Image description

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) সমমনাভিত্তিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে প্রার্থী ঘোষণা করবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।

এনসিপি একটি দলের কাছে ২০টি আসন চেয়েছে; জামায়াতের সঙ্গে তাদের আলোচনা হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আমরা আটটি ইসলামী দলের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা জোট করব না। তবে সমঝোতার ভিত্তিতে প্রার্থী দেব। অর্থাৎ, কোনো আসনে একটি দল প্রার্থী দিলে অন্য দল দেবে না।

ইসলামী দলগুলোর বাইরে এনসিপির সঙ্গে আপনাদের কী আলোচনা হয়েছে- এমন প্রশ্নে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ইসলামী দলগুলোর বাইরে অন্য দলগুলোর সঙ্গেও আলোচনা চলছে। আমাদের এখানে দলের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আগামীকাল আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেব জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট করার জন্য। তবে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, সে সিদ্ধান্তও আমরা মেনে নেব। বর্তমানে আমরা বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছি। নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে তফসিলের পর সিদ্ধান্ত হবে- জানান তিনি।

সিইসির সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ইতোপূর্বে দেওয়া ১৮টি প্রস্তাবের সর্বশেষ অগ্রগতি ও কমিশনের সিদ্ধান্ত জানতে চেয়েছে দলটি। এ ছাড়া ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন সম্পন্ন করার পক্ষে মত দিয়েছে এবং সময়সূচির কোনো পরিবর্তন যাতে না ঘটে, সেই ব্যাপারেও তাদের অভিমত ব্যক্ত করেছে। প্রবাসীদের মধ্যে পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়া নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে বৈঠকে। যে অ্যাপসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয়েছে, তাতে জটিলতা ও ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছে।

হামিদুর রহমান আযাদ জানান, গণভোট নিয়ে তাঁদের আন্দোলন চলমান রয়েছে। তাদের দাবি, জুলাই সনদের অধ্যাদেশ নয়, আদেশ জারি করতে হবে, যা দ্রুত করা সম্ভব। গণভোট এই আদেশকে শক্তিশালী করবে এবং জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এটি আইনি ভিত্তি পাবে। এ ছাড়া গণভোট নির্বাচনের আগে হতে হবে। কারণ, জাতীয় নির্বাচনের সময় জনগণের মনোযোগ অন্যদিকে থাকবে এবং তখন গণভোটে ভোট কম পড়লে বলা হবে মানুষ জুলাই সনদ চায় না। গণভোটের দাবিতে আগামীকাল বেলা ১১টায় প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবেÑ যোগ করেন তিনি।

সংস্কার ও নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ নিশ্চিত করতে আটটি দল একত্রিত হয়েছে এবং ধাপে ধাপে এগোচ্ছে বলে জানান হামিদুর রহমান আযাদ। বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। এটিকে তিনি জোট না বলে ‘যুগপৎ আন্দোলনের মতো’ বলে অভিহিত করেন। তিনি যোগ করেন, এখনও জোট গঠনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শুধু ইসলামি দল নয়, দেশপ্রেমিক বিভিন্ন দলের সঙ্গেও এ নিয়ে আলোচনা চলছে।

জামায়াতের এ নেতা বলেন, আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনও কোনো দলের সঙ্গেই সুনির্দিষ্ট আলোচনা শুরু হয়নি। তবে নির্বাচনের বিষয়গুলো চূড়ান্ত হলে আসন নিয়ে আলোচনা শুরু হবে। তিনি স্পষ্ট করে জানান, জাতীয় পার্টির (জাপা) সঙ্গে আলোচনার কোনো সুযোগ নেই। জাপাকে ‘ফ্যাসিস্টের দোসর’ উল্লেখ করে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবি জানান তিনি।