Image description

Ali Ahmad Mabrur (আলী আহমেদ মাবরুর)


শহীদ ওসমান হাদীর গ্রোউথটা বোঝা খুব জরুরি। তিনি ফরমাল পড়াশোনায় মেধার সাক্ষর রেখেছেন। আবার এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটিজেও তিনি সেরা ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার আগেই তিনি অন্তত ৫ বার বিভিন্ন বিষয়ে জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কার পেয়েছিলেন। ক্লাস ফাইভে ও এইটে বৃত্তি পেয়েছিলেন। দাখিল আলিমে স্ট্যান্ড করেছিলেন। তার ভাই ও বোনেরাও মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও আলিমে স্ট্যান্ড করেছিলেন।
 
এরকম একজন মানুষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে কালচারাল ফ্যাসিবাদের ভিকটিম হন। মাদ্রাসায় পড়ুয়া হওয়ার কারণে তাকে উপহাসের পাত্র হতে হয়। পাঞ্জাবি পরিধান করার কারণে শিক্ষকদের কাছে তিরস্কৃত হতে হয়। আবার ক্যাম্পাসে বা হলে থাকতে গিয়ে ছাত্রলীগের কাছে অপমানিত হতে হয়। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, ফ্যাসিবাদটা যতখানি রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত, তার চেয়ে বেশি গেঁথে কাছে জীবন যাপনের সংস্কৃতিতে।
 
এই বোধটা তাকে ভিন্ন এক মানুষে পরিণত করেছিল। তিনি নিজের ক্যানভাসটা বড়ো রাখতে চেয়েছিলেন। তাই কাজের জগত আলাদা করে ফেলেছিলেন। দলীয় পরিচয়ে পরিচিত হতে চাননি। কেননা এই পথে গেলে তার মাকাসিদে পৌঁছানো কঠিন হয়ে যেত। তিনি সবার হাদী ভাই হতে পারতেন না।
 
আরেকটি বড়ো বিষয় হলো, তিনি গণপরিসরে অনেক বেশি খোলামন নিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু একদম ব্যক্তিগত পর্যায়ে তিনি হাদী হুজুরের ছেলে হয়েই থাকতে চেয়েছেন। পিতার নাম থেকে আসা হাদী নামটি নিজের পরিচয়ে ধারণ করতে স্বস্তিবোধ করেছেন। বোনেরা নেকাব করেন, হিজাব করেন- এটা বলতে কুন্ঠিত হননি। হীণমন্যতা বোধ করেননি।
 
প্রকৃত শত্রুকে চিনতে পারাও তার অনন্য স্বার্থকতা। তিনি শত্রুকে এক্সপোজ করতে গিয়ে রাজনৈতিক হিসেব করেননি। ক্ষমতায় যেতে পারবেন না, বা তাকে ফেলে দিবে- এই ক্যালকুলেশন করেননি। এটা তাকে জনগণের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। তার দেশপ্রেম নিয়ে কারো মনে কোনো সন্দেহের উদ্রেক হয়নি।
 
অসম্ভব স্বচ্ছ, দিলসাফ, জবাবদিহিতার মানসিকতা সম্পন্ন আবার একই সাথে সমালোচনা সহ্য করতে পারার ক্ষমতা নিয়ে তিনি পৃথিবীতে এসেছিলেন। তার টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই। বৈষয়িক কোনো প্রলোভন নিয়ে তার কোনো স্ক্যান্ডাল নেই। রাজনৈতিকভাবে তাকে ঘিরে কোনো বিতর্ক নেই। তিনি বেঁচে থাকলে তাকে নিয়ে সামনে হয়তো এসব নোংরামিগুলো শুরু হয়ে যেত।
তার জনম ও জীবন স্বার্থক বলেই মনে হয়। তিনি আবারও সেই উন্নত জীবন গড়ার দৃষ্টান্ত রেখে গেলেন যেন,
এমন জীবন তুমি করিবে গঠন
মরিলে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন।