আবুল খায়ের স্টিল মিলস লিমিটেড (একে স্টিল) শিল্পগ্রুপ আবুল খায়েরের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। এ কোম্পানির বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি এলাকার ছড়ায় বাঁধ দিয়ে লেক তৈরি, জলাশয়, বন ও পাহাড় দখল করে ওয়্যারহাউস, বিলেট স্টোর ও স্ক্র্যাপ স্টোর গড়ে তোলার অভিযোগ রয়েছে। দিন দিন এ কোম্পানির কারখানার পরিধি বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। যার কারণে আশপাশের মানুষের টিকে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ত্রিপুরাদের তিনটি পাড়া। কোম্পানিটির এ দখল কর্মকাণ্ডের কারণে বিরূপ প্রভাব পড়ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর।
সম্প্রতি সোনাইছড়ি এলাকা ঘুরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে সোনাইছড়ি এলাকা পর্যন্ত একসময় একটি ২০ ফুট চওড়া সড়ক ছিল। সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, এখন সেই সড়ক ৪০ ফুটের বেশি। কারণ এই সড়কের মাথায় রেল লাইনের ওপারেই একে স্টিলের মূল কারখানা। এর পেছনেই পাহাড়ি এলাকা।
স্থানীয়রা জানান, আবুল খায়ের গ্রুপ কারখানাটি স্থাপন করে ২০০২ সালের দিকে। শুরুতে কারখানার আয়তন ছিল ছোট। সে সময় গ্রুপটি দাবি করত, স্থানীয় চৌধুরী সাহেব নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ১০০ একর জমি কিনে নিয়েছে তারা। এখন কোম্পানিটির কারখানার আয়তন এক হাজার একরের বেশি। এর মধ্যে রয়েছে বন বিভাগের ৩০০ একরের বেশি সংরক্ষিত বনভূমি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, একে স্টিল বন বিভাগে ‘বনখেকো’ হিসেবে তালিকাভুক্ত। এ কোম্পানির জমি দখলের পরিমাণ ৩০৬.৯০ একর।
স্থানীয়রা জানায়, কারখানা স্থাপনের আগে রেল লাইন থেকে পাহাড়ের দূরত্ব ছিল মাত্র কয়েকশ মিটার। আর মাঝখানের এই জায়গাটিতেই একে স্টিলের কারখানাটি গড়ে তোলা হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে পাহাড়ের পর পাহাড় কেটে প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলেছে তাদের বিলেট উৎপাদন কারখানা, ওয়্যারহাউস, স্ক্র্যাপ রাখার স্থান, কর্মচারীদের আবাসন ও গাড়ির গ্যারেজ। দিন যত যাচ্ছে কারখানাটি ততই বড় হচ্ছে, সমানতালে বাড়ছে পাহাড় কাটা।
স্থানীয়রা জানান, শুধু পাহাড়ের দিকেই নয় মহাসড়কের দিকের পুরো এলাকাটিও এখন আবুল খায়েরের দখলে।
একে স্টিল কারখানার ঠিক সামনেই দক্ষিণ সোনাইছড়ি গ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ জাহিদ হাসান টিটো বলেন, বংশপরম্পরায় এখানে বসবাস করেন তারা। আবুল খায়েরের কারখানা তৈরির আগে পাহাড়ের পাদদেশে আমাদের গ্রামটি ছিল ছবির মতো সুন্দর। কিন্তু এখন এর অবস্থা অবর্ণনীয়। এই কারখানা তৈরির সময় প্রাকৃতিক পরিবেশ নষ্ট হবে না এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন বাড়ির সামনের সড়কে দিনে কমপক্ষে হাজার খানেক ট্রাক, লরিসহ বিভিন্ন ধরনের ভারি যানবাহন চলাচল করে।
তিনি আরো বলেন, আশপাশের অন্তত পাঁচটি দিঘি ভরাট করে কোথাও স্ক্র্যাপ ইয়ার্ড আবার কোথাও বিলেট ইয়ার্ড তৈরি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। সবচেয়ে বড় চৌধুরী দিঘির আয়তন ছিল ৩১ একর ৪৮ শতক। দিঘিটির অস্তিত্ব এখন আর নেই। সেখানে গড়ে উঠেছে বিলেট ইয়ার্ড। রাস্তায় সারাক্ষণ থাকে ধুলা আর বাতাসের সঙ্গে ওড়ে লোহার কণা। শিশুদের খেলার মাঠ থেকে শুরু করে জলাশয়—সবকিছুই গ্রাস করেছে কোম্পানিটি।
