Image description
 

খুলনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শ্রমিক সংগঠন নাগরিক শক্তির বিভাগীয় নেতা মোতালেব শিকদারকে লক্ষ্য করে গুলি করেছে সন্ত্রাসীরা। গুলিটি কানের একটু উপরে মাথার চামড়া ছিঁড়ে বেরিয়ে গেছে। তিনি আশঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছে চিকিৎসক।

 

গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর হাসপাতালে পুলিশসহ উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে মোতালেব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হাদিকে যেভাবে মেরেছে আমাকেও সেভাবে গুলি করে মেরে ফেলতে চেয়েছিল।’ চিকিৎসা চলাকালে এই বিষয়ে আর কোনো কিছু জানতে চাওয়া সম্ভব হয়নি।

এদিকে গুলিবিদ্ধ মোতালেবের বক্তব্য ও ঘটনার সঙ্গে মিল খুঁজে পায়নি পুলিশ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত এবং পেছনের কারণ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর সোনাডাঙ্গা এলাকার আল আকসা মসজিদ সংলগ্ন একটি ভাড়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, খুলনা এনসিপির এক নেতা গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে আমরা খবর পাই। এর পরপরই আমাদের টিম ঘটনাস্থল অর্থাৎ গাজী মেডিকেল কলেজের পাশে আল আকসা মসজিদ রোড এলাকায় আসে। এখানে এসে জানতে পারি মুক্তা হাউজ নামের ভবনটিতে এ ঘটনা ঘটেছে।

তিনি বলেন, গাজী মেডিকেল কলেজের পাশের একটি ফার্মেসি থেকে আমরা ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ফুটেজে দেখা যায় রোববার রাতে ভুক্তভোগী মোতালেব এবং তার সঙ্গে আরও দুইজন পুরুষ একটি গাড়িতে করে এসে প্রধান সড়কে নামে। সেখান থেকে তারা সংশ্লিষ্ট বাড়ির দিকে যাচ্ছে।

সোনাডাঙ্গা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) অনিমেষ মণ্ডল বলেন, প্রথমে ভুক্তভোগী আমাদের জানিয়েছিলেন-রাস্তায় মোটরসাইকেলে এসে হাদির মতো স্টাইলে তাকে গুলি করে চলে যায়। পরে দেখলাম যে ঘটনা ঘরের ভেতরের। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে দুজন তাকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে। তাকে কারা হাসপাতালে নিয়ে যায় সেটাও আমরা খুঁজে দেখছি।

খুমেক হাসপাতালের আরএমও ডা. হারুন অর রশিদ বলেন, গুলিটি ভিকটিমের কানের ওপরের চামড়া ভেদ করে চলে গেছে। সিটি স্ক্যান করা হয়েছে। ইন্টারনাল ড্যামেজ হয়নি। তিনি আশঙ্কামুক্ত।

এদিকে মুক্তা হাউসের মালিক আশরাফুন নাহার যুগান্তরকে বলেন, তন্বী নামের এক নারী এই মাসের (ডিসেম্বর) প্রথমে ভাড়া নেয় ফ্লাটটি। তন্বী নিজেকে এনজিওকর্মী পরিচয় দিয়ে বাসাটি ভাড়া নেন। তিনি স্বামীর সঙ্গে থাকবেন বলেও জানান। কিন্তু বাসাটিতে নিয়মিত বিভিন্ন পুরুষের যাতায়াত ছিল। এলাকায় এ নিয়ে কানাঘুষা চলায় ৩১ তারিখে তাকে নেমে যাওয়ার নোটিশ দেওয়া হয়।

এদিকে ছেলের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান মা রাবেয়া বেগম, স্ত্রী ফাহিমা আক্তার ও তিন বছরের মেয়ে। এ সময় রাবেয়া বেগম বলেন, রোববার রাত ১১টার দিকে ছেলের সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা হয়। এরপর আর কথা হয়নি।

অন্যদিকে মোতালেব গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছে ভাড়াটিয়া তন্বী। পুলিশ এই তন্বীর বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছে। এছাড়াও মোতালেবের সঙ্গে ঘটনার সময় আর কে কে ছিল সেগুলোও খতিয়ে দেখছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।