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. মির্জা গালিব। তিনি বলেন, ‘বিএনপি যদি বেশি করে ইসলামিক শব্দ বা ভোকাবুলারি ব্যবহার করা শুরু করে, ইসলামিস্ট হিসেবে আমি বরং খুশি হব।’
সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে এসব কথা বলেছেন মির্জা গালিব। তিনি লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান। ইসলাম আমাদের ধর্ম, কালচার এবং আইডেন্টিটি। আমাদের এখানকার সব প্রধান রাজনৈতিক দল ইসলামকে তার নিজের আইডেন্টিটি বলে মনে করবে- এইটাই স্বাভাবিক এবং কাম্য।’
তিনি বলেন, ‘ইসলামকে অস্বীকার করে বা ইসলামিক আইডেন্টিটিকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে যে ইসলামোফোবিক সেকুলারিজম আমাদের দেশে তৈরি হইছিল, সেইটাই বরং আর্টিফিসিয়াল ছিল। পাশ্চাত্যের কলোনিয়াল শাসন আর উনিশ শতকের পশ্চিমবঙ্গীয় রেনেসাঁর প্রভাবে এইটা তৈরি হইছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ-বাম-সেকুলার নেক্সাসের মধ্য দিয়া এইটা পরিপুষ্ট হইছিল।’
আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়া এই ইসলামোফোবিক কালচারেরও পতন হইছে উল্লেখ করে মির্জা গালিব বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের এখন ঘরে ফেরার সময়। নিজের পূর্বপুরুষের ইসলামিক বা মুসলিম কালচারকে এলিট সাংস্কৃতিক আবহের মধ্যে নতুন করে ধারণ করার সময় এখন। দলমত নির্বিশেষে ইসলাম বাংলাদেশের সকল মুসলমানের বিশ্বাস, কালচার, আইডেন্টিটি আর ধর্ম হয়ে উঠবে সামনের দিনে।’
তিনি বলেন, অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপিও তাই ইসলামকে ধারণ করবে, এইটাই স্বাভাবিক। জিয়াউর রহমান ৭২ এর সেকুলার সংবিধান পরিবর্তন করে ‘আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ যোগ করেছিলেন। বিএনপির বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ-এর যে ধারণা, ইসলাম সেইখানে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
কাজেই বিএনপি যদি ইসলামিক ভোকাবুলারি বেশি বেশি ব্যবহার করে বাংলাদেশপন্থী রাজনীতি করতে চায়, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের রাজনীতি করতে চায়- সেইটাই বিএনপির সঠিক রাজনীতি বলে মত মির্জা গালিবের। তিনি বলেন, বিএনপি সহীহ ইসলামী দল না- এই কথা বলে বিএনপির রাজনীতির সমালোচনা করার মধ্যে কোনও লাভ নাই। বিএনপি যদি আওয়ামী লীগের মতন একটা সেকুলার দল হইয়া ওঠে- তাতে আপনার-আমার লাভটা কি?’