Image description

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবী। যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় বিএনপির রাজনীতিতে পরিচিত মুখ। সাবেক এ কাউন্সিলর আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৫ আসনে দল থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রচার-প্রচারণা, এলাকার উন্নয়নে প্রতিশ্রুতি, দলীয় অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মাসুদ রানা

জাগো নিউজ: ঢাকা-৫ আসন থেকে আপনি নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আরও দুজন মনোনয়ন চাইছেন। অন্য দলেরও প্রার্থী আছেন। আপনি আপনার অবস্থান যদি মূল্যায়ন করতেন।

নবীউল্লাহ নবী: বিএনপি একটি বড় দল, সেখান থেকে অনেকেই প্রার্থী হতে চাইবেন। আবার অনেকে মশকরাও করেন। মশকরা করে ব্যানার-ফেস্টুন লাগান। আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান নির্দেশ দিয়েছেন, এক পরিবার এক প্রার্থী। তবে অনেকে তারেক রহমান সাহেবের নির্দেশ উপেক্ষা করে দুষ্টামি করছেন, তবে এর কোনো ভিত্তি নেই।

 

সরকারি কমিউনিটি সেন্টার নেই। শিশুপার্ক নেই, সরকারি একটা খেলার মাঠ পর্যন্ত নেই। রাস্তাঘাটের অবস্থা ভালো নয়। জলাবদ্ধতা এখানকার সবচেয়ে বড় সমস্যা। আমরা ট্যাক্স, রাজস্ব দেই, তারপরও সব নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত

অন্য দলের প্রার্থীরাও আছেন। প্রতিযোগিতা না থাকলেও তো নির্বাচন সুন্দর হয় না। আমি ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। জনগণের সঙ্গে মতবিনিময় করছি। গণসংযোগ করছি। নানাভাবে প্রচারণা চালাচ্ছি। দল থেকে আমাকে নির্বাচনের জন্য মাঠে নামার জন্য ইতোমধ্যে বলে দিয়েছে। ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাওয়ার জন্য বলেছে।

জাগো নিউজ: ভোটের জন্য মাঠে গিয়ে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?

নবীউল্লাহ নবী: আমি ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। ২০১৮ সালে ভোটে আমাকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। ওই দুর্যোগের মুহূর্তের নির্বাচনে আমি দুই ঘণ্টায় ৬৯ হাজার ভোট পেয়েছিলাম। এবার মানুষের মধ্যে যে সাড়া, লেভেল প্লেইং ফিল্ড তৈরি হলে তাতে মনে করি তিন লাখ ভোট পেয়ে আমি জয়ী হবো।

জাগো নিউজ: নির্বাচন কেমন হবে বলে মনে করছেন?

নবীউল্লাহ নবী: দলের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে হয়, আমরা সেটি বারবার বলছি। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ দলের উচ্চপর্যায়ের সবাই নিরপেক্ষ নির্বাচন যাতে হয়, সেজন্য সরকারকে তাগিদ দিচ্ছে। এবার সুষ্ঠু নির্বাচন হবে বলে আমি আশা করি।

জাগো নিউজ: প্রচারণায় মাঠে নেমে কোনো অসংগতি বা সমস্যা চোখে পড়ছে কি না?

নবীউল্লাহ নবী: তেমন কোনো অসংগতি নেই। তবে এখনো অন্য প্রার্থীদের মাঠে সেভাবে দেখছি না। আশা করি আগামী দিনগুলোতে সবাই মাঠে নির্বাচনি প্রচরণায় সরব হবে। আমি চাই সব প্রতিদ্বন্দ্বী মাঠে আসুক। এতে ভোট করে আনন্দ পাবো।

সালাহউদ্দিন সাহেব যেটা করেছেন, এটা তার পুরোনো বদাভ্যাস। তিনি একাই সব খেতে চান। একসঙ্গে তো দুই আসন দল তাকে দেবে না। এছাড়া তিনি অসুস্থ, স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারেন না। তিনি কীভাবে নির্বাচন করবেন?

জাগো নিউজ: নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে কী কী পদক্ষেপ নেবেন?

নবীউল্লাহ নবী: এই আসনটি আসলে রাজধানীর গেট। দেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের বেশির ভাগ মানুষ এ আসনের ওপর দিয়ে চলাফেরা করে। কিন্তু এখানে সৌন্দর্য নেই, কোনো উন্নয়ন নেই। সেবাদানকারী সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানই নেই। একটা সরকারি কলেজ নেই, একটি বিশ্ববিদ্যালয় নেই, সরকারি কমিউনিটি সেন্টার নেই। শিশুপার্ক নেই, সরকারি একটা খেলার মাঠ পর্যন্ত নেই। রাস্তাঘাটের অবস্থা ভালো নয়। জলাবদ্ধতা এখানকার সবচেয়ে বড় সমস্যা। আমরা ট্যাক্স, রাজস্ব দেই, তারপরও সব নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

আমি নির্বাচিত হলে এসব কাজ বাস্তবায়ন করবো ইনশাআল্লাহ। ডিএনডি বাঁধ এলাকায় জলাবদ্ধতা নিরসনে স্বাধীনতার পর কোনো এমপিই পদক্ষেপ নেননি। সিটি করপোরেশন হওয়ার পর এখানে কিছু কাজ শুরু হয়েছে। তবে যে কাজ হচ্ছে সেটা দিয়ে এখানকার জলাবদ্ধতা নিরসন করা একেবারেই সম্ভব নয়। এখানে ব্যাপক সার্ফেস ড্রেন করতে হবে। আরও অনেক কাজ করতে হবে।

জাগো নিউজ: বিএনপির আরেক নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদও ঢাকা-৫ থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী, তার ব্যানার-ফেস্টুনও প্রচুর দেখা যাচ্ছে। দলীয় সিদ্ধান্ত আসলে কী?

নবীউল্লাহ নবী: তাকে (সালাহউদ্দিন) দুই বছর আগে দল থেকে বলেছে, তাকে দিয়ে নির্বাচন হবে না। তিনি বিতর্কিত হয়ে গেছেন এলাকায়। দল এখন তার ছেলে রবিনকে (তানভীর আহমেদ রবিন) মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষে, সেটাও ঢাকা-৪ থেকে।

সালাহউদ্দিন সাহেব দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ‘এক পরিবার, এক প্রার্থী’ সংক্রান্ত নির্দেশনা উপেক্ষা করে এখানে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার কার্যক্রমকে আমি ডিস্টার্ব মনে করছি। দলের চেয়ারম্যান সাহেব আমাকে ধানের শীষের পক্ষে নির্বাচন করার জন্য বলে দিয়েছেন, মাঠে নামার জন্য বলেছেন। জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে ঘরে ঘরে গিয়ে ভোট চাওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

সালাহউদ্দিন সাহেব যেটা করছেন, এটা তার পুরোনো বদাভ্যাস। তিনি একাই সব খেতে চান। একসঙ্গে তো দুই আসন দল তাকে দেবে না। এছাড়া তিনি অসুস্থ, স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারেন না। তিনি কীভাবে নির্বাচন করবেন? তার সেই শক্তি নেই।

জাগো নিউজ: জাকির হোসেন নয়নও বিএনপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী।

নবীউল্লাহ নবী: জাকির হোসেন আমাদের দল করেননি, সারাজীবন আমেরিকায় থেকেছেন। এখানে একটা পেট্রোল পাম্প করেছেন। তবে নির্বাচন এলে পোস্টার লাগান, এটা তার স্বভাব। তাকে অনেকে পোস্টার নয়নও বলেন।