একই এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ রুবেল, লিয়াকত আলী ও মোহাম্মদ মিয়া। তারা জানান, গ্রামের মানুষের অধিকাংশই পাহাড়ের পাদদেশে চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। দরিদ্র মানুষ পাহাড়ের খাস জমিতেও আবাদ করতেন। কিন্তু এখন সাধারণ মানুষ পাহাড়ে যাওয়া তো দূরের কথা রেল বিটও পার হতে পারেন না। পুরো এলাকায় পাহারা বসিয়েছে কোম্পানিটি।
তারা আরো জানান, রেল লাইনের ওপাশে পাহাড় ঘেঁষে বড় বড় বিলবোর্ড টানিয়েছে কোম্পানিটি। এ ছাড়া কারখানার পেছন দিকে পাহাড়ের বড় একটি অংশ দখলও করে নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত অন্তত ২০টি পাহাড় কাটা হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, আবুল খায়েরের নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখ এড়িয়ে পাহাড়ে উঠতে পারে না কেউ। এমনকি বংশপরম্পরায় এসব পাহাড়ে বসবাস করা ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের তিন পাড়ার বাসিন্দারা অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন। বড় ছড়া ও শিতলপুর ত্রিপুরা পাড়া ইতোমধ্যে কোম্পানি বেস্টনির মধ্যে নিয়ে এসেছে। বড় ছড়ায় ৩০ আর শিতলপুরে ১৬ পরিবারের বাস। বাইরের জগতের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ আবুল খায়েরের নিরাপত্তা রক্ষীদের দয়ার ওপর নির্ভরশীল। তাদের অনুমতি ছাড়া কেউ ভেতরে ঢুকতে পারেন না এবং বেরও হতে পারেন না।
আমার দেশ টিমও পরিচয় লুকিয়ে ওই পাড়ায় ঢুকতে চেষ্টা করে একাধিকবার। কিন্তু আবুল খায়েরের নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখ এড়িয়ে সেখানে প্রবেশ করা সম্ভব হয়নি।
কোম্পানির দাবি, ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দারা কোম্পানির নিজস্ব জমিতে বসবাস করছেন। এই কারণে প্রতিটি পরিবার থেকে একজন করে কারখানায় শ্রমিকের কাজ করতে হয় অর্ধেক বেতনে।
কারখানার প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সোনাইছড়ি ত্রিপুরা পাড়া। সেখানে আসতে অনুরোধ করা হয় বড় ছড়া ত্রিপুরা পাড়ার দুই বাসিন্দাকে। তাদের একজন পুরুষ অন্যজন নারী। মাঝ বয়স অতিক্রম করা এই দুজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমার দেশকে দীর্ঘ বঞ্চনার কথা জানান। তারা জানান, বহু বছর আগে সীতাকুণ্ডের পাহাড়ে সরকারি জমিতে তারা বসতি গড়ে তোলেন। জুম চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাদের বসতির সামনে একে স্টিলের কারখানা গড়ে উঠেছে। কিছুদিন পর কারখানার লোকজন এসে তাদের জানায়, এই পাহাড়ের মালিক এ কে স্টিল, এই পাহাড় ছেড়ে আপনাদের পেছনের পাহাড়ে যেতে হবে। কিছুদিন পর একইভাবে সেই পাহাড় থেকে আবার ভেতরের পাহাড়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এখন তারা যেখানে বাস করছেন সেই পাহাড়েও বেস্টনি দিয়ে দিয়েছে কোম্পানি। কয়েক দিন পর হয়তো এখান থেকেও উচ্ছেদ করা হবে তাদের।
সোনাইছড়ি ত্রিপুরা পাড়ায় ৬৫ পরিবারের ৪ শতাধিক সদস্য বসবাস করেন। এই পাড়ার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কয়েক বছর আগে এই পাড়ার ১০ পরিবার পাহাড়ের পাদদেশে বসতি গড়ে তুলেছিল। কিন্তু আবুল খায়েরের লোকেরা এসে তাদের সেখান থেকে উচ্ছেদ করে। ওই জমিটি ঘিরে বড় একটি বিলবোর্ড দিয়ে রেখেছে কোম্পানিটি। বর্তমানে এই পাড়ার সদস্যরাও ঝুঁকিতে রয়েছেন।
