Image description
 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আজ (৮ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে বলেছেন, দলটির নেতাকর্মীরা বহুদলীয় গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার অঙ্গীকার নিয়ে এগিয়ে চলছে। গণতন্ত্রের মূলনীতিকে ধারণ করেই বিএনপি প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি সব ধর্ম, বর্ণ ও শ্রেণি-পেশার সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও আদর্শবান মানুষদের জন্য উন্মুক্ত। সমাজবিরোধী, দখলবাজ ও চাঁদাবাজদের এই দলে কোনও স্থান নেই। কেউ বিএনপির নাম ভাঙিয়ে অরাজকতা করলে দলের পক্ষ থেকে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই ন্যায়বিচার ও সুশাসনের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। দলটি বরাবরই আইনি কাঠামো, গণতান্ত্রিক সংবিধান ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপি মনে করে, একটি আদর্শ রাষ্ট্রে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যোগ্যতা, দক্ষতা, সৎ-মানবিক গুণাবলী অত্যন্ত জরুরি।

 

তিনি বলেন, বিএনপি যখনই রাষ্ট্রক্ষমতায় এসেছে, তখনই সুশাসন ও ন্যায়বিচারকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। জাতীয়তাবাদী শক্তির মূল চেতনা হচ্ছে দেশে স্থায়ী সুশাসন প্রতিষ্ঠা।

 

রিজভী বলেন, বর্তমানে সমাজে নানা ধরনের সামাজিক অপরাধ বেড়ে গেছে। প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণে ‘মব কালচার’ বা গণউচ্ছৃঙ্খলতার মাত্রা বেড়েই চলেছে। অবৈধ কালো টাকা ও গোপন অপতৎপরতার মাধ্যমে এই ‘মব কালচার’কে উসকে দেওয়া হচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির নাম ব্যবহার করে প্রযুক্তির মাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এই অপপ্রচার ও অস্থিরতা সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের পথচলাকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। এর পেছনে নির্বাচন পেছানোর গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার যেমন “অদ্ভুত উন্নয়ন” নিয়ে নানা গল্প বলে, এখন তেমনি নির্বাচন পেছানোর নানা বয়ানও চালু করা হয়েছে।’

রিজভী জানান, বিএনপির নাম ব্যবহার করে যারা অপরাধে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে দল তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছে। যারা দলের ভেতর থেকে অপকর্মে জড়াচ্ছে, তাদেরও কোনও ছাড় দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে বহু নেতাকর্মীকে বহিষ্কার, অব্যাহতি, পদ স্থগিত এবং কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে গণমাধ্যমে এসব সাংগঠনিক ব্যবস্থার খবর তেমনভাবে আসছে না।’

তিনি অভিযোগ করেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা অত্যন্ত রহস্যজনক। দলের পক্ষ থেকে বারবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হলেও প্রশাসন কোনও কার্যকর ভূমিকা রাখছে না।

তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আসার পর থেকে পুলিশ প্রশাসন অনেকটাই নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। বরং কিছু কর্মকর্তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

রিজভী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, প্রশাসনের এই নিষ্ক্রিয়তা চলতে থাকলে দেশের সামাজিক সংস্কৃতি ও সভ্যতা চরমভাবে বিপন্ন হবে।
তিনি বলেন, ‘এই পরিস্থিতিতে জনগণের জীবন-জীবিকা সংকটের মুখে পড়েছে। রাষ্ট্রে শান্তি ও স্থিতির ওপরই গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণ নির্ভর করছে। এর জন্য দক্ষ প্রশাসন অপরিহার্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী আমলের কালো টাকা ও আন্ডারগ্রাউন্ড তৎপরতার কারণে অপরাধীরা আশকারা পাচ্ছে। এর ফলে সমাজে নৈরাজ্যের আশঙ্কা বাড়ছে।’