Image description

গুলি করে একের পর এক হত্যা, চাঁদাবাজি, পুলিশকে হুমকিসহ চট্টগ্রামে আতঙ্কের নাম ছোট সাজ্জাদ। দীর্ঘদিন ধরে নানা চেষ্টা পর ১৫ মার্চ ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার হয় সে। তার বিরুদ্ধে আছে ১০টি হত্যাসহ ১৯টি মামলা।

উদ্বেগের বিষয় গেলো সেপ্টেম্বরে উচ্চ আদালত থেকে চাঞ্চল্যকর চারটি হত্যা মামলায় জামিন পায় সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী তামান্না। যদিও বিষয়টি জানাজানি হওয়ার কারণে বাকি মামলাগুলোতে জামিন চেষ্টা থমকে গেছে।

আদালতের তথ্যমতে, আরও বেশকিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী জামিনের চেষ্টা চালাচ্ছে নানাভাবে। বিশেষ করে নির্বাচন ঘনিয়ে আসায়, তাদের মুক্ত করার চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহসান বলেন, ‘যে মুহূর্তে সবচেয়ে ওয়ানটেডদের ধরতে ও ডিটেনশন করতে হবে, তখন আমরা দেখছি আইনের ফাঁকফোকর ব্যবহার করে বড় বড় অপরাধী ও শীর্ষ সন্ত্রাসীরা নানা কৌশলে মুক্তি পাচ্ছে- হয়তো নিচের কোর্ট থেকে, নয়তো উপরের কোর্ট থেকে। এ ক্ষেত্রে প্রসিকিউশনের ব্যর্থতা এবং রাষ্ট্রের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন হচ্ছে না।’

চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা যাতে সহজে ছাড়া না পায়, তা দেখভালের দায়িত্ব রাষ্ট্রপক্ষের-এমন কথা বলছেন সিনিয়র আইনজীবীরা। তবে এ বিষয়ে সর্তক থাকার কথা বলছেন পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি)।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার বলেন, ‘যদি মনে করা হয় যে জেলা জজ আদালত জামিন দিয়েছেন, যা সঠিক হয়নি, তাহলে বিষয়টি হাইকোর্টে আপিল করা যাবে। আর যদি মনে করা হয় হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি, সরকারপক্ষ অ্যাপিলেট ডিভিশনে আপিল করতে পারে। সুযোগ রয়েছে, এবং সরকারপক্ষে যারা দায়িত্বে আছেন, তা তাদের দায়িত্ব।’

চট্টগ্রাম মহানগর আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সচেতন। সামনে নির্বাচন রয়েছে এবং এ সময়ে সন্ত্রাসীদের তৎপরতা বাড়ে। সন্ত্রাসীদের জামিনের বিষয়টি নিবিড়ভাবে নজরে রাখা হচ্ছে এবং নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।’

শুধু শীর্ষ সন্ত্রাসীদের মুক্ত হওয়ার চেষ্টাই নয়, গত একবছরে জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে অনেক চিহ্নিত সন্ত্রাসী। নির্বাচন সামনে রেখে তাই নিজেদের নজরদারি বাড়ানোর কথা বলছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ বলেন, ‘কিছু দুষ্কৃতকারী নানাভাবে জামিন পাওয়ার চেষ্টা করছেন। কেউ কেউ এখনও জামিন পাননি। যারা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, তাদের কার্যক্রম পুলিশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। পুনরায় কোনও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। তবে তারা পুলিশের নজরদারির বাইরে নেই।’

নির্বাচন ঘিরে সহিংসতার ঝুঁকি এড়াতে চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ঘিরে সব পক্ষের সমন্বিত নজরদারি ও পদেক্ষপের ওপর জোর দিয়েছেন অপরাধ বিশেষজ্ঞরা।