ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, যারা বাংলাদেশকে ভালোবাসে, ইসলামকে ভালোবাসে এবং যারা মানবতার কল্যাণ রক্ষার চেষ্টা করে— তারা রাজপথে চলে এসেছে। ক্ষমতাপ্রেমীদের বলবো— আপনারা বারবার ক্ষমতায় গিয়েছিলেন কিন্তু আমাদের কী উপহার দিয়েছেন। ‘নতুন শাড়িতে পুরোনো বউ’ দিয়ে আর আমাদের ধোঁকা দিতে পারবেন না, কারণ ধোঁকা দেওয়ার দিন শেষ।
তিনি বলেন, আমাদের মৌলিক দাবিগুলো ছিল— দেশের সংস্কার হবে; খুনিদের ও টাকা পাচারকারীদের দৃশ্যমান বিচার হবে; এরপর লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে কিন্তু আমরা দেখলাম— এক শ্রেণির ক্ষমতালোভীরা সংস্কার এবং দৃশ্যমান বিচারকে গুরুত্ব না দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য শুধু পাগল নয়, ডাবল পাগল হয়ে গেছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) রংপুর নগরীর কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে পাঁচ দফা দাবিতে জামায়াতসহ ৮ দলের বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, হাজার হাজার হাফেজ, আলেম, ছাত্র, মায়ের কোলের ছোট সন্তান, ছাত্র-জনতা জীবন দিয়েছিল কি শুধু একজনকে ক্ষমতা থেকে নামিয়ে আরেকজন ক্ষমতায় পাঠানোর জন্য। নাকি এ দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করার জন্য, খুনিদের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য এবং আমাদের দেশে বসে যারা বিদেশিদের গোলামির জিঞ্জির পরিয়েছিল— তাদের উৎখাত করে স্বাধীনভাবে আমাদের মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার জন্য এরা জীবন দিয়েছিল। আজকে তারা যদি বুঝতে ব্যর্থ হয়, আমরা তাদের পরিষ্কারভাবে এই সমাবেশের মাধ্যমে বলতে চাই, আপনারা মনে করেছিলেন ওয়ান টুর ভিতর ক্ষমতায় যাবেন, সেদিন ভুলে যান।
গুণ্ডামি ও টাকার জোরে জনতাকে থামানো যাবে না হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, এই রংপুর থেকেই চাঁদাবাজ-ক্ষমতালোভীদের এবং যারা দেশ থেকে বিদেশে টাকা পাচার করে ও বিদেশের তাঁবেদারি বাস্তবায়ন করতে চায় তাদের বাংলার জমিন থেকে উৎখাত করতে হবে। আগের মতো গুণ্ডামির মাধ্যমে এবং কালো টাকার দৌরাত্ম্যের মাধ্যমে জাগ্রত জনতাকে থামানো যাবে না।
জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট, পিআর পদ্ধতিসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত জামায়াতে ইসলামীসহ সমমনা ৮ দলের রাজশাহী বিভাগীয় এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর দুইটা থেকে এ সমাবেশ শুরু হয়।
সমাবেশে যোগ দিতে দুপুর ১টার পর থেকে রংপুরের সমাবেশে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টিও নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশ মাঠে যোগ দিতে শুরু করেন।
সমাবেশে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন জামায়াতের নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সালাহউদ্দিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলামের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল মাজেদ আতহারী, সাংগঠনিক সচিব হাফেজ মাওলানা আবু তাহের খান, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, সংগঠক মুফতি মাহমুদুল হাসান, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলামসহ আট দলের স্থানীয় নেতারা।