এই পাড়ার সর্দার কাঞ্চন কুমার ত্রিপুরা। তিনি আমার দেশকে জানান, তাদের পাড়ার সামনে দিয়ে সোনাইছড়ি ছড়া বয়ে চলেছে। পাহাড় থেকে নেমে আসা ছড়াটি সরাসরি সাগরে মিশেছে। পুরো পাড়ার পানির চাহিদা মেটে এই ছড়া থেকে। এর বাইরে পুরো এলাকার অন্তত এক হাজার পরিবার এই ছড়ার পানির ওপর নির্ভরশীল। এই এলাকার হাজার হাজার বিঘা জমির চাষাবাদও এই ছড়ার পানি দিয়েই করা হয়। কিন্তু প্রতি মাসে দুইবার করে এই ছড়া দিয়েই কেমিকেল মেশানো বিষাক্ত পানি ছেড়ে দেয় আবুল খায়ের গ্রুপের লোকজন। এছাড়া বৃষ্টি হলে আরো বেশি পারিমাণ শিল্প বর্জ্য ছেড়ে দেওয়া হয় এই ছড়া দিয়ে।
কাঞ্চন আরো জানান, যখন এই বর্জ্য ছাড়া হয় তখন পুরো পানির রঙ বদলে যায়। কখনো লাল আবার কখনো সবুজ রঙ ধারণ করে ছড়ার পানি। ৫ থেকে ৭ দিন অনবরত বর্জ্য অপসারণ করা হয় এই ছড়া দিয়ে। পানি নেমে গেলে সাপ, ব্যাঙ ও নানা ধরনের মাছ মরে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোনাইছড়ি ছড়ার মতো পুরো এলাকায় আরো দুটি ছড়া ছিল। যার একটির নাম কানি আরেকটি বারমাসি। পুরো এলাকায় কয়েক হাজার পরিবার এই ছড়াগুলোর পানির ওপর নির্ভরশীল ছিল। জমিতে চাষাবাদও হতো পাহাড় থেকে নেমে আসা এই পানি দিয়ে। কিন্তু এই দুই ছড়ার এখন আর অস্তিত্ব নেই। কারণ এগুলোর উৎসমুখে বাঁধ দিয়ে তিনটি হ্রদ বানিয়েছে কোম্পানিটি।
বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এই পুরো এলাকাটি বন বিভাগের রক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত। যেখানে বাঁধ দেওয়া তো দূরের কথা বিনা অনুমতিতে কারো প্রবেশাধিকারই নেই। কিন্তু সেই রক্ষিত বনভূমিতে এখন বন বিভাগ কিংবা জেলা প্রশাসনের কেউ প্রবেশ করতে পারে না। পুরো পাহাড়ে পাহারা দেয় আবুল খায়েরের সশস্ত্র নিরাপত্তা রক্ষীরা। লেকের পানি ব্যবহার হয় কারখানার রড তৈরির কাজে। সোনাইছড়ি ছড়াতেও বাঁধ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে বর্জ্য অপসারণের স্বার্থে এখানে আর বাঁধ দেওয়া হয়নি।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সোনাইছড়ি ত্রিপুরা পাড়াটিও দখলের টার্গেট ছিল। কিন্তু ২০১৭ সালে পানিবাহিত অজ্ঞাত রোগে ৯ শিশুর মৃত্যু হলে প্রশাসনের নজরে আসে পাড়াটি। এরপর থেকে নানা দিবসে প্রশাসন ও গণমাধ্যম কর্মীদের যাতায়াত আছে এই পাড়ায়। ফলে রক্ষা পেয়েছে পাড়াটি। তবে যে কোনো সময় তাদের উচ্ছেদ করা হতে পারে—এমন শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
সরকারি জমি উদ্ধারে উদ্যোগ নেই
অভিযোগ রয়েছে, এ কে স্টিল বন বিভাগের বিপুল রক্ষিত বনভূমি দখল করে নিয়েছে। এগুলো উদ্ধারে কোনো উদ্যোগ নেই।
উত্তর বন বিভাগের ডিএফও সফিকুল ইসলাম জানান, সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি পাহাড়ি এলাকাটি রক্ষিত বনভূমি হিসেবে চিহ্নিত। এই জমির মালিক যৌথভাবে বন বিভাগ আর জেলা প্রশাসন। কিন্তু আওয়ামী আমলে বনভূমি দখল করে কারখানা ও লেক তৈরি করেছে আবুল খায়ের গ্রুপ। সরকার পতনের পর সুনির্দিষ্ট ৪৮.৮৪৯ একর রক্ষিত বনভূমি চিহ্নিত করে তাতে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর জন্য জেলা প্রশাসনের সহায়তা চেয়ে চিঠি পাঠায় বন বিভাগ। কিন্তু দেড় বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও অজ্ঞাত কারণে জেলা প্রশাসনের লজিস্টিক সাপোর্ট পায়নি বন বিভাগ। আর এই কারণে রক্ষিত বনাঞ্চল দখলমুক্ত করাও সম্ভব হয়নি।
