বাজারে নিজের মনমতো জিনিস পছন্দ করে কেনাকাটার মজাই আলাদা, আর এজন্য শপিং করা প্রায় সবারই ভালো লাগে। কিন্তু আপনার এই শপিং-এর আনন্দের নেপথ্যে লুকিয়ে থাকতে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। শুনতে অবাক লাগলেও বিশেষজ্ঞরা তেমনটাই জানাচ্ছেন। কেনাকাটার পর বিলিং ডিপার্টমেন্ট থেকে আপনার হাতে যে বিলের রসিদটি দেওয়া হয়, সেটি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য নীরব ঘাতক হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু কীভাবে?
আসুন জেনে নেওয়া যাক, শপিংমলের বিলিং রসিদ কীভাবে নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করতে পারে।
সাধারণত শপিংমলে বিল তৈরি করা হয় থার্মাল কাগজ দিয়ে। আর এই কাগজে লোড করা থাকে বিসফেনল এ বা বিপিএ এবং বিসফেনল এস বা বিপিএস নামক রাসায়নিক পদার্থ। এই রাসায়নিকগুলো খুব দ্রুত রক্তে মিশে যেতে পারে।
গবেষণায় দেখা গেছে, থার্মাল পেপার মাত্র ১০ সেকেন্ড হাতে ধরে রাখলেই বিপিএ ত্বকে মিশে যায়। বিল হাতে ধরার আগে লোশন কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করলে এই রাসায়নিক শোষণের মাত্রা আরও ১০০ গুণ বেড়ে যেতে পারে।
এই রাসায়নিকগুলো রক্তে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। এর ফলে নারীদের পিরিয়ডস অনিয়মিত হয়ে পড়তে পারে এবং স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ে।
বিপিএ/বিপিএস ডিম্বাণুর গুণগত মানও কমিয়ে দিতে পারে। এ কারণে গর্ভবতী নারীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন। কারণ, পাউডার আকারে থাকা এই রাসায়নিক পদার্থ গর্ভবতী নারীর সংস্পর্শে এলে ভ্রূণের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে, যার ফলে:
-
ভ্রূণের বিকাশ ব্যাহত হয় এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সুগঠিত হতে পারে না।
-
শিশুর ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় কম হয়।
-
নবজাতকের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে প্রিম্যাচিউরিটি দেখা দিতে পারে।
-
স্নায়ুর গঠন উন্নত না হওয়ায় স্নায়ু-সংক্রান্ত সমস্যায় ভোগার সম্ভাবনা থাকে।
আপনি যদি গর্ভবতী হন, তাহলে এই বিষয়ে আগাম সচেতন হওয়া খুবই জরুরি।
শপিংমলে আপনি যেতেই পারেন, তবে থার্মাল পেপারের বিলের পরিবর্তে অনলাইনে ডিজিটাল বিল নিতে পারেন। যদি একান্তই রসিদ নিতে হয়, সেক্ষেত্রে সঙ্গে সঙ্গে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলুন। রসিদ নেওয়ার আগে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন, বিল যত কম স্পর্শ করবেন, ততই আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মঙ্গল।