সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘২৫০ কোটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে’—এমন গুজব ছড়ালেও বিষয়টি অস্বীকার করেছে গুগল। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, জিমেইল বা গুগল ক্লাউডের কোনো তথ্য ফাঁস হয়নি এবং সিস্টেম নিরাপদ রয়েছে।
তবে গুগল স্বীকার করেছে, জিমেইল ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে অননুমোদিতভাবে অ্যাকাউন্টে প্রবেশের চেষ্টা ও ফোন কলভিত্তিক প্রতারণা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
গুগলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা কখনোই ফোন করে ব্যবহারকারীদের পাসওয়ার্ড রিসেট করতে বা অ্যাকাউন্ট সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করতে বলে না। কিন্তু প্রতারক চক্র গুগলের অফিসিয়াল সাপোর্ট নম্বর +1 650-253-0000 নকল (স্পুফ) করে ব্যবহারকারীদের ফোন করছে। এই নম্বর থেকে কল এলে সেটি প্রতারণামূলক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে গুগল।
প্রোটনের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, প্রতারকরা নিজেদের গুগল কর্মী পরিচয় দিয়ে ফোন করে দাবি করছে—অ্যাকাউন্টে সন্দেহজনক কার্যক্রম ধরা পড়েছে। এরপর নিরাপত্তার অজুহাতে ব্যবহারকারীকে পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের নির্দেশ দেওয়া হয়। কেউ একবার এই ফাঁদে পড়লে সহজেই তার জিমেইল অ্যাকাউন্টের নিয়ন্ত্রণ চলে যেতে পারে প্রতারকদের হাতে।
রেডিটসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহারকারীরা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ান উচ্চারণে কথা বলা ব্যক্তিরা ফোন করে ধাপে ধাপে পাসওয়ার্ড পরিবর্তনের নির্দেশনা দেয়। তাদের কথাবার্তা এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়, যেন তারা গুগলের প্রকৃত কর্মী।
প্রতারণা থেকে বাঁচতে করণীয়
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন—
১. কোনো ফোন কলে কখনোই পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করবেন না বা কোনো লিংকে ক্লিক করবেন না।
২. সরাসরি গুগল অ্যাকাউন্টে লগইন করে Security → Review Security Activity অপশন পরীক্ষা করুন।
৩. নিয়মিত সিকিউরিটি চেকআপ চালান, পুরোনো পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন এবং পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করুন।
৪. এসএমএসভিত্তিক টু-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (2FA) বাদ দিয়ে অথেন্টিকেটর অ্যাপ ব্যবহার করুন।
৫. সম্ভব হলে পাসকি (Passkey) সক্রিয় করুন।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের মতে, দুর্বল পাসওয়ার্ডই এখনো সবচেয়ে বড় ঝুঁকি। ফিশিং, ক্রেডেনশিয়াল স্টাফিং ও সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে হ্যাকাররা সহজেই অ্যাকাউন্ট দখলের চেষ্টা করছে।
কিপার সিকিউরিটির বিশেষজ্ঞ শেন বার্নি বলেন, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড, দুই স্তরের নিরাপত্তা এবং পাসকি ব্যবহারে ঝুঁকি পুরোপুরি দূর না হলেও হ্যাকারদের জন্য আক্রমণ চালানো অনেক বেশি কঠিন হয়ে পড়বে।