কী বলছেন পরিবেশ কর্মীরা
পরিবেশ কর্মী ও হালদা গবেষক অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া আমার দেশকে জানান, পাহাড়ে বাঁধ দেওয়া, প্রবাহমান জলধারাকে বাধাগ্রস্ত করা, বনভূমি দখল করা ও পাহাড় কাটা— চারটি আলাদা আলাদা অপরাধ। বড় একটি শিল্পগ্রুপ বছরের পর বছর ধরে এই ঘটনা ঘটালেও প্রশাসন ছিল নির্বিকার। বন বিভাগের ওয়েবসাইটে দখলের এই তথ্য আছে বহু বছর ধরে। কিন্তু ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এতে শুধু আবুল খায়ের গ্রুপই নয়, পরিবেশ অধিদপ্তর, বন বিভাগ, জেলা প্রশাসন, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির কেউই দায় এড়াতে পারে না। এই সরকারের আমলে রক্ষিত বনভূমি উদ্ধার করতে না পারাটা দুঃখজনক।
একে স্টিলের দখলদারির বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলার উপ-পরিচালক মোজাহিদুর রহমান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
যা বলছে জেলা প্রশাসন
চট্টগ্রামের সদ্য বিদায়ী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সাদি উর রহিম জাদিদ জানান, বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে সরকারি দখলীয় সম্পত্তি উচ্ছেদ সংক্রান্ত একটি কমিটি আছে। সরকারি সংস্থাগুলো উচ্ছেদের চাহিদাপত্র পাঠালে অগ্রাধিকার পর্যালোচনা করে সহায়তা দেওয়া হয়। বর্তমানে বন বিভাগের এই আবেদনসহ বিভিন্ন সংস্থার অন্তত ৪০টি আবেদন পেন্ডিং আছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে আবুল খায়ের স্টিলের বক্তব্য
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে আবুল খায়ের গ্রুপের ডিএমডি আবু সাঈদ চৌধুরীকে বার বার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগগুলো পাঠিয়ে সে বিষয়ে তার মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি কোনো উত্তর দেননি।
একে স্টিলের ফ্যাক্টরি ইনচার্জ ও বন বিভাগের মামলার বিবাদী ইমরুল কাদের ভুইয়া আমার দেশকে জানান, ত্রিপুরা পাড়ার সবাই কোম্পানির জমিতে বসবাস করে। তাদের কোম্পানির পক্ষ থেকে অনেক সহযোগিতা করা হয়। তাদের জিম্মি করার অভিযোগ সত্য নয়।
পাহাড় কাটার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, পাহাড় কাটার সঙ্গে আবুল খায়ের গ্রুপ জড়িত নয়। পাহাড়ি এলাকাগুলোকে আমরা পাহারা দিয়ে রাখি। বন বিভাগ যে জমি দখল হয়েছে বলে দাবি করে সেগুলো একে স্টিলের সীমানার অনেক বাইরের জমি।
তিনি আরো বলেন, ওই এলাকায় আবুল খায়েরের নিজস্ব জমি আছে পাঁচশ’ একরের বেশি। এর মধ্যে বন বিভাগ নিজেরাই আবুল খায়েরের ২১১ একর জমি দখল করে রেখেছে। আমাদের কারখানার মধ্যে বন বিভাগ কিংবা সরকারি কোনো জমি নেই।
দিঘি ভরাটের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আবুল খায়ের দিঘি ভরাট করেনি। তবে দিঘির মালিক নিজে থেকে ভরাট করে কিছু জমি আমাদের কাছে বিক্রি করেছে।
পাহাড়ে বাঁধ দিয়ে লেক তৈরির ব্যাপারে ইমরুল বলেন, লেক তৈরি না করে ভূগর্ভস্থ পানি তুললে পুরো সীতাকুণ্ড এলাকা পানিশূন্য হয়ে পড়ত। পাহাড়ে বাঁধ দিতে কোনো অনুমতির প্রয়োজন হয় না বলেও দাবি করেন তিনি। তার দাবি, স্থানীয় একদল লোক ও কতিপয় সাংবাদিক তাদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অপপ্রচার চালাচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে সাংবাদিকদের কাছে অসত্য তথ্য সরবরাহ করা হচ্ছে।