সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘যখনই আমরা এদেশের জন্য ঐক্যবদ্ধ হই, তখনই কোনো না কোনো স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী, কোনো না কোনো বিচ্ছিন্নতাবাদী কার্যক্রম ঘটিয়ে স্যাবোটেজ ঘটিয়ে আমাদেরকে বিতর্কিত করে আমাদের লড়াইকে প্রশ্নবিদ্ধ করার সুযোগ করে দেয়। আমরা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, আমরা চিহ্নিত করছি কারা আজকের এই উস্কানির সাথে জড়িত। যারা উস্কানি দিয়ে হাদি ভাইয়ের শাহাদাতের পর তার জন্য ইনসাফের দাবিতে আমাদের যেই আন্দোলন, এই আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছে, তাদেরকে আমরা চিহ্নিত করব এবং গণশত্রু হিসেবে ঘোষণা করব।’
শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে রাজধানীর শাহবাগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘যখনই কোনো একটা ঘটনা ঘটে, এদেশে বিভিন্ন দেশের চরেরা, বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে পড়ে। ঘর পোড়ার মধ্যে আলু পোড়া দেওয়ার মতো তারা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে, বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা করে। তাই এদেশের গণতান্ত্রিক লড়াইকে, জাস্টিসের জন্য লড়াইকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে তারা সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আমাদের হাদি ভাইয়ের শাহাদাতের খবর পাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে কীভাবে উনার নামে টি-শার্ট ছাপিয়ে একটি গোষ্ঠী হামলা করতে চলে গেল, এটা অত্যন্ত সন্দেহজনক। যখন বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যেকটি জুলাই স্পটে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে, আমরা এখানে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিচার চাইছি, আমরা খুনিদের ফেরত দেওয়ার কথা বলছি, আমরা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের আওয়াজ তুলছি, তখন কারা বিভাজন উসকে দিল, আমাদের তাদেরকে চিনে রাখতে হবে। আর কখনো তাদের উস্কানিতে পা দিয়ে ভুল পথে পরিচালিত হওয়া যাবে না।’
আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘অভ্যুত্থানের পরে হাদি ভাই ইনকিলাব কালচারাল সেন্টার, ইনকিলাব মঞ্চ প্রতিষ্ঠা করে আমাদেরকে দেখিয়েছেন কীভাবে গঠনতান্ত্রিকভাবে সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক লড়াই চালিয়ে যেতে হয়। কীভাবে একজন ব্যক্তি প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দাঁড়ালে সেটা লক্ষ মানুষের চেয়েও শক্তিশালী হয়। হাদি ভাই নিজেকে একটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলেছিলেন। হাদি ভাইয়ের লড়াই আমাদের লড়াই, এই লড়াই গড়ার লড়াই। ভাঙার বিরুদ্ধে, আগুনের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে শক্তিশালীভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার লড়াই। এই লড়াইকে বাধাগ্রস্ত করতে আমরা কাউকে সুযোগ দেব না, কাউকে ছাড় দেব না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারের প্রতি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানাতে চাই—আপনারা খুঁজে বের করুন আজকের এই ঘটনার পেছনে নেপথ্যে কারা রয়েছে। আপনারা খুঁজে বের করুন কাদের উস্কানিতে, কাদের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রে আজকে সাংবাদিকদের জীবন শঙ্কার মুখে পড়েছে। আপনারা তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন। তবে কোনোভাবেই এই ধরনের কোনো ডিস্ট্রাকশন কিংবা এই ধরনের স্যাবোটেজে থেমে যাওয়া যাবে না।’
‘হাদি ভাইয়ের জন্য আমাদের লড়াই, আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই, হাদি ভাইয়ের খুনিদের ফেরত দেওয়ার দাবিতে আমাদের এই লড়াই চলমান থাকবে। আমি বাংলাদেশের জনগণকে আহ্বান জানাতে চাই—আগামীকাল (শুক্রবার) প্রত্যেকটি মসজিদে খুতবায় এবং মোনাজাতে হাদি ভাইয়ের জন্য দোয়া করুন। এবং জুমার পর সারা বাংলাদেশে প্রত্যেকটি জুলাই আন্দোলনের স্পটে আবারও বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ আয়োজন করুন। সকল আগ্রাসনকারী শক্তিকে আমাদের দেখিয়ে দিতে হবে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি, ছিলাম এবং থাকব। যতদিন পর্যন্ত এই খুনিদের এবং খুনি হাসিনাকে ফেরত না দেওয়া হবে আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে’, - বলেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন