বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর দিনাজপুর শহরের বালুবাড়ী এলাকায় অবস্থিত তার নিজ মায়ের বাসভবন ‘তৈয়বা ভিলা’তে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া।
মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে মৃত্যুসংবাদ শোনার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়িটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে।
সকাল থেকেই বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকেরা দলে দলে তৈয়বা ভিলায় জড়ো হতে থাকেন। উপস্থিত সবার চোখেমুখে ছিল গভীর শোক ও বেদনার ছাপ।
বাড়ির ভেতর ও আঙিনাজুড়ে কুরআনখানি ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। একই সঙ্গে শোকসভা ও দোয়া মাহফিলের জন্য প্যান্ডেল নির্মাণের কাজও চলতে থাকে। পুরো পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে কান্না আর আহাজারিতে।
দিনাজপুরের বালুবাড়ী এলাকার এই ‘তৈয়বা ভিলা’ শুধু একটি পারিবারিক বাসভবন নয়, বরং বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত একটি স্মৃতিবহ স্থান।
দিনাজপুর-৩ (সদর) আসন থেকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী থাকার সময় বেগম খালেদা জিয়ার অবস্থানের জন্য এখানে বিশেষ প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছিল। তার জন্য আলাদা কক্ষসহ প্রয়োজনীয় সব আয়োজন করা হয়।
দলীয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বেগম খালেদা জিয়া একাধিকবার এই বাড়িতে অবস্থান করেছিলেন। তার ব্যবহার করা আসবাবপত্র ও বিভিন্ন স্মৃতিচিহ্ন এখনো সংরক্ষিত রয়েছে। বাড়ির দেয়ালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তোলা ছবি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবিও শোভা পাচ্ছে।
মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে একের পর এক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ তৈয়বা ভিলায় ছুটে আসছেন। তারা শোক প্রকাশের পাশাপাশি মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনায় সবার কাছে দোয়া চাচ্ছেন। পুরো এলাকা জুড়ে বিরাজ করছে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশ।
দিনাজপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বেগম খালেদা জিয়া আমাকে আদর করে ‘পাগলা’ বলে ডাকতেন। আজ থেকে আর সেই ডাকটি শুনতে পারব না।
এ কথা বলতে গিয়েই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। চোখের পানি মুছতে মুছতে তিনি আরও বলেন, দলীয় প্রধান হিসেবে তিনি দেশের মানুষকে গভীরভাবে ভালোবাসতেন। ফখরুদ্দিন সরকারের কঠিন সময়ের পরও তিনি দীর্ঘদিন কারাবরণ করেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে কারাগারে থেকেও দেশের বাইরে যেতে চাননি। আজ আমরা সেই মহান নেত্রীকে হারানোর খবর শুনছি। সবার কাছে তার রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া চাই।