
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ফ্যাসিবাদী অপশক্তি রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ নিতে ওঁতপেতে রয়েছে। এজন্য সবাইকে বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে তিনি।
বুধবার (৩০ জুলাই) আশুলিয়ায় ঢাকা জেলা বিএনপির জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, শত শহীদের রক্তের বিনিময়ে পতিত ও পালাতক ফ্যাসিবাদী অপশক্তি রাজনীতিতে পুনর্বাসনের সুযোগ নিতে ওঁতপেতে রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের যে কোনো ভুল সিদ্ধান্তে দেশে গণতন্ত্র উত্তরণের যাত্রা পথকে সংকটে ফেলে দিতে পারে। দেশে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ, চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। ফলে এ বিষয়ে সবাই বিশেষ করে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।
তারেক রহমান বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে গণহত্যা চালানো হয়েছিল। সবচেয়ে বেশি মারা গেছেন শ্রমিক। বিশেষ করে সাভার আশুলিয়া শ্রমিকদের ওপর গণহত্যা চালানো হয়েছিল। হত্যা করে লাশগুলোকে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। লাশের সঙ্গে এমন বর্বরতা, এমন নির্মমতা কারবালার নৃশংসতাকেও হার মানিয়েছে।
তিনি বলেন, গত বছর জুলাইয়ের যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, সেই আন্দোলনে কিন্তু সরাসরি শ্রমজীবী মানুষের সরাসরি কোনো স্বার্থ জড়িত ছিল না। কারণ তারা কোনো সরকারি চাকরির আশা করেননি। তাহলে প্রশ্ন আসে, পোশাক কারখানার শ্রমিক-দিনমজুর, ভ্যানচালক, রেস্তোরাঁকর্মী, রিক্সাচালক কেন সেদিন রাস্তায় নেমে এসেছিলেন। কারণ একটা সেদিন ফ্যাস্টিস্ট যদি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকে তাহলে কেউ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফেরত পাবেন না। কোনো ন্যায্য দাবি আদায় হবে না। এ কারণে শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, প্রতিটি নাগরিক যাতে নিজের কথা বলতে পারেন, নিজের ভোট যাতে নিজে দিতে পারেন, নিজের রাজনৈতিক অধিকার প্রয়োগ করে সরকার গঠন বা সরকার পরিবর্তন ঘটাতে পারেন, জনগণের রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের এই রাজনীতিটি বিএনপি বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগের অন্যতম মাধ্যম হলো নির্বাচন। একটি দ্বায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি একটি অবাধ নির্বাচনের দাবিকে অগ্রাধিকার দেয়। আমি বিশ্বাস করি, স্থানীয় সরকার থেকে শুরু করে জাতীয় সরকার পর্যন্ত প্রতিটি স্তরে জনগণের সরাসরি ভোটের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচনের সুযোগ পাবে। এতে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পাশাপাশি সরকারের জবাবদিহিতার জায়গা তৈরি হবে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র, রাজনীতির মূল ভিত্তিই হচ্ছে জনগণ। জনগণকে দুর্বল রেখে রাষ্ট্র, রাজনীতি, সরকার কিংবা সংস্কার কোন কিছুকেই শক্তিশালী বা টেকসই করা সম্ভব নয়। নাগরিক রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রয়োগ এবং চর্চার মধ্য দিয়েই রাষ্ট্র, রাজনীতি ও জনগণ শক্তিশালী হয়ে ওঠে। রাষ্ট্রের জনগণ শক্তিশালী হয়ে উঠলেই ভবিষ্যতে কেউ দেশে ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে পারবে না। পাশাপাশি দেশকে কেউ তাবেদার রাষ্ট্রেও পরিণত করতে পারবে না। জনগণের ক্ষমতায়নের এই রাজনীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই বিএনপি শহীদদের কাঙ্ক্ষিত দেশ গড়ে তুলতে চায়।