Image description

সারা দেশে শেখ মুজিবুর রহমানের ১ হাজার ২০১টি ভাস্কর্য ও ম্যুরাল স্থাপন করেছিল ফ্যাসিস্ট সরকার শেখ হাসিনা। এর-ধারাবাহিকতায় ধামরাই পৌরসভায় একটি ম্যুরাল তৈরি করে সাবেক মেয়র গোলাম কবির মোল্লা। নির্মিত এসব ভাস্কর্য ও ম্যুরালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিয়োগ দেয়া হয় দুজন আনসার সদস্য।

ফ্যাসিবাদ সরকার শেখ হাসিনার সময়ে বিনা ভোটে নির্বাচিত হওয়া সাবেক মেয়র গোলাম কবির মোল্লা ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল তৈরি করে পৌরসভার সামনে সাঁটিয়ে দেয়। এবং পৌরফান্ড থেকে ২০ হাজার টাকা বেতনে দু'জন আনসার সদস্য সার্বক্ষণিক পাহারায় নিয়োগ দেয়া হয়।

 

এ বিষয়ে পৌরসভার কর্মকর্তা কর্মচারী এবং সাধারণ জনগণের নানা প্রশ্ন থাকলেও মেয়রের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায়নি কেউ।

 

পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আতিকুর রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকারের সময়ে সবকিছুই ছিল অনিয়ম। এই অনিয়মকে নিয়ম বানিয়ে প্রতিটি সেক্টরে চলেছে দুর্নীতি।

 

এই ধারাবাহিকতায় ধামরাই পৌরসভায় অনিয়ম করে সাবেক মেয়র গোলাম কবির মোল্লা, মুজিবের মূর্তি পাহাড়ায় আনসার বাহিনী রেখে পৌরসভার ফান্ড থেকে বেতন দিয়েছে যা পরিপূর্ণ ভাবে বেআইনি ছিল। এ বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে আমি জানাবো এই মূর্তি অপসারণের করে আনসার সদস্যদের সরিয়ে দেয়ার জন্য।

 

এ বিষয়ে ধামরাই পৌরসভার সাবেক মেয়র ও সাবেক বিএনপির পৌর সভাপতি নাজিম উদ্দিন মনজু বলেন, বাকশাল নেতা শেখ মুজিবের মূর্তি তৈরিতে মন্ত্রণালয়ের কোন প্রজ্ঞাপন ছিল না। সেই সাথে দু'জন আনসার নিয়োগ প্রক্রিয়াও ছিল অবৈধ। শুনেছি ধামরাইয়ের মূর্তির কারিগর বিশুর কাছ থেকে এই মূর্তিটি বানিয়ে পিতলের প্রলেপ দিয়েছিল,তাকে তিন লাখ টাকা দেয়ার কথা থাকলেও সে এখনো পুরো টাকা পায়নি। এই মোড়াল তৈরি করে পৌরসভা থেকে ১৪ লাখ টাকা বিল দেখিয়েছে। নিয়মবহির্ভূত ভাবে পৌরসভা রাজস্ব ফান্ড থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ টাকা খরচ করেছে মূর্তি পাহারার আনসার সদস্যদের বেতন দিয়ে। এদেরকে মাসে বিশ হাজার টাকা বেতন দেয়া হয় এখন পর্যন্ত।

 

পৌরসভা চত্বরে রাখার জন্য সারা বাংলাদেশের কোন পৌরসভাতে সরকারি ভাবে এরকম প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রণালয় পারমিশন দেয়নি, এত ব্যয়বহুল শেখ মজিবের মূর্তি তৈরি করার জন্য । মেয়রের নিজের ইন্টারেস্ট ও সরকারি দলের এমপিদের খুশি করার জন্য এটা তৈরি করা হয়েছিল । জুলাই আন্দোলনের সময় এই মূর্তিটাকে ছাত্ররা ভেঙে ফেললেও সেটা এখনো পৌরসভা চত্বরে রাখা হয়েছে এবং আনসার সদস্যরা এখনো পাহারা আছে ।

 

পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম নবী বলেন, আমি কয়েকদিন হয় এসেছি, সাবেক মেয়র গোলাম কবির মোল্লার বিরুদ্ধে এরকম অনেক অনিয়ম দুর্নীতির তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। তবে দু'জন আনসার সদস্য রাখা আছ ঠিকই কিন্তু তাদেরকে এখন পৌরসভা পাহাড়ার জন্য নাইট গার্ড এর কাজ করানো হচ্ছে।

 

পৌর প্রশাসক হিসেবে বর্তমান দায়িত্বে থাকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামনুন আহমেদ অনিক আমারদেশকে বলেন, আমি দায়িত্ব গ্রহণের পরে এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছিলাম। বোর্ড মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে তাদের রাখবো কি রাখবো না বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিবেচনা করে পৌরসভা পাহাড়ার জন্যে নাইট গার্ড হিসেবে তাদের দু'জনকে রাখা হয়েছে।

 

পৌরসভায় কর্মরত তিনজন নাইট গার্ড এখন পর্যন্ত রয়েছে তাহলে আনসার সদস্য দু'জনকে দিয়ে নাইট গার্ডের দায়িত্ব পালনে কত যুক্তিযুক্ত এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সব মিলিয়ে পাঁচ জন হয়েছে কিনা আমার জানা নাই বিষয়টি দেখব।